শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

শিক্ষার্থী, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষক-কর্মচারীদের বিশেষ অনুদান দিচ্ছে সরকার

আপডেট : ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১০:৪২

মেধাবী শিক্ষার্থী শিউলি। দরিদ্র পরিবারে জন্ম, লেখাপড়ার খরচ মেটাতে হিমশিম খেলেও থেমে যায়নি তার পড়া লেখা। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের বিশেষ আর্থিক অনুদান তার মুখে হাসি ফুটিয়েছে। অন্যান্য বছরের মত এবারও শিউলির মত দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীদের আর্থিক অনুদান দিচ্ছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ। শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং শিক্ষক-কর্মচারীরাও আর্থিক অনুদান সুবিধার আওতায় আসছেন।

সম্প্রতি এটুআই-এর হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট মিডিয়ার উদ্যোগে ইত্তেফাক, সিএনআই এবং এক্সিলেন্স বাংলাদেশের সহযোগিতায় আর্থিক অনুদান বিষয়ে সিটিজেন টক-এর আয়োজন করা হয়। সরকারের বিশেষ এই আর্থিক অনুদান প্রদান, আবেদন এবং অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনার করার জন্য এতে যুক্ত ছিলেন  মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপসচিব মো. নূর-ই-আলম, এটুআই-এর প্রজেক্ট অ্যানালিস্ট (উপসচিব) মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন এবং ভোলার আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক মো. নাজিম উদ্দিন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন শাকিলা মিম।

উপসচিব মো. নূর-ই-আলম জানান, প্রতিবছরের মত এবারও শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সরকারের বিশেষ আর্থিক অনুদানের জন্য আবেদন করতে পারবেন। সরকারের নীতিমালা অনুসারে ৩টি ক্যাটাগরিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের এই অনুদান প্রদান করা হবে। আর্থিক অনুদানে আবেদনের সময় শিক্ষার্থী এবং শিক্ষক ক্যাটাগরিতে ব্যক্তিগত নগদ একাউন্ট নাম্বার দিয়ে আবেদন করতে হবে।  শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নামে ব্যাংক একাউন্ট এবং ইএফটিএন মাধ্যমে ফান্ড প্রদানের সুযোগ থাকছে। তিনি জানান, অনলাইন প্ল্যাটফর্ম মাইগভের মাধ্যমে অনুদানের আবেদন করতে হবে।

অনুদানের আবেদন প্রক্রিয়া সম্পর্কে  মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন বলেন, খুব সহজ প্রক্রিয়ায় এই আর্থিক অনুদানের জন্য আবেদন করা যাবে। www.mygov.bd ওয়েবসাইটে ফোন নাম্বার অথবা ইমেইল অ্যাড্রেস দিয়ে নিবন্ধন করে অনুদানের জন্য আবেদন করতে পারবে। আবেদনকারী নিজের মোবাইল ফোন, কম্পিউটার, নিকটস্থ ডিজিটাল সেন্টার অথবা যেকোনো কম্পিউটার দোকান থেকে আবেদন করতে পারবে।

সেবাগ্রহীতা হিসেবে মো. নাজিম উদ্দিন জানান, তিনি গত বছর এই আর্থিক অনুদান পেয়েছিলেন। সঠিক ও নির্ভুল তথ্য প্রদানের মাধ্যমে আবেদন করলে অনুদান পাওয়া যাবে।

সরকারি-বেসরকারি সাধারণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের (এমপিওভুক্ত ও ননএমপিওভুক্ত) ছাত্র-ছাত্রী, যারা দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত এবং দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন, তারা চিকিৎসার জন্য আর্থিক অনুদান পেতে আবেদন করতে পারবেন। অনুদান প্রদানের ক্ষেত্রে দুস্থ, প্রতিবন্ধী, অসহায়, রোগগ্রস্ত, গরীব, মেধাবী ও অনগ্রসর এলাকার শিক্ষার্থীরা অনুদান পাওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন। 

শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দেশের সকল স্বীকৃতিপ্রাপ্ত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের (এমপিওভুক্ত ও ননএমপিওভুক্ত) মেরামত ও সংস্কার, আসবাবপত্র সংগ্রহ, পাঠাগার স্থাপন, খেলাধুলার সরঞ্জাম সংগ্রহ, প্রতিষ্ঠানকে প্রতিবন্ধীবান্ধব করার জন্য অনুদানের আবেদন করা যাবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বাছাইয়ের ক্ষেত্রে অনগ্রসর এলাকার লেখাপড়ার মান ভালো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অগ্রাধিকার পাবে। আর বেসরকারি সাধারণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (এমপিওভুক্ত ও ননএমপিওভুক্ত) ও মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা দুরারোগ্য ব্যাধি বা দৈব দুর্ঘটনায় আক্রান্ত হলে অনুদানের জন্য আবেদন করতে পারবেন।

মাধ্যমিক এবং উচ্চশিক্ষা বিভাগের আর্থিক অনুদানের আবেদন সময়সীমা ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৩ এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের  আর্থিক অনুদানের আবেদন সময়সীমা ৫ মার্চ ২০২৩ পর্যন্ত।

 

ইত্তেফাক/এসটিএম