শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

উৎপাদনে প্রভাব পড়ছে

চা-বাগান থেকে বিলীন হচ্ছে ছায়াবৃক্ষ

আপডেট : ১৮ মার্চ ২০২৩, ০৩:৩০

মৌলভীবাজারের বিভিন্ন চা-বাগান থেকে বিলীন হচ্ছে শেডট্রি বা ছায়াবৃক্ষ। চা-বাগানের টিলাভূমিতে মূল্যবান গাছগাছালি অতিবৃষ্টি ও প্রখর রোদের কবল থেকে চা-গাছকে রক্ষা করে। এজন্য চায়ের টিলাগুলো বৃক্ষরাজিতে ভরপুর থাকে। অন্যদিকে বিশাল চায়ের টিলায় গাছগুলো মাটির ক্ষয়রোধ ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে। তবে দীর্ঘ সময় ধরেই একটি মহল চা-বাগানের সেকশন থেকে রাতের আঁধারে গাছ কেটে পাচার করছে। পুলিশের কাছে বাগান কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করলেও এই গাছ কাটা বন্ধ হচ্ছে না। শেডট্রি উজাড় হওয়ায় চায়ের উৎপাদনে প্রভাব পড়ছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগরের ফাঁড়ি দেওছড়া, ডবলছড়া, কানিহাটি, আলীনগর চা-বাগান, কুলাউড়া উপজেলার চাতলাপুর চা-বাগানসহ বিভিন্ন চা-বাগানে পুরোনো ও বৃহদাকার বৃক্ষরাজিতে ভরপুর। কড়ই, আকাশিয়াসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছগাছালিতে টিলাভূমি পরিপূর্ণ। এই গাছগুলো চা-গাছের ছায়ার জোগান দেয়। তবে একটি সিন্ডিকেট চক্র প্রতিনিয়ত চা-বাগানের গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছে। চা-বাগানের পার্শ্ববর্তী হাটবাজারে অসংখ্য স-মিলে নিয়ে এই গাছগুলো চিড়ানো হয়। সম্প্রতি দেওছড়া চা-বাগানের বিভিন্ন সেকশন থেকে ছায়াবৃক্ষ চুরিরও অভিযোগ রয়েছে। মূল্যবান গাছগুলো চুরি হওয়ায় চায়ের জন্য ক্ষতির কারণ বলে সংশ্লিষ্টদের দাবি। প্রতিনিয়ত রাতের আঁধারে গাছ চুরির অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে।

চা-শ্রমিকদের অভিযোগে জানা যায়, গাছ চোর চক্র অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে রাতের আঁধারে হরদম গাছ চুরি করে নিয়ে যায়। চা-বাগানের কতিপয় কর্মকর্তা, কর্মচারী ও পাহারাদারদেরও এসব ঘটনার সঙ্গে যোগসূত্র রয়েছে বলে তাদের ধারণা। বাগানের মূল্যবান ও পুরাতন ছায়াবৃক্ষ হিসেবে আকাশি ও রেনট্র্রি গাছ রয়েছে। এই গাছগুলো কেটে খণ্ড করে স-মিলসহ বিভিন্ন স্থানে পাচার করা হয়। পঞ্চায়েত নেতারা জানান, বাগান থেকে গাছগাছালি ও কাঁচা চা-পাতা চুরি হচ্ছে। গাছ চুরি হয়ে যাওয়ায় টিলাগুলো বৃক্ষশূন্য হয়ে পড়ছে। এজন্য চা-গাছেও ছায়া থাকবে না। ফলে বাগানের ও শ্রমিকদের বড় ধরনের ক্ষতি হবে। এসব বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য আমরা ম্যানেজমেন্টকেও বলেছি। শমশেরনগর কানিহাটি চা-বাগানের শ্রমিক নেতা সীতারাম বীন বলেন, দেওছড়া, শমশেরনগর, কানিহাটি, বাঘিছড়া এসব বাগান থেকে দীর্ঘদিন ধরে মূল্যবান গাছ চুরি হচ্ছে।

এ ব্যাপারে শমশেরনগর চা-বাগানের ম্যানেজার জাকির হোসেন বলেন, চা-বাগান থেকে দীর্ঘ সময় ধরেই গাছ চুরির ঘটনা ঘটছে। বাগানের চারপাশে যেসব বস্তি রয়েছে সেসব বস্তির গাছচোরেরা মাঝে-মধ্যে চুরি করে। তবে গাছ চুরি বিষয়ে থানা পুলিশকে অবগত করা হচ্ছে এবং বাগানে চকিদার ও পঞ্চায়েত নেতাদের নিয়ে ঘনঘন বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। তারপরও গাছ চুরি ঠেকানো যাচ্ছে না। শমশেরনগর ফাঁড়ির ইনচার্জ (ওসি) শামীম আকনজি বলেন, এটি গুরুত্বসহকারে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ইত্তেফাক/এমএএম