‘আমার বোন এবং পরিবারের সকল সদস্যকে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। তাদের অপরাধ কী ছিল? একটি জাতিকে স্বাধীনতার দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য শেখ মুজিবকে তার জীবন দিয়ে মূল্য দিতে হয়েছে। আজ যারা মানবাধিকার নিয়ে দৌড়-ঝাঁপ করেন তারা এতদিন কোথায় ছিল। তাদের মুখে তো এ হত্যাকাণ্ডের বিচার নিয়ে কোনো কথা শুনিনি। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সঙ্গে স্থানীয় সহযোগীরা আমার ভাইকে তার বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায় এবং পরে তাকে হত্যা করে... এমনকি আমরা দাফন করার জন্য আমার ভাইয়ের দেহাবশেষও খুঁজে পাইনি।’
সম্প্রতি রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে এভাবে প্রশ্ন রেখেছেন অশ্রুসিক্ত গোলাম আহমেদ টিটো। তিনি বিশিষ্ট ক্রীড়াবিদ সুলতানা কামালের ভাই। সুলতানা কামাল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র শেখ কামালের স্ত্রী। বোনের খুনিদের দেশের প্রথম সামরিক শাসকের পৃষ্ঠপোষকতা করতে দেখা তার জন্য যে কতটা পীড়াদায়ক ছিল সেই বর্ণনাই দিয়েছেন তিনি।
দেশের প্রতিষ্ঠাতা জাতির পিতার খুনিদের আশ্রয় দেওয়ার বিষয়ে গভীর নীরবতা এবং রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছিল তৎকালীন বিএনপি সরকার। দেশে জামায়াতকে বেড়ে উঠতে দিয়ে যুদ্ধাপরাধীদের পুনর্বাসনের জন্য সশস্ত্র বাহিনীর এক হাজার সদস্যদের মৃত্যুদণ্ডের জন্য এই সরকারকে দায়ী করা উচিত। যাদের মধ্যে অনেকে যুদ্ধের নায়ক ছিলেন। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতার শাসনামল এবং বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার ওপর হামলার বিষয়ে তিনি এই মত পোষণ করেন।
গোলাম আহমেদ টিটোর মতো ভুক্তভোগী পরিবার এবং জিয়ার শাসনামলে সশস্ত্র বাহিনীর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এক হাজারেরও বেশি সদস্যের পরিবারের ন্যায়বিচারের আহ্বান বিএনপি-জামায়াত সরকার আমলে নেইনি এবং এ নিয়ে উপহাস করা হয়।
তিনি আরও বলেন, শেখ মুজিব পরিবারের সদস্যদের হত্যাকারী ও যুদ্ধাপরাধীদের অনেকের এখনও বিচার হয়নি। কিছু পশ্চিমা দেশ তাদের আশ্রয় দিয়েছে। এটি দ্বিমুখী আচরণ ও ভন্ডামী। এই দেশগুলোর সরকার প্রায়শই বাংলাদেশের মতো দেশের মানবাধিকারের বিষয়ে বক্তব্য দেয়। কিছু অধিকার গোষ্ঠী যারা বেছে বেছে সমস্যা উত্থাপন করে।