শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

আওয়ামী লীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষ: পুলিশের মামলায় আসামি ২১৫

আপডেট : ০৯ মার্চ ২০২৩, ১৮:৪৫

লক্ষ্মীপুর চন্দ্রগঞ্জে আওয়ামী লীগের দু’পক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় ১৫ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ১৫০-২০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) সকালে চন্দ্রগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক মো. মহসীন বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

বুধবার রাতে সংঘর্ষের ঘটনায় আটক আওয়ামী লীগ নেতা সফিকুল ইসলাম খলিফা, জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি রিয়াজ হোসেন জয় ও ছাত্রলীগ নেতা এম সজীব ও আরাফাত হোসেন রিফাতকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এম মাসুদুর রহমান মাসুদকে। তার নেতৃত্বেই হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়।
  
অন্য আসামিরা হলেন আওয়ামী লীগ নেতা গিয়াস উদ্দিন লিটন, কাজী সুলেয়মান, খলিলুর রহমান, কামরুজ্জামান ওরফে নিজাম উদ্দিন, যুবলীগ নেতা আব্দুর রাজ্জাক রিংকু, ছাত্রলীগ নেতা হৃদয় পাটওয়ারী, অনিক রহমান, সুজন, রমজান ও পারভেজ। 

তাদের বিরুদ্ধে সংঘর্ষ চলাকালীন সময়ে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলার অভিযোগ আনা হয়। হামলায় জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের এসআই জাকির হোসেন ও চন্দ্রগঞ্জ থানার কনস্টেবল মো. মোজাম্মেল গুরুতর আহত হন।
  
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা চন্দ্রগঞ্জ থানার এসআই আব্দুর রহিম জানান, ৮ মার্চ রাতে আওয়ামী লীগের দু’পক্ষের সংঘর্ষের সময় পুলিশের পাঁচজন সদস্য আহত হন। যার পরিপ্রেক্ষিতে এজাহার নামীয় ১৫ জনসহ অজ্ঞাত ২০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। এ ঘটনায় ৪ জনকে ঘটনাস্থল থেকে আটকের পর দায়েরকৃত মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।

জানা গেছে, চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কমিটিকে কেন্দ্র করে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নেতারা নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এ ঘটনায় পুলিশসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। 
 
স্থানীয় লোকজন ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার রাতে ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আমিনের নেতৃত্বে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির নেতা-কর্মী ও তাদের দুই থেকে আড়াইশ অনুসারী চন্দ্রগঞ্জ পশ্চিম বাজারে আনন্দ মিছিল বের করে। মিছিল শেষ তারা আফজাল সড়কের মুখে জড়ো হয়ে বক্তব্য দেন। খবর পেয়ে আগের কমিটির সভাপতি গিয়াস উদ্দিন লিঠন ও সাধারণ সম্পাদক কাজী সলেয়মানের অনুসারী চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এম মাসুদ আলমের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আগের কমিটির অন্য অনুসারীরা দলবদ্ধ হয়। এ সময় আনন্দ মিছিলে থাকা লোকজনের সঙ্গে হামলায় জড়ায় তারা। 

সংঘর্ষে জড়িতরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। প্রায় আধাঘণ্টাব্যাপী ত্রিমুখী ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ চলে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এম মাসুদুর রহমান বলেন, আমার ভাই আকবর হোসেনকে মারধর করার ঘটনায় আমি প্রতিবাদ করি। এতে আমাদের ওপর ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আমিনের লোকজন হামলা চালায়। এনিয়ে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। আমরা পুলিশের ওপর হামলা করিনি।

চন্দ্রগঞ্জ থানার ওসি তৌহিদুল ইসলাম বলেন, মামলায় আটক ৪ জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

ইত্তেফাক/পিও