বাংলাদেশ রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলে প্রতি বছর যাত্রীর চাপ বাড়ছে ২০ শতাংশ হারে। ক্রমবর্ধমান এই যাত্রীর চাপ সামলাতে রেল পূর্বাঞ্চলে গত ৮ বছরেও চালু করা সম্ভব হয়নি নতুন ট্রেন। রেল পূর্বাঞ্চলের কর্মকর্তারা বলেন, পর্যাপ্ত জনবল, অভিজ্ঞ চালক এবং যথেষ্ট পরিমাণে লোকোমোটিভ ইঞ্জিনের জোগান ছাড়া এক বা একাধিক নতুন ট্রেন পূর্বাঞ্চলের চট্টগ্রাম-ঢাকাসহ সংশ্লিষ্ট রুটগুলোতে চালু করা সম্ভব নয়। আপাতত পূর্বাঞ্চলে যেসব ট্রেন চলছে, সেগুলোর প্রতিটিতে যাত্রীদের জন্য কোচ সংখ্যা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। ফলে ১২/১৩টি কোচ নিয়ে যে ট্রেনটি চলছে, সেটি চলাচল করবে ১৮টি কোচ নিয়ে। এতে বাংলাদেশ রেলওয়ের যাত্রী পরিবহনের সক্ষমতা উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাড়বে বলে কর্মকর্তারা আশা করছেন। তারা জানান, কোরিয়া থেকে কেনা যাত্রীবাহী রেলের কোচসমূহ ইতিমধ্যে দেশে আসতে শুরু করেছে।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন ইত্তেফাককে বলেন, ‘রেল পূর্বাঞ্চলের রুটগুলোতে প্রতি বছর ২০ শতাংশ হারে যাত্রীসংখ্যা বাড়ছে। ট্রেন, সংকট, কোচ সংকটসহ নানা প্রতিকূলতায় আমরা যাত্রীদের নানাভাবে পরিবহন সুবিধা দেওয়ার আন্তরিক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এতে বাংলাদেশ রেলওয়ের সুনাম বৃদ্ধির পাশাপাশি রেলের মাধ্যমে ভ্রমণে যাত্রীরা ব্যাপকভাবে আকৃষ্ট হচ্ছেন। অনেকে ট্রেনসংখ্যা বাড়ানোর কথা বলছেন। তবে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা রেল পরিবহন মন্ত্রণালয়ের। বিষয়টি পরিকল্পনাধীন আছে বলা যায়। কোরিয়া থেকে নতুন যাত্রীবাহী কোচ আসছে। কিন্তু নতুন ট্রেন চালু করার মতো নতুন ইঞ্জিন নেই। পূর্বাঞ্চলে পণ্যবাহী ট্রেন দুটিই চালু আছে। সাম্প্রতিককালে বন্দরে পণ্য কমে যাওয়ায় মালবাহী ট্রেন বাড়ানোর ব্যাপারে আপাতত কোনো চাপ নেই।’
রেল পূর্বাঞ্চলের চিফ অপারেটিং সুপারিনটেনডেন্ট মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, কোরিয়া থেকে ইতিমধ্যে ১৫টি যাত্রীবাহী কোচ এসেছে। আরো ১৪৭টি কোচ আসবে। তার মধ্যে ২৫টি কোচ মাসখানেকের মধ্যে আসবে বলে আশা করা যায়। বর্তমানে চট্টগ্রাম-ঢাকা, চট্টগ্রাম-সিলেট, ঢাকা-সিলেট, চট্টগ্রাম-চাঁদপুর, চট্টগ্রাম-ময়মনসিংহসহ পূর্বাঞ্চলের রুটসমূহে ২৫ জোড়া ট্রেন অর্থাৎ ৫০টি যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল করছে।
রেলের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম-ঢাকা রুটে বর্তমানে ছয় জোড়া আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করছে। এগুলোর মধ্যে মহানগর এক্সপ্রেস ১৯৮৫ সালে, মহানগর গোধূলি ১৯৮৬ সালে, সুবর্ণ এক্সপ্রেস ১৯৯৮ সালে, তূর্ণা নিশিথা এক্সপ্রেস ২০০০ সালে, চট্টলা এক্সপ্রেস ২০১০ সালে চলাচল শুরু করে। ২০১৬ সালে যুক্ত হয় বিরতিহীন আন্তঃনগর ট্রেন সোনার বাংলা। গত কয়েক বছর আগে পণ্য পরিবহনের চাপ বেড়ে যাওয়া মুখে পণ্যবাহী নতুন ট্রেন চালু করার প্রস্তাব উঠলেও ইঞ্জিনসংকটের কারণে চালু করা যায়নি। এই ইঞ্জিনসংকট এখনো বিদ্যমান আছে।