বৃহস্পতিবার, ০৮ জুন ২০২৩, ২৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা কাজ করছেন সরকারি দলের হয়ে : জি এম কাদের

আপডেট : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৩:২৪

জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেছেন, ‘রাষ্ট্র, সরকার ও সরকারি দল এখন একাকার হয়ে গেছে। প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা সরকারি দলের হয়ে কাজ করছেন। অথচ তাদের কাজ করার কথা দেশের মানুষের স্বার্থে। সরকারের কোনো অন্যায় আদেশ মানতে তারা বাধ্য নন। পুলিশ ও প্রশাসনকে মনে রাখতে হবে, তারা রাষ্ট্রের কর্মচারী। দেশের প্রতিটি দল বা মানুষকে সমান চোখে দেখতে হবে। সমান অধিকার নিশ্চিত করতে হবে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে।’ তিনি গতকাল রবিবার রাজধানীর কাকরাইলে জাপার কেন্দ্রীয় কার্যালয় মিলনায়তনে জাতীয় মৎস্যজীবী পার্টির সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।

জি এম কাদের বলেন, দেশের সাধারণ মানুষ ইভিএম বিশ্বাস করে না, ইভিএমে ভোট দিতে চায় না। দেশের মানুষ মনে করে, ইভিএম হচ্ছে ভোট চুরির আধুনিক মেশিন। নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংলাপে একমাত্র আওয়ামী লীগ ও তাদের মিত্র কয়েকটি রাজনৈতিক দল ছাড়া সবাই এর বিপক্ষে মতামত দিয়েছে। তার পরেও নির্বাচন কমিশন ইভিএমে ভোট নিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এমনকি, নির্বাচন কমিশন অচল ও অকেজো ইভিএম সচল করতে কোটি কোটি টাকা খরচ করছে। দেশের মানুষ এই উদ্যোগকে সন্দেহের চোখে দেখছে। তিনি বলেন, ‘ইভিএমের মাধ্যমে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। ইভিএমের ওপর দেশের ৯০ শতাংশ মানুষের আস্থা নেই। আমরা কারচুপির নির্বাচন চাই না। কারচুপির নির্বাচনে আমরা জিততেও চাই না। আমরা চাই মানুষের ভোটাধিকার। আমরা অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পক্ষে।’

জাপা চেয়ারম্যান বলেন, ‘বিভিন্ন গণমাধ্যমের দেওয়া তথ্যে আমরা জানতে পেরেছি, ২০১৮ সালে ৩ হাজার ৮২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে দেড় লাখ ইভিএম কিনেছিল নির্বাচন কমিশন। গত চার মাস ধরে টানা কিউসি করে ৪০ হাজার ইভিএমে ত্রুটি পেয়েছে কমিশন। ১ লাখ ১০ হাজার ইভিএম দিয়ে ভোটগ্রহণ সম্ভব নয়।’ এ প্রসঙ্গে জি এম কাদের বলেন, সচল ইভিএম দিয়ে ভোটগ্রহণেই নানা বিড়ম্বনায় পড়ছেন সাধারণ ভোটাররা। কখনো ফিঙ্গার মিলছে না, আবার কখনো অকেজো হয়ে যাচ্ছে ইভিএম। এমন বাস্তবতায় অকেজো ইভিএম নির্বাচনের জন্য তৈরি করা দুরভিসন্ধিমূলক। আমরা মনে করি, অকেজো ইভিএমে নির্বাচনই বিপর্যস্ত হবে। ইভিএম অকেজো হওয়ায় অনেক সময় নিজস্ব লোক দিয়ে হাতে লেখা ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। দেশের মানুষ মনে করছে, সরকার ভোটের ফলাফল পালটে দিতেই ইভিএমে নির্বাচন করতে চাইছে।

জি এম কাদের আরো বলেন, ফুটপাত ও সড়ক-মহাসড়ক দখল করে চলছে চাঁদাবাজি। এখন দুষ্টের দমন ও শিষ্টের লালনের পরিবর্তে দুষ্টের লালন ও শিষ্টের দমন চলছে। এখন লুটেরারা বেশি ইজ্জত পায়, যারা লুটপাট করে তাদের সমাজে সম্মানিত মানুষ মনে করা হচ্ছে। আর যারা সৎ ও আদর্শবান, তাদের সমাজে অযোগ্য এবং বোকা মানুষ মনে করা হচ্ছে। দেশে মানুষের কোনো নিরাপত্তা নেই। সম্পদ ও জীবনের নিরাপত্তহীনতায় ভুগছে মানুষ। জাপা মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুর সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন গোলাম মোহাম্মদ রাজু, আজহারুল ইসলাম সরকার, মীর সামছুল আলম লিপটন প্রমুখ।

ইত্তেফাক/ইআ