ফরিদপুরের মধুখালীতে শ্রেণিকক্ষে বাবা-ছেলেকে নির্যাতনের ঘটনায় আরও ৪ জন গ্রেপ্তার হয়েছে। রোববার (২৬ মার্চ) বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় মোট ৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এদিকে পুলিশ জানিয়েছে ধর্ষণের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও সাজানো। স্কুলের সহকারী শিক্ষিকা ইশরাত জাহান লিপি এ ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী। সন্তান দত্তক না পেয়ে ধর্ষণের নাটক সাজানো হয়। তিনিই ওই শিশুকে বাবা ও ভাইয়ের বিরুদ্ধে মিথ্যা বলতে শিখিয়েছেন। সোমবার (২৭ মার্চ) বেলা দেড়টার দিকে পুলিশ সুপার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন ফরমান মোল্যা (২১), সজীব মোল্যা (২২), জুবায়ের শেখ (২০), হাসিব ভূইয়া (২০)
পুলিশ জানায়, উপজেলার সালামতপুর গ্রামের ইয়ামিন মৃধা তার দুই ছেলে রাজন মৃধা (১৫) স্বজন মৃধা (১২) ও মেয়ে ইভাকে (৮) নিয়ে মাঝকান্দি এলাকায় আ. সালামের বাড়িতে ভাড়া থাকেন। ইয়ামিন মৃধার স্ত্রী না থাকায় আড়িয়াকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ইশরাত জাহান লিপি ইভাকে লালন পালনের ইচ্ছাপোষণ করেন। লিপি ইভাকে দত্তক নেওয়ার জন্য কয়েকবার প্রস্তাব দিলেও ইয়ামিন মৃধা রাজি হয়নি।
পুলিশ আরও জানায়, গত ১৪ মার্চ ওই শিক্ষিকা ইভাকে বাসায় নিয়ে যান। ইয়ামিন ও তার ছেলে রাজন ১৭ মার্চ ইভাকে আনার জন্য বিদ্যালয়ে গেলে কিছু যুবক ও রুপা নামের এক তরুণী দু’জনকে শ্রেণিকক্ষে আটকে রেখে বেধড়ক মারধর করে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ইয়ামিন মৃধা গত ২০ মার্চ মধুখালী থানায় নির্যাতনের অভিযোগে ৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৮-৯ জনের নামে মামলা করে।
এদিকে আড়িয়াকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষক এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত কিনা তা জানতে উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিন মিয়াকে আহবায়ক করে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। কমিটির অপর ২ সদস্য হলেন সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা নাসিমা আক্তার ও কানিজ ফাতেমা।
তাদেরকে আগামী ৭ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হছে। তদন্ত কমিটি আগামী ২৯ মার্চ বিদ্যালয়ের সব শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্য এবং নির্যাতনের শিকার ইয়ামিন মৃধা ও ছেলে রাজন মৃধাকে হাজির হতে নির্দেশ দিয়েছেন।
গত ১৭ মার্চ ফরিদপুরের মধুখালীর আড়িয়াকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণি কক্ষে বাবা-ছেলেকে নির্যাতনের একটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়। সেখানে ইয়ামিন মৃধা ও তার ছেলের বিরুদ্ধে মেয়েকে ধর্ষণের ভুয়া অভিযোগে কয়েকজন যুবক ও রুপা নামের এক তরুণী বেধড়ক পেটায়।