বিশ্বে এগিয়ে যাচ্ছে নারী; বাদ নেই বাংলাদেশের মতো মধ্যমআয়ের দেশের নারীরাও। বিশেষ করে তথ্যপ্রযুক্তির (আইসিটি) ব্যবহার দেশের নারীসমাজকে এগিয়ে দিয়েছে কয়েক ধাপ। সেইসঙ্গে পৌঁছে দিয়েছে ক্ষমতায়নে। বাংলাদেশের জনগোষ্ঠীর অর্ধেকই নারী। সমগ্র বিশ্বের মতো বাংলাদেশ সরকারও ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে নারীদের সম্পৃক্ত করতে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে।
নারী নেত্রীরা বলছেন, করোনা মহামারি বিশ্বের অনেক দেশের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেললেও আমাদের দেশের নারীসমাজে তা ইতিবাচক হয়ে ধরা দিয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তির উপযুক্ত ব্যবহার করে নারীরা কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে। প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে শুরু করে সব জায়গায় নারী উদ্যোক্তা তৈরি হয়েছে। ফলে দেশ উন্নত আর সমৃদ্ধির গত দুই দশকে জেন্ডার সমতা ও নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশের সাফল্য ঈর্ষণীয়। নারী-পুরুষ সমতা প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষে বাংলাদেশ। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম প্রকাশিত বৈশ্বিক লিঙ্গ বিভাজন সূচক ২০২০ (গ্লোবাল জেন্ডার গ্যাপ ইনডেক্স) অনুযায়ী ১৫৩টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৫০তম এবং দক্ষিণ এশিয়ায় শীর্ষে।
এমন পরিস্থিতিতে বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের দেশেও আগামীকাল ৮ মার্চ উদযাপিত হবে আন্তর্জাতিক নারী দিবস-২০২৩। এ বছর দিবসের প্রতিপাদ্য ‘ডিজিটাল প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন জেন্ডার বৈষম্য করবে নিরসন’। দিবসটি উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।
নারী প্রগতি সংঘের নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবীর বলেন, এবারের আন্তর্জাতিক নারী দিবস থেকে প্রেরণা নিয়ে আমাদের দাবি হওয়া উচিত ডিজিটাল খাতে বর্তমান বিশ্বের অগ্রগতিকে নারী-পুরুষ বৈষম্য দূরীকরণের লক্ষ্যে কাজে লাগানো, যাতে নারীর সমান অধিকার প্রতিষ্ঠা ও যৌন সহিংসতা মোকাবিলায় প্রযুক্তি হয় গণতান্ত্রিক, মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি সহায়ক ও সৃজনশীল।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেন, দেশকে অগ্রসর করতে হলে উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে নারী-পুরুষের সমতা প্রতিষ্ঠা করতে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার থেকে অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারীকে পিছিয়ে রাখলে চলবে না। দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের মাধ্যমে এক্ষেত্রে সমতা আনয়ন করতে হবে। নারী ও কন্যার জন্য তথ্য প্রযুক্তিতে অভিগম্যতা বৃদ্ধি এবং প্রশিক্ষিত করে তুলতে হবে। এ ক্ষেত্রে নারীর জন্য বিনিয়োগের পরিকল্পনা থাকতে হবে। তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারের প্রসার ঘটানোর মাধ্যমে আজকে সুযোগ এসেছে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের দৃষ্টিভঙ্গী পরিবর্তনের। যার মাধ্যমে নারীর মানবাধিকার, মানবিক সত্তা, সৃজনশীলতা স্বীকৃত হবে ও প্রতিষ্ঠিত হবে।