মানিকগঞ্জে শহীদ মিনারে ফুল দেওয়াকে কেন্দ্র করে যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও শ্রমিক লীগের ত্রিমুখী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। তিন গ্রুপের সংঘর্ষে অন্তত দশ জন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯ টার দিকে মানিকগঞ্জ জেলা শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এ ঘটনা ঘটে।
এদিকে নেতা-কর্মীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ায় শহীদ মিনারে ফুল দিতে আসা সামাজিক, সাংস্কৃতিকসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও প্রতিষ্ঠান প্রধানদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে ফুল না দিয়ে অনেকে শহীদ মিনার এলাকা থেকে চলে যান।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সকাল ৯টায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম মহীউদ্দীনের সভাপতিত্বে আলোচনা শেষে সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ শহীদ মিনারে ফুল দিতে আসেন। আওয়ামী লীগের পক্ষে ফুল দেওয়ার পর শ্রমিক লীগের একপক্ষের নাম ঘোষণা করলে অন্যপক্ষ বাধা দেয়। পরে উভয়পক্ষের কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। সংঘর্ষে স্বেচ্ছাসেবক লীগ, যুবলীগ ও শ্রমিক লীগের দশজন নেতা-কর্মী আহত হন। পরে জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ ও পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
এই ঘটনায় সদর থানা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা সানজিদ কাজল, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা জসিম উদ্দিনসহ শ্রমিক লীগ ও যুবলীগের দশ নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন।
জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আবু বক্কর সিদ্দিক খান তুষার বলেন, শ্রমিক লীগের ফুল দেওয়াকে কেন্দ্র করে নেতা-কর্মীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি শান্ত রাখতে আমি আপেল ভাইয়ের কাছে মাফ চেয়েছি।
জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক সুলতানুল আজম খান আপেল বলেন, মারামারির ঘটনা নয়, উপস্থিত নেতা-কর্মীদের মধ্যে ভুল-বোঝাবুঝির ঘটনা ঘটেছে।
জেলা শ্রমিক লীগের নেতা বাবুল সরকার বলেন, জেলা শ্রমিক লীগের আমি বৈধ সভাপতি। কেন্দ্র থেকে আমাকে সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এরপরও ফুল দেওয়ার সময় আমার নাম ঘোষণা না করে আব্দুল জলিলের নাম ঘোষণা করে। তিনি দাবি করেন, জলিল অনুসারীরা আমার নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা করে।
জেলা শ্রমিক লীগের নেতা আব্দুল জলিল বলেন, জেলা শ্রমিক লীগের আমিই সভাপতি। কেন্দ্র থেকে আমাকে চিঠিপত্র দেয়। কিন্তু বাবুল তা মেনে না নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটনায়।
মানিকগঞ্জ সদর থানার ওসি আব্দুল রউফ সরকার জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে এই বিষয়ে কোনো পক্ষ এখন পর্যন্ত অভিযোগ করেনি।
মানিকগঞ্জ জেলা শ্রমিক লীগের পরস্পর দুইটি কমিটি হয়। কমিটির বৈধতা নিয়ে আদালতে মামলা হয়। দীর্ঘদিন যাবৎ জেলা শ্রমিক লীগের আব্দুল জলিল ও বাবুল সরকার সভাপতি দাবি করে আসছিলেন। তার জের ধরে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে বলে নেতা-কর্মীরা জানান।