নতুন পারমাণবিক সাবমেরিন তৈরি করতে যাচ্ছে তিনটি দেশ। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়া অকাস চুক্তির আওতায় আধুনিক ও পরবর্তী প্রজন্মের প্রযুক্তিতে এসব সাবমেরিন নির্মাণ করবে। বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশগুলো অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে নতুন সামরিক বহর তৈরিতে একসঙ্গে কাজ করবে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক এবং অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ সোমবার (১৩ মার্চ) ক্যালিফোর্নিয়ার সান ডিয়েগো নৌ ঘাঁটিতে একটি যৌথ বিবৃতিতে চুক্তি সম্পর্কে বিস্তারিত জানান।
চুক্তি অনুসারে, দেশগুলো যুক্তরাজ্যের বিখ্যাত গাড়ি নির্মাতা রোলস-রয়েসের তৈরি চুল্লিসহ অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে একটি নতুন সামরিক বহর তৈরিতে একসঙ্গে কাজ করবে। রয়্যাল অস্ট্রেলিয়ান নেভি (আরএএন) এর সদস্যরা যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের সাবমেরিন ঘাঁটিতে সাবমেরিন কৌশল শেখানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের মধ্য দিয়ে যাবে।
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য ২০২৭ সাল থেকে অস্ট্রেলিয়ার পার্থ সাবমেরিন ঘাঁটি ব্যবহার করবে। বিশ্লেষকরা বলছেন, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে চীনের প্রভাব ঠেকাতে এই চুক্তি করা হয়েছে।
২০২১ সালে তিনটি দেশ অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র (এইউকেইউএস বা অকাস) সামরিক শক্তি ও নিরাপত্তা আরও বাড়ানোর চুক্তি ঘোষণা করেছে। চুক্তিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও হাইপারসনিক মিসাইলসহ উন্নত প্রযুক্তি অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
চীন শুরু থেকেই এই চুক্তির নিন্দা করে আসছে। চীন দাবি করেছে, এটি অপ্রসারণ চুক্তির (এনপিটি) স্পষ্ট লঙ্ঘন। বেইজিংয়ের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং এক বিবৃতিতে জানান, এটি অস্ত্র প্রতিযোগিতার ঝুঁকি তৈরি করেছে এবং এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতাকে ক্ষুণ্ণ করেছে।
অন্যদিকে বাইডেন জানিয়েছেন, চুক্তিটি পারমাণবিক অস্ত্র মুক্ত রাষ্ট্র হিসেবে অস্ট্রেলিয়ার মর্যাদাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে না। অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ জানিয়েছেন, এ প্রকল্প কয়েক হাজার নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে। এটিকে দেশের প্রতিরক্ষা ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ বলে অভিহিত করেছেন তিনি।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী সুনাক জানিয়েছেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার অবৈধ আগ্রাসন, চীনের ক্রমবর্ধমান দৃঢ়তা, ইরান ও উত্তর কোরিয়ার অস্থিতিশীল আচরণ সবই বিশ্বের জন্য বিপদ, বিশৃঙ্খলা ও বিভাজন এবং হুমকি।