মঙ্গলবার, ৩০ মে ২০২৩, ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

ডিসির বদলির খবরে অশ্রুসিক্ত মাদারীপুরবাসী

আপডেট : ২৫ মার্চ ২০২৩, ১১:০২

মাদারীপুরের বিদায়ী জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন ২ বছর ৯ মাস সরকারি দায়িত্ব পালন করতে এসে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের মন জয় করে গেলেন। তার বদলির খবর শুনে অনেকেই অশ্রু সংবরণ করতে পারেননি। বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) ড. রহিমা খাতুনের বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠান শেষে তিনিও ছিলেন অশ্রুসিক্ত। 

মাদারীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ঝোটন চন্দ্র বলেন, ‘জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন যোগদান করেই তার মেধা ও কর্মদক্ষতা দিয়ে অল্প সময়ের মধ্যে মাদারীপুরবাসীর হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছিলেন। যখনি কোথাও কোনও সংকট দেখেছেন তিনি ছুটে গেছেন। পাশে দাঁড়িয়েছেন সবার বিপদ-আপদে।’

প্রশাসনের কর্তা-ব্যক্তি ছাড়াও মাদারীপুরের সাধারণ মানুষদেরও আস্থার যায়গা ছিল ড. রহিমা খাতুন। শিবচরের এক ভ্যানচালক বলেন, ‘ডিসি সাহেব মাদারীপুরে যোগদান করে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরগুলোতে ঘুষ দুর্নীতি মুক্ত করতে পেরেছিলেন।’ 

ড. রহিমা খাতুন।

স্থানীয় এক সংবাদকর্মী বলেন, ‘এমন মানবিক গুণসম্পন্ন ডিসির কথা ভোলা যায় না। তার সততা, কর্মনিষ্ঠা, মানবিকতায় আমি মুগ্ধ। তার মত ডিসি যদি প্রতিটি জেলায় থাকতো তাহলে মানুষ অতি সহজে সেবা পেত।’

বিদায়ী জেলা প্রশাসক ও বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ড. রহিমা খাতুন বলেন, ‘মাদারীপুর জেলায় যে কাজ করেছি তা সবই সম্ভব হয়েছে এলাকার মানুষ ও সহকর্মীদের সহায়তায়।’ 

তিনি জানান, বিভাগীয় কমিশনারের দিক নির্দেশনা তাকে উদ্দীপ্ত করেছে। তিনি বিভাগীয় কমিশনারের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানান। 

তিনি বলেন, ‘যে কাজটি করেছি আন্তরিকতা ও বিশ্বস্ততার সাথে করার চেষ্টা করেছি। বদলি তো চাকরিরই অংশ। তবে মাদারীপুরবাসীর মন জয় করতে পেরেছি এটাই বড় পাওয়া।’

২০২০ সালের ৭ জুলাই ড. রহিমা খাতুন জেলা প্রশাসক হিসাবে মাদারীপুরে যোগদান করেন। যোগদানের পর রহিমা খাতুন অন্যায়-অনিয়ম ও ঘুষ-দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ায় একের পর এক প্রশংসিত হয়েছেন। তারই বাস্তব উদাহরণ মাদারীপুর ভূমি অধিগ্রহণ (এলএ) শাখা। বিগত ডিসিদের সময়ে মানুষের মুখে এলএ শাখা সম্পর্কে ছিল নানান অভিযোগ। 

যোগদানের কিছুদিন পর তিনি জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও উপজেলার ইউএনওসহ একাধিক কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠকের পর বৈঠক করেন এবং ঘুষ-দূর্ণীতি বন্ধে তৎপর হন- যা অন্তত ফলপ্রসু হয়।   

এছাড়া ড. রহিমা খাতুনসহ জেলা প্রশাসকের কর্মকর্তারা পদ্মা সেতু নদী শাসনে ভূমি অধিগ্রহণের সরকারের প্রায় ৪৬০ কোটি টাকা রক্ষা ও ভূমি অধিগ্রহণ নিয়ে অনিয়ম প্রতিহত করেন। তারই স্বীকৃতস্বরূপ ‘বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক’ পান জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন ও তার দল।

ইত্তেফাক/এসজেড