সোমবার, ০২ অক্টোবর ২০২৩, ১৭ আশ্বিন ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

প্রতিমাসে হেরোইন বিক্রির ১৫ কোটি টাকা বিদেশে পাঠাত

  • মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে কোটি টাকা পাচার
  • সাড়ে ৫ কেজি হেরোইনসহ চক্রের ৩ জন গ্রেপ্তার
আপডেট : ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ২২:২৬

উচ্চমূল্যের মাদক হেরোইন দেশে বিক্রির টাকা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে বিদেশে পাচার করা একটি চক্রকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। এই চক্রটি প্রতিমাসে মাদক বিক্রির ১৫ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে।  

গ্রেপ্তাররা হলেন-শাকিবুর রহমান, সেলিনা খাতুন ওরফে শিরিনা ও রাজিয়া খাতুন। শুক্রবার ভোরের দিকে র‌্যাব গাজীপুর ও নওগাঁয় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ৫ কেজি ৪০০ গ্রাম হেরোইন। যার দাম  প্রায় পাঁচ কোটি টাকা।

এর আগে গত বছরের ৮ সেপ্টেম্বর হুন্ডি চক্রের ১৬ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে বলে জানায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। সিআইডি জানায়, মোবাইল ব্যাংকিং বা মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) বিকাশ, নগদ, রকেট ও উপায় ব্যবহার করে মাত্র এক বছরে ৭৫ হাজার কোটি টাকা সমপরিমাণ প্রায় ৮ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে। 

শাকিবুর রহমান।

শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর কাওরান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, এই চক্রের প্রধান শাকিবুর। চক্রটি পাশের দেশ থেকে নৌপথে রাজশাহীর গোদাগাড়ীর সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে বাংলাদেশে হেরোইন নিয়ে আসছিল। তিনি হেরোইন পরিবহনের কাজে নারীদের ব্যবহার করতেন। তার দলে ১০ থেকে ১২ জন নারী রয়েছেন। মূলত তারাই দেশের বিভিন্ন স্থানে হেরোইন সরবরাহ করতেন। 

চক্রটি প্রতি মাসে অন্তত ১৫ কোটি টাকার হেরোইন বিক্রি করছিল জানিয়ে কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, এরা রাজশাহী, নওগাঁ, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, জামালপুর, গাজীপুর, সাভার, নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় হেরোইন সরবরাহ করে আসছিল।

রাজিয়া খাতুন।

র‌্যাব বলছে, গতকাল গাজীপুর থেকে প্রথমে শাকিবুর ও রাজিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে শাকিবুরের দেওয়া তথ্যর ভিত্তিতে নওগাঁ থেকে তার স্ত্রী সেলিনাকে গ্রেপ্তার করা হয়। শাকিবুর ও রাজিয়ার কাছ থেকে ৩ কেজি ৪০০ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার করা হয়। সেলিনার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ২ কেজি হেরোইন। উদ্ধার হওয়া হেরোইনের দাম প্রায় পাঁচ কোটি টাকা।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, একটি চালান নির্ধারিত গন্তব্যে পৌঁছে দিলে বাহক ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা পেতেন। চালানের পরিমাণ বেশি হলে শাকিবুর নিজেই তা পৌঁছে দিতেন। গাজীপুর-সাভার এলাকায় সরবরাহের জন্য ৩ কেজি ৪০০ গ্রাম হেরোইনের একটি চালান নিয়ে এসেছিলেন শাকিবুর ও রাজিয়া। হেরোইন বহন করেছিলেন রাজিয়া। চালান বড় হওয়ায় রাজিয়ার সঙ্গে শাকিবুর এসেছিলেন। শাকিবুরের বিরুদ্ধে চুরির একাধিক অভিযোগ রয়েছে। দুই বছর ধরে তিনি মাদক ব্যবসায় জড়িত। ভারত থেকে হেরোইন এনে তিনি প্রথমে নিজের বাসায় সংরক্ষণ করতেন। পরে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করতেন। তিনি কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমেও হেরোইন সরবরাহ করতেন। হেরোইন বিক্রির টাকা তিনি মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে সংগ্রহ করতেন। এরপর মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে পাশের দেশে টাকা পাঠিয়ে দিতেন।

শিরিনা তিনি আরও জানান, গ্রেপ্তারকৃত সেলিনা খাতুন ওরফে শিরিনা গ্রেপ্তারকৃত শাকিবের স্ত্রী। তিনি তার স্বামীর মাদক ব্যবসার সহযোগী। পাশ্ববর্তী দেশ থেকে আনা হেরোইনের একটি অংশ শাকিব নিজ বাড়িতে তার স্ত্রীর কাছে রাখতেন। বিভিন্ন সময় তাদের আস্থাভাজন মাদক ব্যবসায়ীরা তাদের বাড়িতে হেরোইন সংগ্রহ করতে আসলে গ্রেপ্তার সেলিনা তাদের হেরোইন সরবরাহ করতেন।

ইত্তেফাক/এএএম