চীনের মধ্যস্থতায় স্বাক্ষরিত দ্বিপাক্ষিক চুক্তি বাস্তবায়নে রমজান মাসের মাঝামাঝি বৈঠকে বসতে সম্মত হয়েছেন ইরান ও সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। কাতার ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান ও ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আবদুল্লাহিয়ান এক সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয় ফোনালাপে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন।
সৌদি আরবের আনুষ্ঠানিক সংবাদ মাধ্যম সৌদি প্রেস এজেন্সি (এসপিএ) জানিয়েছে, ফোনালাপে দুই দেশের মন্ত্রীরা চীনে স্বাক্ষরিত চুক্তির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। ২ মন্ত্রী চলমান রমজান মাসে একটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক আয়োজন করতে সম্মত হয়েছেন।
তবে কোথায় ও কখন এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়নি। উল্লেখ্য, এপ্রিলের তৃতীয় সপ্তাহে রমজান মাস শেষ হবে। সৌদি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ৭ বছর আগে বিচ্ছিন্ন সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের পরবর্তী পদক্ষেপ এই বৈঠক।
২০১৬ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে দুই দেশ তাদের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে। সৌদি সরকার রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে শিয়া ধর্মীয় নেতা নিমর আল-নিমরের শিরশ্ছেদ করেছে, যার ফলে ইরানে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়েছে।
বিক্ষোভকারীরা তেহরানে সৌদি দূতাবাসে আগুন ধরিয়ে দিলে দুই দেশের সম্পর্কের অবনতি ঘটে। বিশ্লেষকরা আশা করছেন, শিয়া অধ্যুষিত ইরান ও সুন্নি মুসলিম প্রধান সৌদি আরব স্বাক্ষরিত চুক্তির ফলে দুই মাসের মধ্যে একে অপরের ভূখণ্ডে দূতাবাস খুলবে।
এর মাধ্যমে ২০ বছরেরও বেশি সময় আগে স্বাক্ষরিত অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা সহযোগিতা চুক্তি বাস্তবায়ন করবে। গত ১৯ মার্চ ইরানের এক কর্মকর্তা জানান, ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি সৌদি আরবের বাদশাহ সালমানের কাছ থেকে দেশটি সফরের আমন্ত্রণ পেয়েছেন।
তবে রিয়াদ এখনো বিষয়টি নিশ্চিত করেনি। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, দুই দেশ তাদের শীর্ষ কূটনীতিকদের মধ্যে একটি বৈঠক করতে সম্মত হয়েছে এবং বৈঠকের জন্য তিনটি সম্ভাব্য স্থান প্রস্তাব করা হয়েছে।
তবে এসব স্থানের নাম উল্লেখ করেননি তিনি। বিশ্লেষকদের মতে, ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যে সুসম্পর্ক সমগ্র মধ্যপ্রাচ্যের ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বড় ও ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারে।