শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

দুই বছরেও চালু হয়নি সেচ প্রকল্প, হতাশ কৃষক

আপডেট : ২২ মার্চ ২০২৩, ২২:১১

মানিকগঞ্জের ঘিওরে দুই বছরেও চালু হয়নি বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) নির্মিত সেচ পাম্প। এতে এই পাম্প কৃষকদের উন্নয়নে কোনো কাজে আসছে না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। সেচ পাম্প প্রকল্পের পরিচালনা কমিটির সমন্বয়ের অভাব ও কর্মকর্তাদের উদাসীনতায় সেচ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন স্থানীয় কৃষক।

জানা গেছে, উপজেলার সদর ইউনিয়নের চর ঘিওর এলাকায় ২০২১-২২ অর্থবছরে বৃহত্তর ঢাকা জেলা সেচ প্রকল্পের আওতায় বিএডিসি একটি ‘সোলার প্যানেল সেচ পাম্প’ স্থাপন করে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে খরচ ছাড়াই কৃষকদের সেচ সুবিধা পাওয়ার কথা। স্থানীয় কৃষকদের সমন্বয়ে সমিতির মাধ্যমে পাম্প পরিচালনার জন্য স্কিম ম্যানেজার ও কেয়ারটেকারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু ২ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো চালু হয়নি কৃষকদের জন্য স্থাপন করা সেচ পাম্পটি। ফলে কাজে আসছে না ওই এলাকার কৃষকদের উন্নয়নে এ প্রকল্প।

সরেজমিনে প্রকল্প এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কৃষকের জমির পাশে বিএডিসি লোগো সম্বলিত একটি করে প্লাস্টিকের পাইপ দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। যা থেকে কৃষকরা কোনো সেচ সুবিধা পাচ্ছেন না। বাধ্য হয়ে কৃষক বিদ্যুৎ ও ডিজেল চালিত স্যালো মেশিন দিয়ে বোরো চাষ করছেন।

স্থানীয় কৃষক অভিযোগ করে বলেন, কৃষকদের খুব কম মূল্যে সেচ সুবিধা দেওয়া হবে এমন প্রলোভন দেখিয়ে বিএডিসির লোকজন তাদের ইচ্ছা মতো সেচ পাইপ স্থাপন করে গেছে। গত দুই মৌসুমে তাদের কোনো দেখা পাওয়া যায়নি। কৃষকদের উন্নয়ন প্রকল্পের নামে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে রেখেছেন বিএডিসি।

কৃষক আব্দুল মান্নান বলেন, বিদ্যুৎ চালিত মোটর দিয়ে জমির বোরো ধানে পানি দিচ্ছি। তেল এবং বিদ্যুতের দাম বেশি হওয়ার পরও বাধ্য হয়ে সেচ দিচ্ছি।

কৃষক দেলোয়ার হোসেন বলেন, প্রতি বিঘায় এক হাজার টাকা হারে সেচ খরচ নেওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু চালু না হওয়ায়, বাড়তি খরচে বিদ্যুৎ চালিত সেচ দিয়ে বোরো আবাদ করেছেন। সোলার পাম্পটি চালু থাকলে তিন ফসলসহ রবিশস্য আবাদ করা সম্ভব।

পাম্পের কেয়ারটেকার দুলাল শিকদার বলেন, দুই বছর যাবত এ প্রকল্পের দেখাশোনার দায়িত্ব পালন করছি। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোনো বেতন পাইনি। পাম্পটি চালু না হওয়ায় কৃষক আমাদের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলছে। 

পাম্প পরিচালনার জন্য দায়িত্বে থাকা স্কিম ম্যানেজার ও সমিতির কোষাধ্যক্ষ রুহুল খান বলেন, পাম্পটি চালু করার জন্য কৃষকদের সঙ্গে কয়েকবার আলোচনা করেছি। পাম্প পরিচালনার জন্য শ্রমিকও রেখেছি। এটা বিএডিসি কর্মকর্তাদের গাফলতি ও যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ৩ দফা চেষ্টা করেও পাম্প চালু করা সম্ভব হয়নি।

জেলা বিএডিসির (সেচ বিভাগ) সহকারী প্রকৌশলী তিতাস বলেন, ৩ মাস যাবত পাম্প পরিচালনার দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের চালানোর জন্য তাগিদ দিয়েছি। এখন যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে চালু হচ্ছে না। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে। আগামী সপ্তাহে মেরামত করে পাম্পটি চালু করার কথা রয়েছে। 

ঘিওর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হামিদুর রহমান বলেন, সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ করে পাম্পটি চালু করার ব্যবস্থা করা হবে।

ইত্তেফাক/এবি/পিও