সোমবার, ০৫ জুন ২০২৩, ২২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

মেসি-নেইমার-এমবাপ্পেকে নিয়েও রক্ষা পেলো না পিএসজি

আপডেট : ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৬:০৭

কিংসলে কোম্যানের একমাত্র গোলে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলর প্রথম লেগের ম্যাচে পিএসজিকে হারিয়েছে বায়ার্ন মিউনিখ। পিএসজির তিন বড় তারকা মেসি-নেইমার-এমবাপ্পেও পারেনি দলের হার এড়াতে। বদলি হিসেবে খেলতে নামা এমবাপ্পে অফসাইডের কারণে অল্পের জন্য সমতা ফেরাতে পারেনি। 

পার্ক দ্যেস প্রিন্সেসে আলফোনসো ডেভিসের ক্রসে ৫৩ মিনিটে অনেকটা ফাঁকায় দাঁড়ানো কোম্যান এগিয়ে দেন বায়ার্নকে। ঠিক ঐ মুহূর্তেই ইনজুরি কাটিয়ে দলে ফেরার জন্য সাইডলাইনে প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন এমবাপ্পে। দলের সর্বোচ্চ গোলদাতাকে মাঠে নামিয়েও অবশ্য শেষ পর্যন্ত সফল হতে পারেনি স্বাগতিক পিএসজি। 

ম্যাচ শেষের আট মিনিট আগে নুনো মেনডেসের কাটব্যাক থেকে এমবাপ্পে বল জালে জড়ালে পুরো স্টেডিয়াম উল্লাস করে ওঠে। কিন্তু পর্তুগিজ ফুলব্যাক পাস দেওয়ার আগে সর্বশেষ ডিফেন্ডারের সামান্য আগে থাকায় অফসাইডের কারনে গোলটি বাতিল হয়ে যায়। ম্যাচের একেবারে শেষ মিনিটে দ্বিতীয় হলুদ কার্ডের কারণে বেঞ্জামিন প্যাভার্ড মাঠ ছাড়লে বায়ার্ন ১০ জনের দলে পরিণত হয়েছিল। কিন্তু তারপরও পিএসজিকে হার নিয়েই বাড়ি ফিরতে হয়েছে।

ম্যাচের একবারে শেষভাগে এমবাপ্পের কল্যাণে ফরাসি জায়ান্টরা কিছুটা আগ্রাসী হয়ে উঠেছিল। কিন্তু একইসাথে প্রতিপক্ষের বেশ কিছু আক্রমণে বড় ব্যবধানের পরাজয় কমাতে গোলরক্ষক জিয়ানলুইজি ডোনারুমাকে শেষ পর্যন্ত সতর্ক থাকতে হয়েছে।
 
আগামী ৮ মার্চ মিউনিখে দ্বিতীয় লেগের ম্যাচে পিএসজি ফিরে আসার অপেক্ষায় রয়েছে। ম্যাচ শেষে এমবাপ্পে বলেছেন, ‘আমরা এখন পিছিয়ে গেলাম। কিন্তু একইসঙ্গে পুরো ম্যাচে তাদের বেশ কয়েকবার আমরা সমস্যায় ফেলেছি যা পরের ম্যাচে কাজে লাগবে। এখন আমাদের একটি বিষয় নিশ্চিত করতে হবে দ্বিতীয় লেগের আগে সবাই যেন সুস্থ থাকে। আমরা মিউনিখে যাবো পরবর্তী রাউন্ডে খেলার উদ্দেশ্য নিয়ে।’

প্যারিসে ক্যারিয়ার শুরু করা ফরাসি অ্যাটাকার কোম্যান গোলের পর কোন ধরনের উদযাপন করেননি। কিন্তু এই ধরণের ঘটনা তার জন্য প্রথম নয়। ২০২০ লিসবনের ফাইনালে পিএসজিকে ১-০ গোলে পরাজিত করে বায়ার্ন যখন ষষ্ঠবারের মত ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল তখনো ম্যাচের জয়সূচক গোলদাতা ছিলেন কোম্যান।

এ সম্পর্কে কোম্যান বলেন, ‘বিষয়টা বেশ অস্বস্তিকর। এই ক্লাব, এই শহরে আমি বেড়ে উঠেছি। এখানেই আমার জন্ম হয়েছে। সে কারণে গোল উদযাপন করাটা কিছুটা হলেও কঠিন। কিন্তু দিনের শেষে এই জয়ে আমি খুবই খুশী।’

উরুর ইনজুরির কারনে কাল মূল একাদশে সুযোগ পাননি ফরাসি তারকা এমবাপ্পে। প্রাথমিক ভাবে যেমনটি ধারণা করা হয়েছিল সেই সময়ের মধ্যে এমবাপ্পে অনুশীলনে ফিরতে পারেননি। যে কারণে ফিটনেস সমস্যায় তার দলে ফেরাটা বিলম্বিত হয়েছে।

প্রথমার্ধে লিওনেল মেসি ও নেইমার দারুণভাবে এমবাপ্পের অনুপস্থিতি অনুভব করেছে। গ্রুপ পর্বে ছয় ম্যাচে সাত গোল করা এমবাপ্পেকে বেঞ্চে বসে সতীর্থদের উৎসাহ যোগানো ছাড়া আর কিছুই করার ছিলনা। 

বায়ার্ন কোচ জুলিয়ান নাগলসম্যান বিরতির পর জোয়াও ক্যান্সেলোকে উঠিয়ে নেন। তার পরিবর্তে মাঠে নামান কানাডিয়ান ডেভিসকে। এই পরিবর্তনেই বায়ার্ন গোলের দেখা পায়। বামদিক থেকে ডেভিসের ক্রসে ফাঁকায় দাঁড়ানো কোম্যান সুযোগের সদ্ব্যববহার করেন। 

পিএসজিও এসময় খেলোয়াড় পরিবর্তন করে আচরাফ হাকিমির জায়গায় ফরাসি সেন্টার-ব্যাক প্রিসনেল কিম্পেম্বেকে মাঠে নামায়। কিন্তু বিরতির সময় এমবাপ্পেকে অনুশীলন করতে দেখে পুরো স্টেডিয়াম নড়েচড়ে বসে। এক গোলে পিছিয়ে থাকা পিএসজি ম্যাচে ফিরে আসার প্রয়াসে আর দেরি করেনি। কার্লোস সোলারের পরিবর্তে এমবাপ্পেকে মাঠে নামান গ্যালতিয়ের। 

এরপরই এমবাপ্পের একটি শট বায়ার্ন গোলরক্ষক ইয়ান সোমার কোনমতে রক্ষা করেন। ফিরতি শটে নেইমারকেও হতাশ করেন সোমার। এরপর এমবাপ্পে বল জালে জড়ান। কিন্তু অফসাইডের কারনে তা বাতিল হয়ে যায়। মেসিকে ফাউলের অপরাধে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে স্টপেজ টাইমে মাঠত্যাগ করেন প্যাভার্ড। 

নাগলসম্যান বলেছেন, ‘এটা স্পষ্ট যে এমবাপ্পে যেকোন সময় যেকোন ম্যাচের গতি পরিবর্তন করে দিতে পারে। এ ম্যাচের ফল আমাদের জন্য এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এটা শুধুমাত্র প্রথম ধাপ।’

ইত্তেফাক/এসএস

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন