শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

আইসিসি নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ

সিলেটের সেই স্মৃতি ফিরবে কেপ টাউনে?

আপডেট : ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০১:১৮

আইসিসি নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শুরু হয়েছে ১০ ফেব্রুয়ারি। তবে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের জন্য টুর্নামেন্টটা শুরু হচ্ছে আজ থেকে। দক্ষিণ আফ্রিকায় মেয়েদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের অষ্টম আসরে নিগার সুলতানার বাংলাদেশ যে আজই মাঠে নামছে প্রথম। কেপ টাউনে নিজেদের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ সেই পরিচিত শ্রীলঙ্কা। যাদের বিপক্ষে রয়েছে মেয়েদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের একমাত্র জয়ের স্মৃতি।

এটা মেয়েদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের অষ্টম আসর হলেও বাংলাদেশ  খেলছে পঞ্চম বারের মতো। বাংলাদেশ প্রথম বারের মতো এই টুর্নামেন্টে অংশ নেয় ২০১৪ সালে, নিজেদের ঘরের মাঠে স্বাগতিক হিসেবে। এরপর ২০১৬, ২০১৮ এবং ২০২০ সালের আসরেও খেলেছে। তবে আগের চারটি আসর মিলিয়ে বাংলাদেশ জিতেছে মাত্র একটি ম্যাচে। হেরেছে বাকি ১৫ ম্যাচে! সবেধন নীলমনি হয়ে থাকা একমাত্র সেই জয়টা ২০১৪ সালের আসরে, নিজেদের ঘরের মাঠে, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। স্বাভাবিকভাবেই ২০১৪ সালের ১ এপ্রিল সিলেট স্টেডিয়ামে ৩ রানের সেই নাটকীয় জয়ের সুখস্মৃতি এখনো বাংলাদেশি ক্রিকেটপ্রেমীদের হৃদয়ে জ্বলজ্বল করছে।

উজ্জ্বল সালমা খাতুনদের হৃদয়েও। এই অল-রাউন্ডারের নেতৃত্বেই মিলেছিল সেই জয়। তবে অধিনায়ক সালমা নন, সেদিন দেশকে জয়ের আনন্দে ভাসানোর বড় নায়ক ছিলেন রুমানা আহমেদ। তিনি ব্যাট হাতে খেলেছিলেন ৩৪ বলে ৪১ রানের ইনিংস। পরে বল হাতেও নিয়েছিলেন একটি উইকেট। অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ম্যাচসেরা হয়েছিলেন তিনিই। সেই সালমা-রুমানা আছেন এবারের দলেও। শুধু সালমা-রুমানা নন, দেশবাসীকে জয় উপহার দেওয়া সেই দলের মোট ছয় জন ক্রিকেটার আছেন এবারের দলে। তারা হলেন সালমা-রুমানার সঙ্গে আছেন জাহানারা আলম, ফাহিমা খাতুন, শামিমা সুলতানা ও লতা মন্ডল।

কেপ টাউনের যুদ্ধে নামার আগে সালমা-রুমানা-জাহানারাদের অন্তরে যে সেই স্মৃতি আনন্দের বেপু বাজাবে, সেটি স্পষ্টই। কিন্তু অন্তরের আরেক পাশে ভয়-আতঙ্কের শঙ্কাও কি বাজবে না। মেয়েদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সর্বশেষ দুটি আসরেও (২০১৮ ও ২০২০) যে একই গ্রুপে পড়েছিল বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা। কিন্তু দুর্ভাগ্য, সেই দুবারই পরাজিত দলের নাম বাংলাদেশ। মানে এক হারের শোধ লঙ্কানরা নিয়েছে পরপর দুটি আসরে, দুই বার জিতে। লঙ্কানদের বিপক্ষে সেই হার দুটিও অসহায় আত্মসমর্পণের মাধ্যমে। 

ওয়েস্ট ইন্ডিজে ২০১৮ সালের ১৪ নভেম্বর লঙ্কানদের ৭ উইকেটে ৯৭ রানের জবাবে বাংলাদেশের মেয়েরা অলআউট হয়েছির মাত্র ৭২ রানে। অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে ২০২০ সালের ২ মার্চ লঙ্কানরা জিতেছিল ৯ উইকেটে। ৮ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের করা ৯১ রান লঙ্কানরা টপকে যায় মাত্র ১ উইকেট হারিয়ে ১৫.৩ ওভারেই।

মুখোমুখি সাক্ষাতের এই পরিসংখ্যানগুলো নিশ্চিতভাবেই নিগার সুলতানার বাংলাদেশের জন্য ভয়ের কারণ। তবে ভয় বা আতঙ্কের এখানেই শেষ নয়। শ্রীলঙ্কা এরই মধ্যে টুর্নামেন্ট শুরু করেছে জয় দিয়ে। ১০ ফেব্রুয়ারি টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচে তারা স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জিতেছে ৩ রানে। মানে বাংলাদেশের বিপক্ষে সর্বশেষ দুই আসরের জয়ের স্মৃতি তো আছেই, লঙ্কানদের আজ বাড়তি আত্মবিশ্বাস জোগাবে প্রথম ম্যাচের জয়টিও। নিশ্চিতভাবেই চামারা আতাপাত্তুর শ্রীলঙ্কা উজ্জীবিত।

তবে ভয় যতই থাকুক, আশার ছবি আঁকতে তো দোষ নেই। আশান্বিত মনের অন্দরমহলে একটা প্রশ্নই ঘুরে ফিরছে—সালমা, রুমানা, নিগার সুলতানারা পারবেন সেই ৯ বছর আগের সিলেটের সেই সুখস্মৃতি আজ কেপ টাউনে ফেরাতে?

ইত্তেফাক/ইআ