বৃহস্পতিবার, ২৩ মার্চ ২০২৩, ৯ চৈত্র ১৪২৯
দৈনিক ইত্তেফাক

রাজশাহী বিভাগে মাধ্যমিকের বইসংকট কাটেনি

আপডেট : ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০২:৩২

চলছে ফেব্রুয়ারি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ। এক মাসের অধিক সময় পেরিয়ে গেলেও এখনো সব বই হাতে পায়নি রাজশাহী বিভাগের মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা। ২৫ শতাংশ বই ছাড়াই চলছে নতুন বছরের কার্যক্রম। এতে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান।

রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের তথ্য মতে, রাজশাহী বিভাগের চাহিদার তুলনায় এখনো ২৫ শতাংশ বই মেলেনি। বিভাগের আট জেলায় মোট চাহিদার ৭৪ দশমিক ৩৩ ভাগ বই হাতে পেয়েছে শিক্ষার্থীরা। তথ্য মতে, রাজশাহী বিভাগে নিম্ন মাধ্যমিক, মাধ্যমিক, মাদ্রাসা ও কারিগরি মিলে মোট ৫ হাজার ৮৮৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আছে। এর মধ্যে মাধ্যমিক ও নিম্ন মাধ্যমিক ৩ হাজার ৯২টি, মাদ্রাসা ২ হাজার ২২৪টি এবং কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আছে ৫৬৭টি। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ২ লাখ ৪১ হাজার ১২৮ জন শিক্ষার্থী আছে। সব শিক্ষার্থীর জন্য নতুন পাঠ্যবই দরকার ২ কোটি ৯৮ লাখ ৮৪ হাজার ৬১২টি। এর মধ্যে গত ১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৭৪ দশমিক ৩৩ শতাংশ বই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে হস্তান্তর করা হয়েছে। সেখান থেকে ৭৩ দশমিক ৫০ শতাংশ বই শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছেছে।

বিভাগের আট জেলার মধ্যে রাজশাহীতে ১ হাজার ৪১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৩২ লাখ ৬ হাজার ৫৫টি বইয়ের চাহিদার বিপরীতে পাওয়া গেছে ৭০ দশমিক ৬৫ শতাংশ। এর মধ্যে সব বই বিতরণ করা হয়েছে। নওগাঁয় ৮৭৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ২৬ লাখ ৭ হাজার ৪৩৪টি বইয়ের চাহিদার বিপরীতে পৌঁছেছে ৭৬ শতাংশ। এখানেও সব বই বিতরণ করা হয়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৪৩৭ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ২১ লাখ ৩ হাজার ৭৩০টি বইয়ের চাহিদার বিপরীতে বই পাওয়া গেছে ৭২ দশমিক ৬৫ শতাংশ। নাটোরে ৫৮৫ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ১৯ লাখ ৪ হাজার ৯৫৪টি বইয়ের চাহিদার বিপরীতে ৭১ শতাংশ, বগুড়ায় ১ হাজার ৮২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ২৬ লাখ ৯ হাজার ছয়টি বইয়ের বিপরীতে ৭৭ দশমিক ৩ শতাংশ, জয়পুরহাটে ৩৯৩ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ১০ লাখ ৯ হাজার ৭৫৪টি বইয়ের চাহিদার বিপরীতে ৮১ দশমিক ৭২ শতাংশ, পাবনায় ৬১৮ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ২৭ লাখ ৩ হাজার ৬৭৬টি বইয়ের চাহিদার বিপরীতে ৮৫ শতাংশ ও সিরাজগঞ্জে ৮৫৪ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৩৮ লাখ ৬ হাজার ১৯টি বইয়ের চাহিদার বিপরীতে বই পাওয়া গেছে ৭৮ শতাংশ।

রাজশাহীর লক্ষ্মীপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক সাথী বসু বলেন, ‘আমাদের স্কুলে বেশ কিছু বই এখনো পাইনি। যেসব বই পাওয়া যায়নি সেগুলোর পিডিএফ কপি দিয়ে ক্লাস চলছে।’ রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ড. নুরজাহান বেগম বলেন, ‘রাজশাহীর সব স্কুলেই শতভাগ বই পাওয়া যায়নি। আমাদের স্কুলেও শতভাগ বই নেই। যে বইগুলো পাওয়া গেছে সেগুলো বিতরণ করা হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের যে বইগুলো এখনো পাওয়া যায়নি, সেগুলো অনলাইন থেকে শিক্ষকরা পিডিএফ ভার্সন নামিয়ে ক্লাস নিচ্ছেন।’

রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক ড.শরমিন ফেরদৌস চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের প্রতিদিনই বই আসছে, যা আসছে তাই বিতরণ করা হচ্ছে। যে ক্লাসে যে বই আসেনি ওয়েবসাইটে সেই বই দেওয়া আছে। শিক্ষকরা সেখান থেকে বই ডাউনলোড দিয়ে প্রিন্ট করে ক্লাস নিচ্ছেন। আশা করছি, কিছুদিনের মধ্যেই সব বই চলে আসবে। তখন এ সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।’

ইত্তেফাক/ইআ