বৃহস্পতিবার, ২৩ মার্চ ২০২৩, ৯ চৈত্র ১৪২৯
দৈনিক ইত্তেফাক

নদী রক্ষায় চাই কঠোর পদক্ষেপ 

আপডেট : ১৫ মার্চ ২০২৩, ০১:০২

নদী রক্ষায় এখনি যথাযথ পদক্ষেপ না নিলে দেশের নদীগুলো বিলীন হয়ে যাবে। নদী রক্ষায় অনেক আইন আছে, কিন্তু তা বাস্তবায়নের ঘাটতি রয়েছে। নদীকৃত্য দিবসের অর্থ হচ্ছে নদীর জন্য কিছু করা। নদীকে বাঁচানো মানে নিজেকে বাঁচানো। নদীমাতৃক এই দেশের নদীকে টিকিয়ে রাখা হচ্ছে নিজেদের টিকিয়ে থাকার পূর্বশর্ত বলে জানান বক্তারা।

গতকাল মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল আন্তর্জাতিক নদীকৃত্য দিবস-২০২৩ উদযাপন উপলক্ষ্যে ‘জীবন্ত সত্তা হিসেবে নদীর অধিকার নিশ্চিত করার দাবিতে’ আয়োজিত শোভাযাত্রা ও বুড়িগঙ্গায় অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তারা এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)সহ বিআইডব্লিউটিএ, বুড়িগঙ্গা বাঁচাও আন্দোলন, গ্রীন ভয়েস, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সম্মিলিতভাবে এই কর্মসূচির আয়োজন করে। 

উদ্বোধনী বক্তব্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আব্দুল কাদের বলেন, দেশের নদী রক্ষায় এখনি যথাযথ পদক্ষেপ না নিলে দেশের নদীগুলো বিলীন হয়ে যাবে। দেশে নদী রক্ষার অনেক আইন আছে, কিন্তু তা বাস্তবায়নের ঘাটতি রয়েছে। 

সভাপতির বক্তব্যে বাপার যুগ্ম সম্পাদক মিহির বিশ্বাস বলেন, যারা নদীগুলোকে দখল ও দূষণের মাধ্যমে গ্রাস করছে, তাদের আইনের আওতায় এনে বিচার করতে হবে। আগে নদী তার পরে নগরায়ণ। বাপার সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল বলেন, বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, বালু, শীতলক্ষ্যা ও ধলেশ্বরী নদী ও এর সঙ্গে সম্পৃক্ত খাল, প্লাবন অঞ্চল ও জলাশয় বেপরোয়াভাবে ভরাট করে আবাসন প্রকল্প গড়ে উঠেছে। 

সর্বোচ্চ আদালত নদী কমিশন ও নদী কমিশন আইনকে শক্তিশালী করা, দূষণকারী শিল্পে ঋণ না দেওয়াসহ অনেক মূল্যবান পরামর্শ দিয়েছে। কিন্তু বাস্তবে সব উলটো চিত্র দেখা যায়। তিনি বলেন, নদী কখনো মরে না, একে মেরে ফেলা হয়। আর নদী মারা গেলে সবচেয়ে কষ্টে থাকে গরিব ও নিম্ন আয়ের মানুষ। তিনি নদী পাড়ের মানুষদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে নদী রক্ষায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

বাপা নদী ও জলাশয় কর্মসূচি কমিটির সদস্য সচিব ড. হালিম দাদ খান বলেন, জীবন্ত সত্তা হিসেবে নদীর অধিকার নিশ্চিত করার জন্য সরকারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। তিনি দেশের নদীগুলোকে বাঁচানোর জন্য নদীর পাড়ের মানুষদের স্থানীয় নদীর পাড়ে আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান। বুড়িগঙ্গাসহ ঢাকার চার পাশের নদী এবং দেশের সব নদ-নদীর দখল দূষণ বন্ধ করার দাবি জানান। দিবসটি উদযাপন উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) আঞ্চলিক শাখার উদ্যোগে বগুড়া, চাটমোহর, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, ভালুকা, মোংলা, হবিগঞ্জ ও মহেশখালীতে ভিন্ন ভিন্ন ইস্যুতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হয়। বাপার যুগ্ম সম্পাদক মিহির বিশ্বাসের সভাপতিত্বে এবং যুগ্ম সম্পাদক আলমগীর কবিরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আব্দুল কাদের। 

এতে বক্তব্য রাখেন বাপা নির্বাহী সদস্য ইবনুল সাঈদ রানা, আব্দুল করিম কিম, সচেতন নাগরিক সমাজের সভাপতি জাহাঙ্গীর আদেল, বিআইডব্লিউটিএর সুপারভাইজার সেলিম হোসেন, বাপা সদস্য হাজি আনছার আলী এবং গ্রীন ভয়েস জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সভাপতি আতকিয়া জাহানসহ অংশগ্রহণকারী সংগঠনের প্রতিনিধিরা।

 

ইত্তেফাক/ইআ