শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

এক নজরে পারভেজ মোশাররফ

আপডেট : ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৬:৪৬

পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট এবং বিতর্কিত সামরিক শাসক জেনারেল পারভেজ মোশাররফ মারা যাওয়ার পর তার অতীত জীবনও সামনে এসেছে। কে ছিলেন এই পারভেজ মোশাররফ। 

পাকিস্তানের সামরিক শাসক জেনারেল পারভেজ মোশাররফ। সংগৃহীত ছবি

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ৭৯ বছর বয়সী জেনারেল মোশাররফ দীর্ঘ রোগভোগের পর দুবাইয়ের একটি হাসপাতালে মারা গেছেন। তার অসুস্থতার ব্যাপারে ২০১৮ সালে জানানো হয়েছিলো জেনারেল মোশাররফ অ্যামিলয়ডোসিস নামে এক জটিল রোগে ভুগছেন। এ রোগে মানব শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ধীরে ধীরে বিকল হয়ে যেতে থাকে।

জেনারেল মোশাররফের জন্ম ১৯৪৩ সালের ১১ আগস্ট ব্রিটিশ ভারতের দিল্লিতে। সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ১৯৯৯ সালে ক্ষমতা দখল করেন তিনি। এরপর প্রেসিডেন্ট হিসেবে ২০০১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন।

জেনারেল পারভেজ মোশাররফ। সংগৃহীত ছবি

জেনারেল মোশাররফ ২০০৭ সালে সংবিধান স্থগিত করে জরুরি অবস্থা জারি করেন। এর মধ্যদিয়ে তিনি নিজের শাসনামল দেরি করতে চেয়েছিলেন। এই ঘটনায় পাকিস্তানে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়, এবং ইমপিচমেন্ট এড়াতে ২০০৮ সালে তিনি পদত্যাগ করেন।

এজন্য পরে তাকে বিচারের মুখোমুখি হতে হয়েছিল। তিনি পাকিস্তানের প্রথম সামরিক শাসক যাকে সংবিধান স্থগিত করার জন্য বিচারের মুখোমুখি হতে হয়েছিল।

রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে তাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল পাকিস্তানের আদালত, যদিও পরে সেটি বাতিল হয়ে যায়। সর্বশেষ তিনি দুবাইতে অবস্থান করছিলেন।

যুদ্ধকালীন সময়ে সহকর্মীদের সঙ্গে জেনারেল পারভেজ মোশাররফ। সংগৃহীত ছবি

জেনারেল পারভেজ মোশাররফ পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমিতে যোগ দেন ১৯৬১ সালে। ১৯৬৪ সালে তিনি একাডেমি থেকে সেকেন্ড (দ্বিতীয়) লেফটেন্যান্ট হিসেবে বের হয়েছিলেন। এই সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট পদবিতেই তিনি ১৯৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।

১৯৯৮ সালে তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রধান নিযুক্ত হন। ১৯৯৯ সালের মে মাসের কারগিল যুদ্ধে সেনাবাহিনীর জড়িত থাকা নিয়ে তখনকার প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফের সাথে সম্পর্কে ফাটল ধরে জেনারেল মোশাররফের।

এর ধারাবাহিকতায় ওই বছরই এক অভ্যুত্থান করে ক্ষমতায় আরোহণ করেন জেনারেল মোশাররফ। ২০০৮ সাল পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট ছিলেন তিনি।

ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের সঙ্গে মোশাররফ। সংগৃহীত ছবি

এই সময়ের মধ্যে বহুবার আততায়ীর হামলা থেকে রক্ষা পেয়েছেন তিনি। তাকে উৎখাতের বহু প্লটও ব্যর্থ হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের 'সন্ত্রাস-বিরোধী যুদ্ধে' সমর্থন ও ভূমিকা পালনের জন্য আন্তর্জাতিকভাবে সুপরিচিত ছিলেন তিনি। যদিও এ কারণে স্বদেশে ব্যাপক বিরোধিতার শিকার হতে হয় তাকে।

রাষ্ট্রপতির পদ ত্যাগ করার পর ২০০৮ সালে দেশ ছাড়েন তিনি। তবে ২০১৩ সালের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য পাকিস্তানে ফেরেন। যদিও আদালতের নিষেধাজ্ঞার কারণে তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে ব্যর্থ হন।

রাষ্ট্রদ্রোহের মামলার শুনানিতে মাত্র দুবার হাজিরা দিয়েছিলেন তিনি। এর আগে তার সময় কেটেছে হয় সেনাবাহিনীর একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নয়তো ইসলামাবাদের একটি খামারে। পরবর্তীতে ২০১৪ সালের এপ্রিলে তিনি করাচীতে চলে যান। সেখানে দু'বছর থাকার পর তিনি আবার দেশত্যাগ করেন। ২০১৬ সালে তাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাবার অনুমতি দেয়া হয়েছিলো। তথ্যসূত্র: বিবিসি

ইত্তেফাক/এফএস/এসকে