প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে অপূর্ব নৈসর্গিক সৃষ্টি বান্দরবানের আলীকদমে এ পালং খিয়াং ঝর্ণা। পালং খিয়াং’র রূপ দেখতে যাওয়ার আগে তৈনখালের পাথুরে দীর্ঘপথ পাড়ি দিতে হয়। চমৎকার এ পথ, যেন পরীর রাজ্য। তবে নিরাপত্তা ব্যবস্থা দিকে একটু নজর দিতে হবে।
তৈনখাল খরস্রোতা মাতামুহুরীর একটি উপনদী। তৈনখালের পাথুরে রাস্তা দিয়ে, কখনো উঁচু পাহাড় ডিঙ্গিয়ে পালং খিয়াং ঝর্ণায় যেতে হয়। তবে ঝর্ণায় যাওয়ার পথে তৈনখালের যে নৈসর্গিক রূপ তাও পর্যটকদের কাছে আকষর্ণের কেন্দ্রবিন্দু। তবে দুর্গমতার কারণে খুব বেশি পর্যটক সেখানে পৌঁছাতে পারেননি।
তৈনখালের বাঁকে বাঁকে নাতিদীর্ঘ পাহাড় চূঁড়ায় মুরুং, ত্রিপুরা, মার্মাদের খড়েছাওয়া ঘর, ছয়াভরা শান্ত গ্রাম্যপথ, ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ঝিরি- ঝর্ণা, পরিচিত পাখির কাকলী যেন মর্তের পৃথিবীতে এক স্বপ্নরাজ্য!
এ খালের দু’পাশজুড়ে ঘন অরণ্যের লতাবিতানে সারা বছর জুড়েই থাকে বন্যপুষ্পের মেলা। খালের দুপাশেই কিছুদুর পরপর ছোটখাট ঝর্ণাধারা বয়ে চলেছে। এ বুনো ঝর্ণার প্রকৃতিক রূপে যেকোন পর্যটক মুগ্ধ হন।
কীভাবে যাবেন
আলীকদম-পানবাজার-আমতলী নদী ঘাট। নৌকাযোগে তৈনখাল দিয়ে দোছরি বাজার। এরপর তৈনখাল দিয়ে হেঁটে থাঙ্কুয়াইন ঝর্ণা-হাজরাম পাড়া-পালংখিয়াং ঝর্ণা। বিকল্প পথ আলীকদম-থানচি সড়কের ১৩ কিলোমিটার। সেখান থেকে পায়ে হেঁটে দোছরি বাজার-থাঙ্কুয়াইন ঝর্ণা-হাজরাম পাড়া-পালংখিয়াং ঝর্ণা। হাজিরাম পাড়া থেকে এ ঝর্ণায় যেতে চার ঘণ্টা হাঁটতে হয়।
পথে যেতে যেতে যা দেখবেন
আমতলি ঘাট থেকে দুছড়ি বাজার ট্রলারে কমপক্ষে দুঘণ্টা। সেখানে নেমে তৈন খালের উজানে ট্রেক করতে হবে। হাটার প্রথম দেড় ঘণ্টার মাথায় পড়বে থাঙ্কুয়াইন ঝর্ণা, যেটা হাজরাম পাড়ার নিচে। ঝর্ণা দেখা শেষ হলে হাজরাম পাড়া যাওয়ার জন্য পাহাড় চড়তে হবে। এর নিচে খুম থাকায় ক্রস করা যায় না। চাইলে রাত্রি যাপন করা যাবে হাজরাম পাড়ায়। এরপর উজানে যেতে থাকবেন। তিন ঘণ্টা পথ পাড়ি দেওয়ার পর পড়বে পালংখিয়াং ঝর্ণা। আর এর এক ঘণ্টা পর লাদ মেরাগ ঝর্ণা।
দুর্গম পথ হওয়ায় প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সঙ্গে রাখতে হবে।
আলীকদম ট্যুর গাইড অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. শেখ সেলিম জানান, বছরে সব সময় অসংখ্য পর্যটক এইখানে ঘুরতে আসেন। আলীকদম ট্যুর গাইড অ্যাসোসিয়েশন সকল পর্যটকদের একটি আনন্দদায়ক ভ্রমণের সহযোগীতা করেন।
উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম বলেন বর্ষায় ঝর্ণাগুলো সৌন্দর্যময় পরিপূর্ণতা পায়। দুর্গম এলাকায় হওয়ায় অব্যশই স্থানীয় লোকাল গাইড নিয়ে যাওয়া জন্য পরামর্শ দেন তিনি।