বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতের নাজিরকে বদলি, বর্জনের মধ্যেই ২১ আসামির জামিন 

আপডেট : ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৯:১৭

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতের নাজির মোমিনুল ইসলামকে চাঁদপুর জেলা জজ আদালতে বদলি করা হয়েছে। তার এই বদলিকে আইনজীবীরা আন্দোলনের সুফল হিসেবে দেখছেন। নাজিরের বদলির মধ্য দিয়ে তাদের দাবির একধাপ অগ্রগতি হয়েছে। আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা বলেছেন, প্রশাসনিক কারণে তার বদলির আদেশ হয়েছে। 

বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) প্রশাসনিক কারণ উল্লেখ করে নাজির মোমিনুল ইসলামকে বদলি করেছে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। একই আদেশে চাঁদপুর আদালতের নাজির মো. ছানাউল্যা তালুকদারকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বদলি করা হয়েছে। 

এদিকে আইনজীবীদের আদালত বর্জন কর্মসূচির মধ্যেই নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ আদালত থেকে ২১ জন আসামি জামিনে মুক্ত হয়েছেন। বিষয়টিকে আইনজীবীরা আইনসম্মত নয় বলে দাবি করলেও আদালত কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে আইনসম্মত দিক বিবেচনা করেই জামিন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে।  

জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এডভোকেট তানভীর ভূইয়া বলেন, বিচার প্রার্থীরা ইচ্ছে করলে নিজের মামলা নিজে মুভ করতে পারেন। কিন্তু বেইলবন্ড ছাড়া বিচারক জামিনের আদেশ দিতে পারেন না। এটা আইনসম্মত নয়। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে রাষ্ট্রপক্ষের বক্তব্য না শুনে বিচারক জামিন দিতে পারে না। 

তিনি অভিযোগ করে বলেন, পেশকার এবং পিয়নরা আইনজীবীদের পাশ কাটিয়ে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে এসব জামিন করিয়ে দিচ্ছেন। নাজিরের অপসারণে আমাদের একধাপ অগ্রগতি হয়েছে। আইনমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতির আলোকে এখন ওই দুই বিচারকের অপসারণ হলেই আমাদের আন্দোলনের সমাপ্তি ঘটবে। তবে দাবি থেকে আমরা সরে আসব না।


 
জেলা জজ আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোস্তফা কামাল বলেন, আইনজীবীদের পক্ষ থেকে জামিন চাওয়া হলে তখন বেইলবন্ড দাখিলের শর্তপূরণ করতে হয়। যখন পক্ষ নিজেই আসে তখন তার পক্ষে এসব শর্ত প্রযোজ্য নয়। সাদা কাগজের উপর সরকারি স্ট্যাম্প ও কোর্ট ফি লাগিয়ে জমা দিলে বিচারকের স্বাক্ষরের মাধ্যমে জামিন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। এখানে লেনদেনের কোনো প্রশ্নই আসে না। প্রশাসনিক কারণ উল্লেখ করে নাজির মোমিনুল ইসলামের বদলির আদেশ হয়েছে।

গত ১ ডিসেম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক মোহাম্মদ ফারুক মামলা না নিয়ে আইনজীবীদের সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্যের অভিযোগ করেন আইনজীবীরা। এ ঘটনায় আইনজীবীরা ১ জানুয়ারি থেকে বিচারক মোহাম্মদ ফারুকের আদালত বর্জনের ঘোষণা দেয়। এদিকে বিচারকের সঙ্গে অশোভন আচরণের অভিযোগে ৪ জানুয়ারি কর্মবিরতি পালন করেন আদালতের কর্মচারীরা। এ অবস্থায় জেলা জজ, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ ও আদালতের নাজির মোমিনুল ইসলামের অপসারণ চেয়ে ৫ জানুয়ারি থেকে পুরো আদালত বর্জনের লাগাতার কর্মসূচি পালন করে আসছে আইনজীবীরা। পরবর্তীতে দফায় দফায় ৭ কর্মদিবস আদালত বর্জনের কর্মসূচি পালন করে আইনজীবীরা।

এছাড়াও বিচারকের সঙ্গে অশোভন আচরণ ও অশালীন শ্লোগান দেওয়ার অভিযোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আইনজীবী সমিতির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ ২৪ আইনজীবীকে দু’দফায় তলব করেছে উচ্চ আদালত। এসব ঘটনার প্রেক্ষিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আইনজীবীদের সঙ্গে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের বৈঠকের পর দুটি আদালত বাদে বর্জনের কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।

ইত্তেফাক/এবি/পিও