বুধবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৩, ১৮ আশ্বিন ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

বিমানবন্দরে নিরাপত্তার আধুনিকায়নে প্রকল্প গ্রহণ

আপডেট : ১৮ জুন ২০১৯, ২২:২৯

দেশের তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আধুনিক স্ক্যানারসহ বিস্ফোরক শনাক্তরণ যন্ত্র স্থাপন করা হবে। এজন্য ৫৯ কোটি ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসমূহের সিকিউরিটি ব্যবস্থার উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)।

প্রকল্পটি বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) ২০২০ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়ন করবে। এতে ৫৪ কোটি টাকা প্রকল্প সাহায্য আকারে পাওয়া যাবে। প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপার্সন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গতকাল মঙ্গলবার শেরে বাংলা নগরস্থ এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত একনেক সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।

তিনি জানান, ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালিত হচ্ছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসমূহের সিকিউরিটি ব্যবস্থার উন্নয়নসহ সক্ষমতা আরো বৃদ্ধি পাবে।

সভা পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর বিভিন্ন নির্দেশনা তুলে ধরেন পরিকল্পনা বিভাগের সচিব মো. নূরুল আমিন। সভায় ৮ হাজার ৫৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ১১টি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল (জিওবি) হতে ৩ হাজার ৩৮৯ কোটি টাকা, সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ৫৫১ কোটি টাকা এবং প্রকল্প ঋণ আকারে ৪১১৩ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে। সোমবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বাংলাদেশের অবিস্মরণীয় জয় পাওয়ায় একনেক সভায় সাকিব আল হাসান, লিটন দাসসহ জাতীয় ক্রিকেট দলের প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী। সভায় বিমানবন্দরের নিরাপত্তার আধুনিকায়নে প্রকল্প নিয়ে আলোচনার সময় প্রধানমন্ত্রী দেশের সকল বিমানবন্দরে নিরাপত্তা উন্নত করতে ডগস্কোয়াড ব্যবহারের কথা বলেন। তিনি বলেন, পৃথিবীর অনেক দেশে ডগ স্কোয়াড ইউনিট আছে। আমাদেরও করতে হবে।

সভায় অনুমোদিত অন্য প্রকল্পগুলো হলো, ৭১০ কোটি টাকা ব্যয়ে নেত্রকোণা-কেন্দুয়া-আঠারবাড়ী-ঈশ্বরগঞ্জ জেলা মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্প, ১৭৫১ কোটি টাকা ব্যয়ে বাংলাদেশের ৩০টি পৌরসভায় পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন প্রকল্প, ৩৫২ কোটি টাকা ব্যয়ে গাজীপুরে অবস্থিত ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্প (১ম সংশোধিত), ৩১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ইনভেস্টমেন্ট কমপোনেন্ট ফর ভালনারেবল গ্রুপ ডেভলপমেন্ট প্রোগ্রাম (২য় পর্যায়) প্রকল্প, ৩২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে কুমিল্লা-চাঁদপুর-ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সেচ এলাকা উন্নয়ন প্রকল্প, ১২৩ কোটি টাকা ব্যয়ে পোল্ট্রি গবেষণা ও উন্নয়ন জোরদারকরণ প্রকল্প, ১০৫ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রাণিসম্পদ উত্পাদন উপকরণ ও প্রাণিজাত খাদ্যের মান নিয়ন্ত্রণ গবেষণাগার স্থাপন প্রকল্প (১ম সংশোধিত), ৩ হাজার ৯১৯ কোটি টাকা ব্যয়ে খুলনা ৩৩০ মে.ও. ডুয়েল ফুয়েল কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুত্ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প (১ম সংশোধিত), ৯১ কোটি ৭৪ লাখ টাকা ব্যয়ে গাজীপুরে রাসায়নিক গুদাম নির্মাণ প্রকল্প, ২৯৫ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ব্যয়ে বিসিক শিল্প পার্ক, টাঙ্গাইল প্রকল্প (১ম সংশোধিত) অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

সভায় জানানো হয়, জনগণের নিরাপত্তার স্বার্থে পুরনো ঢাকার ঝুঁকিপূর্ণভাবে সংরক্ষিত রাসায়নিক পদার্থসমূহ নিরাপদ স্থানান্তর ও আপদকালীন সময়ে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে বিভিন্ন দাহ্য ও উদ্বায়ী পদার্থের নিরাপদ সংরক্ষণ করার জন্য গাজীপুরে রাসায়নিক গুদাম নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটি ২০২০ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়ন করার লক্ষ্য রয়েছে।

একনেক সভায় বেশকিছু নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী। ইউনিয়ন পরিষদ পর্যন্ত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য একটি মাস্টারপ্ল্যান করার নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী। সারাদেশের হাইওয়েগুলোতে এমন একটি মাস্টারপ্ল্যান করতে হবে, যাতে চালক-যাত্রীদের জন্য নির্দিষ্ট দূরত্ব অন্তর সার্ভিস সেন্টার থাকবে। দারিদ্র্যসীমা থেকে কোন কোন জেলা বের হয়ে আসতে পারলো- তার একটা ডাটাবেজ তৈরির বিষয়েও নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।