শনিবার, ১০ জুন ২০২৩, ২৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

ইন্দোনেশিয়ায় অগ্ন্যুৎপাত, ক্ষতিগ্রস্ত ৮ গ্রাম

আপডেট : ১২ মার্চ ২০২৩, ১০:০৫

বিশ্বের অন্যতম সক্রিয় আগ্নেয়গিরি ইন্দোনেশিয়ার মাউন্ট মেরাপিতে শনিবার (১১ মার্চ) অগ্ন্যুৎপাত শুরু হয়। এর গরম ধোঁয়া এবং ছাই কাছাকাছির গ্রামগুলোতে ছড়িয়ে পড়ছে? তবে এতে তাত্ক্ষণিকভাবে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি বলে দেশটির দুর্যোগ প্রশমন সংস্থা জানিয়েছে।

জানা গেছে, ইন্দোনেশিয়ার মেরাপি আগ্নেয়গিরিতে অগ্ন্যুৎপাত শুরু হয়েছে। শনিবার শুরু হওয়া এই অগ্ন্যুৎপাতের ফলে সেখান থেকে গরম ধোঁয়া ও ছাই বের হচ্ছে। যা এরই মধ্যে সাত কিলোমিটার দূর পর্যন্ত পৌঁছেছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আগ্নেয়গিরিটি ইন্দোনেশিয়ার জোগকর্তার বিশেষ অঞ্চলে অবস্থিত। শনিবার বেলা ১১টার দিকে এটিতে অগ্ন্যুৎপাত শুরু হয়। সেখান থেকে লাভা ছড়িয়ে পড়ে দেড় কিলোমিটার পর্যন্ত। এক বিবৃতিতে বিপজ্জনক এলাকায় বাসিন্দাদের কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে সতর্ক করা হয়েছে। কারণ আগ্নেয়গিরির গর্তের ৩ থেকে ৭ কিলোমিটার পর্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।

স্থানীয় আউটলেট কমপাস টিভিতে সম্প্রচারিত চিত্রগুলোতে ইন্দোনেশিয়ার সাংস্কৃতিক রাজধানী জোগকার্তার কাছে জাভা দ্বীপে অবস্থিত আগ্নেয়গিরির কাছাকাছি একটি গ্রামে ছাই-ঢাকা বাড়ি এবং রাস্তাঘাট দেখা যায়। সংস্থার মুখপাত্র আব্দুল মুহারি শনিবার এক বিবৃতিতে বলেন, মেরাপি আগ্নেয়গিরি মানমন্দির অনুমান করেছে যে ছাই মেঘ চূড়া থেকে ৩ হাজার মিটার (৯,৬০০ ফুট) ওপরে পৌঁছেছে। অগ্ন্যুৎপাতের পর কর্তৃপক্ষ ৭ কি.মি. দূর পর্যন্ত একটি নিরাপত্তা অঞ্চল স্থাপন করেছে। মাউন্ট মেরাপি অগ্ন্যুৎপাত থেকে সম্ভাব্য বিপদের পূর্বাভাসে জনসাধারণকে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় যে কোনো কার্যক্রম বন্ধ রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আগ্নেয়গিরিটি ২০২০ সাল থেকে নতুন করে সক্রিয় হওয়ার পর এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্তরের সতর্কতা।

মুহারি বলেন, আশপাশের বাসিন্দাদের ছাই থেকে এবং কাদাপ্রবাহের সম্ভাব্য বিপদ সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। বিশেষ করে যদি আগ্নেয়গিরির কাছাকাছি বৃষ্টি হয়। মেরাপির পর্যবেক্ষণ পোস্টের একজন কর্মকর্তা এক বিবৃতিতে বলেন, আগ্নেয়গিরির কাছাকাছি অন্তত আটটি গ্রাম আগ্নেয়গিরির ছাই দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মেরাপি হচ্ছে ইন্দোনেশিয়ার সবচেয়ে সক্রিয় আগ্নেয়গিরিগুলোর মধ্যে একটি। এটির উচ্চতা দুই হাজার ৯৬৩ মিটার। প্যাসিফিক রিং অব ফায়ারে মেরাপির অবস্থান। অন্য যে কোনো দেশের তুলনায় ইন্দোনেশিয়ায় আগ্নেয়গিরির সংখ্যা বেশি। এটিতে সবশেষ অগ্ন্যুৎপাত হয়েছিল ২০১০ সালে। যাতে ৩৫০ জনের বেশি মানুষ মারা যায়।

২০২১ সালের ডিসেম্বরে ইন্দোনেশিয়ার পূর্ব জাভা প্রদেশে মাউন্ট সেমেরুতে ভয়াবহ অগ্ন্যুৎপাত হয়। যাতে প্রায় ৬০ জন নিহত হয়। আগ্নেয়গিরিটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩ হাজার ৬৭৬ মিটার ওপরে অবস্থিত। মাউন্ট সেমেরু ইন্দোনেশিয়ার প্রায় ১৩০টি সক্রিয় আগ্নেয়গিরির মধ্যে একটি। ২০১০ সালে আগ্নেয়গিরির শেষ বড় অগ্ন্যুৎপাতে ৩০০ জনেরও বেশি লোক মারা যায় এবং কর্তৃপক্ষ প্রায় ২ লাখ ৮০ হাজার বাসিন্দাকে সরিয়ে নিতে বাধ্য হয়।

ইন্দোনেশিয়ায় প্রায় ১৩০টি সক্রিয় আগ্নেয়গিরি রয়েছে। প্রশান্ত মহাসাগরীয় ‘রিং অব ফায়ার’-এ অবস্থিত যেখানে মহাদেশীয় প্লেটগুলোর মিলন উচ্চ আগ্নেয়গিরি এবং ভূমিকম্পের মতো কার্যকলাপ ঘটার অন্যতম কারণ।

 

ইত্তেফাক/এসজেড