কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূল থাকায় করলার বাম্পার ফলন হয়েছে। স্থানীয় বাজারে করলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় রফতানি হওয়ায় ভালো দাম পেয়ে খুশি প্রান্তিক চাষিরা। অন্য বছরের ন্যায় এ বছরও করলার ব্যাপক চাহিদা থাকায় দূর-দূরান্তের ব্যবসায়ীরা করলা কিনে ট্রাকভর্তি করে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নিয়ে যাচ্ছে। এতে অধিক লাভবান হচ্ছে এ অঞ্চলের প্রান্তিক চাষিরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, স্থানীয় পাইকাররা প্রান্তিক কৃষকদের কাছে থেকে ২২০০ টাকা দরে করলা কিনে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা করলা ব্যবসায়ীদের কাছে ২৩০০ টাকা মন দরে বিক্রি করছেন। তাতে কৃষকরাও যেমন লাভবান হচ্ছে তেমনি লাভবান হচ্ছেন স্থানীয় পাইকাররাও।
স্থানীয় বিভিন্ন হাট-বাজারের চাহিদা মিটিয়ে প্রতিদিনই ১০০ থেকে ১২০ মন করলা ট্রাক বোঝাই করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ, জয়পুরহাট, নড়াইল, বগুড়াসহ দেশের জেলায় নিয়ে যাচ্ছেন সেখানকার করলা ব্যবসায়ীরা। বর্তমানে চাষিরা কেউ ঘরে বসে নেই। কেউ করলার ক্ষেত পরিচর্যার কাজ করছে, কেউবা ক্ষেতের করলা তুলছেন। আবার কেউ কেউ বিক্রির জন্য নিয়ে যাচ্ছেন ব্যবসায়ীদের কাছে। সব মিলিয়ে করলা চাষিরা ব্যস্ত সময় পাড় করছেন।
উপজেলার পূর্বচন্দ্রখানা এলাকার করলা চাষি আমিনুল ইসলাম ও ননি গোপাল রায় জানান, তারা কৃষি অফিসের সহযোগিতায় এ বছর প্রত্যেকেই ১ বিঘা জমিতে করলার চাষবাদ করেছেন। এবছর করলার বাম্পার ফলন ও দাম ভালো পাওয়ায় এই দুই চাষি খুবই খুশি। করলা চাষাবাদ করতে বিঘা প্রতি খরচ হয় ১৫ থেকে ১৮ হাজার টাকা। করলার বাম্পার ফলন ও দাম ভালো থাকায় প্রতি বিঘায় খরচ বাদে ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা আয় হবে বলে জানান তারা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিলুফা ইয়াছমিন জানান, চলতি মৌসুমে উপজেলার বিভিন্নস্থানে প্রায় ১০০ হেক্টর জমিতে উচ্ছে জাতের করলার চাষাবাদ হয়েছে। এ বছর করলার বাম্পার ফলন হয়েছে এবং কৃষকরা ভালো দামও পাচ্ছে। আমরা কৃষকদের মাঝে সার, বীজসহ বিভিন্ন ধরণে সহায়তা প্রদান করেছি। করলা চাষে উদ্বুদ্ধ করতে কৃষকদেরকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা থাকায় এ বছর যতেষ্ট সাফল্য অর্জিত হচ্ছে এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জ, জয়পুরহাট, নড়াইল ও বগুড়ার পাইকাররা এসে সরাসরি প্রান্তিক কৃষক ও স্থানীয় ক্ষুদে ব্যবসায়ীদের কাজে করলা ক্রয় করায় এ অঞ্চলের চাষিদের ভাগ্যের চাঁকা ঘুরছে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে করলা চাষিরা আরও লাভবান হবেন বলে আমার বিশ্বাস।