বঙ্গোপসাগরে আবারো ডাকাতি শুরু হয়েছে। গত এক মাসে বিভিন্নভাবে দশটি ট্রলারে ডাকাতি হয়। এতে তিন জেলের মৃত্যু ও তিন জেলে নিখোঁজ রয়েছেন।
শনিবার (৪ মার্চ) রাতে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য বন্দর থেকে ১২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরের গভীরে টিন বাদশাহর মালিকানাধীন 'এফবি ভাই ভাই' ট্রলারের আট জেলেকে জিম্মি করে মারধর করা হয়। এ সময় তাদের মাছ, জালদড়ি, তেল, মটর, সেলফ, বেটারিসহ ২০ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে দস্যুরা।
সোমবার (৬ মার্চ) বিষয়টি জানিয়েছেন বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী। বার বার বঙ্গোপসাগরে ডাকাতির ঘটনায় উপকূলীয় জেলেদের মধ্যে এখন আতঙ্ক বিরাজ করছে।
ট্রলারের মালিক টিন বাদশাহ জানান, বঙ্গোপসাগরে মাছ শিকার করে ঘাটে ফেরার পথে ইঞ্জিন বিকল হলে অন্য দুটি ট্রলারের সহযোগিতায় মেরামতের জন্য কক্সবাজার ঘাটের দিকে বেঁধে নিয়ে যাচ্ছিল। এ সময় কক্সবাজার থেকে ৩০ কিলোমিটার দক্ষিণে হঠাৎ দুটি ট্রলার ধাওয়া দিয়ে জেলেদের ট্রলারটি আটক করে। তখন সহযোগিতায় এগিয়ে আসা অন্য ট্রলার দুটি তার ট্রলারটি ছেড়ে দিয়ে নিরাপদে চলে যায়।
তিনি বলেন, ২৫ থেকে ৩০ জন ডাকাত ট্রলার উঠে লাঠি ও পাইপ দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করে এবং রামদা-কুঠার দিয়ে কুপিয়ে সাগরে ফেলে দেওয়ার ভয় দেখায়। জিম্মি করে সকল রসদ তুলে নেয়। এ সময় তাদের কাছে দুটি আগ্নেয়াস্ত্র দেখা গেছে। এতে ট্রলারের মাঝি আমির হোসেন, সাহাবুদ্দিন, লিটন, হাসান, জাহাঙ্গীর, হোসেন আলী ও আবদুল্লাহ আহত হয়েছে।
বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী ট্রলারের মাঝি আমির হোসেনের বরাত দিয়ে জানান, ডাকাতরা এর আগেও আরো সাতটি ট্রলার ডাকাতি করে সাত মাঝিকে অপহরণ করে। তাদের ট্রলারে উঠিয়ে ট্রলারসহ অপহরণ করতে চায়। কিন্তু ভাই ভাই ট্রলারটি ইঞ্জিন বিকল হওয়ায় আবার সাত জেলেকে ডাকাতদের ট্রলারে তুলে নিয়ে এফবি ভাই ভাই ট্রলারটি ছেড়ে দেয়।
জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সহ-সভাপতি আবুল হোসেন ফরাজি জানান, বার বার বঙ্গোপসাগরে ডাকাতি সংঘটিত হওয়ায় উপকূলীয় হাজারো জেলেরা উৎকণ্ঠায় রয়েছে। যদি এদের থামানো না যায় তাহলে জেলেরা আতঙ্কিত হয়ে ব্যবসা ছেড়ে দেবে।
এ বিষয়ে দক্ষিণ স্টেশন কোস্টগার্ড কমান্ডার লেফটেন্যান্ট শাফায়াত আবরার জানিয়েছেন, বিষয়টি আমরা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতি থেকে জানতে পেরেছি। খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে।
র্যাব-৮ কোম্পানি কমান্ডার তুহিন রেজা জানান, কক্সবাজারের ঘটনা শুনেছি। যদিও ঘটনা আমার এলাকার না, তবুও বিস্তারিত জেনে তারপর পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।