দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলায় ২১ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদশূন্য থাকায় পাঠদানসহ সার্বিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। সহকারী শিক্ষকদের দিয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম পরিচালনা করানো হচ্ছে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ১০৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ২১টি বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। সরাসরি নিয়োগ না হওয়ায় দীর্ঘদন থেকে পদগুলো শূন্য রয়েছে। ২১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদশূন্য থাকায় বিদ্যালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ সহকারী শিক্ষককে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে।
সরেজমিনে কয়েকটি বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, প্রধান শিক্ষকের শূন্যপদে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পালনকারি সহকারি শিক্ষকরা নিজের পাঠদানের দায়িত্বের পাশাপাশি অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে বিদ্যালয় পরিচালনার দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন। এতে কোনো না কোনোভাবে সার্বিক শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
উপজেলার চৌরাইট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নুরতাজ উল্লাহ বলেন, ২০২১ সালের ১৪ জুন থেকে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। পূর্বের শিক্ষার্থী সংখ্যা ২০০ জনের সঙ্গে নতুন শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী যোগ হয়েছে আরো ১৬০ জন। এই বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীদের পাঠদান করতে হয়ে কর্মরত শিক্ষকরা হিমশিম খাচ্ছেন। নিজের রুটিং অনুযায়ী ক্লাসে পাঠদান করতে গিয়ে দাপ্তরিক কাজ ঠিকমতো করা যাচ্ছে না। দাপ্তরিক কাজ ঠিকমতো করতে গেলে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।
এ বিষয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য আব্দুল কাইয়ুম বলেন, বিদ্যালয়গুলোতে প্রধান শিক্ষকের কাজের চাপ অনেক বেশি। প্রধান শিক্ষকের পদশূন্য থাকলে এবং সহকারী শিক্ষককে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক করে দায়িত্ব পালন করালে অবশ্যই বিদ্যালয়ের পাঠদান ব্যাহত হবে। শিক্ষার্থীদের পাঠদান নিশ্চিত করতে শূন্য পদগুলোতে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া খুবই জরুরি।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোসাম্মত্ হাছিনা ভূঁইয়া বলেন, শিক্ষকদের অবসর, এলপিআর (অবসর প্রস্তুতিমূলক ছুটি) মাতৃত্বকালীন ছুটি, মৃত্যুসহ নানা কারণে শিক্ষকের সংকট সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে উপজেলার ১০৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ২১টি বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদশূন্য রয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। কর্মরত জ্যেষ্ঠ সহকারী শিক্ষকদের মধ্যে থেকে পদোন্নতি দিয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ পূরণ করা হবে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে এটি করা হবে। শিক্ষক নিয়োগ হলেই এই সংকট কেটে যাবে এবং শিক্ষা ও পাঠদানের অনুকূল পরিবেশ ফিরে আসবে।