বুধবার, ২৯ মার্চ ২০২৩, ১৫ চৈত্র ১৪২৯
দৈনিক ইত্তেফাক

শাড়ির ভাঁজে এক টুকরো বাংলাদেশ 

আপডেট : ১৯ মার্চ ২০২৩, ১৮:০৫

শাড়ির আঁচল জুড়ে সেন্টমার্টিনের সমুদ্র সৈকত। দেখে মনে হবে সমুদ্রের ঢেউ ছড়িয়ে পরেছে কোনো রাজকুমারীর শরীরে। আর তার সঙ্গে আশেপাশের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য। একটি শাড়ি তুলে ধরছে দেশের এক দর্শনীয় স্থানকে। শুধু সেন্টমার্টিন নয় কিংবা দর্শনীয় স্থানগুলো নয়, বাংলাদেশের প্রকৃতিও তারা তুলে ধরেন পোশাকের ভাঁজে ভাঁজে। বলছিলাম পোশাকের অনলাইন পেজ 'গুটিপোকা'র কথা।  

আফসানার সুমীর হাত ধরে ২০১৪ সালে যাত্রা শুরু হয় গুটিপোকার। পুরোপুরি অনলাইন নির্ভর প্রতিষ্ঠান গুটিপোকা। শুরুতে ব্লকের কাজ দিয়ে শুরু হলেও এরপর হ্যান্ডপেন্টিং নিয়ে কাজ শুরু করে তারা। প্রত্যেকটি পোশাক এবং ডিজাইন নিজেদের করা৷ 

পোশাকে তারা বাংলাদেশের প্রকৃতিকে তুলে ধরার চেষ্টা করেন। কখনও ফুল, কখনও পাখি, হ্যান্ড পেইন্টিং এর মাধ্যমে ছড়িয়ে দিতে চান তারা।  তাদের বসন্ত নামক শাড়িটিতে ১০ রকমের দেশি ফুল ও ২০ ধরনের পাখির ছবি তুলে ধরেছেন।  বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ভিন্নধর্মী থিমে হলেও নিয়মিত কাজ করেন নয়নতারা, কৃষ্ণচূড়া, পপি সহ বিভিন্ন ফুলের ওপর। 

তাদের সবচেয়ে জনপ্রিয় 'সেন্টমার্টিন' থিমের শাড়িটি। সেন্টমার্টিনের গাংচিল, সি বিচ,  সাগর সব মন কেড়েছে শাড়ি প্রেমীদের। আবার যখন বর্ষা ঋতুকে তুলে ধরতে শাড়ি তৈরি করেছেন সেখানে তুলে ধরেছেন কদমফুল, বিদ্যুৎ চমকানো বা ময়ূরের দৃশ্য।  এমনকি গায়ে হলুদ ও বিয়ের পোশাকেও তারা ভিন্নধর্মী পেইন্ট করেন৷ 

স্বাধীনতা দিবসকে ঘিরেও তারা চেষ্টাও করেন বাংলাদেশকে তুলে ধরার।  আসছে স্বাধীনতা দিবসে তারা বাংলাদেশের জাতীয় ফুল শাপলা, জাতীয় বন সুন্দরবনের খুঁটিনাটি তুলে ধরে তৈরি করবেন শাড়ি। প্রতিবছরের ন্যায় এবারও এমন পরিকল্পনা তাদের।  পহেলা বৈশাখকে ঘিরে লাল-সাদার ছোঁয়ায় পোশাক তৈরিতে ভোলেন না কখনই। বরং শিমুল, পলাশ ফুলের পেইন্টিংএ আরও রঙিন করার চেষ্টা করেন পোশাক। 

২০১৪ সালের জানুয়ারিতে যখন গুটিপোকার যাত্রা শুরু হয়৷ তখন মানুষ খুব একটা অনলাইন কেনাকাটায় অভ্যস্ত নয়।  পরিচিতদের বাইরে একটি পোশাক বিক্রি করতে গুটিপোকার সময় লেগেছিল প্রায় ৬ মাস৷ তবে এরপর আর খুব একটা পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি গুটিপোকাকে। পুরোপুরি অনলাইন নির্ভর হলেও বেশ ভালোই সাড়া পাচ্ছেন ক্রেতাদের।  

গুটিপোকার ভবিষ্যত পরিকল্পনা নিয়ে এর কর্ণধার আফসানা সুমী বলেন, 'বাংলাদেশকে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার  জন্য হয়তো একটা বই দেবে যে এখানে সব ফুলের পরিচয় জানতে পারবে, সব ফলের পরিচয় জানতে পারবে, বিভিন্ন জায়গার পরিচয় জানতে পারবে। তবে আমি চাই আমরা আমাদের শাড়িগুলোতে ধীরে ধীরে বাংলাদেশের বিভিন্ন থিম তুলে ধরবো। যাতে করে একসময় কেউ যদি বাংলাদেশ সম্পর্কে জানতে চায়, আমরা বলবো বাংলাদেশ সম্পর্কে জানতে চান, তবে গুটিপোকার শাড়িগুলো দেখুন!'

ইত্তেফাক/এআই

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন