স্কটল্যান্ডের ক্ষমতাসীন জাতীয়তাবাদী দল পাকিস্তানি ও কেনীয় বংশোদ্ভূত হামজা ইউসুফকে শীর্ষ পদে নির্বাচিত করছে। বুধবারই তিনি মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিতে পারেন। ইউসাফ স্বাধীনতার অঙ্গীকার করেছেন।
ভারতীয় বংশোদ্ভূত ঋষি সুনাক যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার ঘটনা বড় চমক ছিল। এবার স্কটল্যান্ডের ‘ফার্স্ট মিনিস্টার'-এর পদ গ্রহণ করতে চলেছেন পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত হামজা ইউসুফ । বারাক ওবামার পর কেনিয়ার সঙ্গে সম্পর্কিত এই নিয়ে তিন জন নেতা পশ্চিমা বিশ্বের শীর্ষ পদ পেতে চলেছেন। ব্রিটেনের অঙ্গরাজ্যের শীর্ষ পদ থেকে নিকোলা স্টার্জেন পদত্যাগ করার পর সোমবার ইউসাফ ক্ষমতাসীন স্কটিশ জাতীয় পার্টি এসএনপি-র প্রধান নির্বাচিত হন। মঙ্গলবার আঞ্চলিক সংসদ তাঁকে স্কটল্যান্ডের প্রধান নির্বাহীর পদেও নির্বাচন করতে চলেছে। সে ক্ষেত্রে তিনি বুধবার ‘ফার্স্ট মিনিস্টার' বা মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করবেন।
৩৭ বছর বয়সি ধর্মপ্রাণ মুসলিম ব্যক্তি হিসেবে হামজা ইউসুফ স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতাকামী দলের প্রধান হওয়ায় ক্ষমতা হস্তান্তরের ঘটনাটি আন্তর্জাতিক স্তরেও বাড়তি নজর আকর্ষণ করছে। এই প্রথম কোনো মুসলিম পশ্চিম ইউরোপের কোনো সরকারের প্রধান হতে চলেছেন। প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে দলের তিন প্রার্থী সেই পদের জন্য লড়াই করার পর শেষ পর্যন্ত ইউসাফই প্রায় ৫২ শতাংশ ভোট আদায় করতে পেরেছেন। স্বাধীনতার প্রশ্নে দ্বিতীয়বার গণভোট আয়োজন নিয়ে দলের মধ্যে কোন্দল ঐক্যে ফাটল ধরিয়েছে। জনমত সমীক্ষায় এখনো স্বাধীনতার পক্ষে যথেষ্ট সমর্থনের লক্ষণ পাওয়া না গেলেও উপযুক্ত নেতা স্কটল্যান্ডের মানুষের মধ্যে সেই চেতনা জাগিয়ে তুলতে পারবেন বলে এসএনপি দলের একাংশ মনে করছে।
পূর্বসূরি স্টার্জনের মতো ইউসাফও ব্রিটেন থেকে স্কটল্যান্ডকে বিচ্ছিন্ন করে স্বাধীন রাষ্ট্র করে তুলতে চান। তবে আপাতত লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধির প্রবণতায় রাশ টানার কাজকেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে চান তরুণ এই নেতা। সোমবার তিনি বলেন, স্কটল্যান্ডের মানুষের এখনই স্বাধীনতার প্রয়োজন রয়েছে। তার প্রজন্মই সেই উদ্যোগ বাস্তবায়ন করবে। রূপান্তরকামী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠারও অঙ্গীকার করেছেন ইউসাফ। পাকিস্তানি বাবা ও কেনিয়ার মায়ের সন্তান হিসেবে গ্লাসগো শহরে জন্মগ্রহণ করে তিনি আজ যে জায়গায় পৌঁছতে পেরেছেন, সেই দৃষ্টান্ত এসএনপি দলের আধুনিক স্কটল্যান্ডের স্বপ্নের প্রতিফলন। ইউসাফ গোটা স্কটল্যান্ডের নেতা হবার প্রতিশ্রুতি দেন।
স্কটল্যান্ডের শীর্ষ পদে রদবদল সত্ত্বেও যুক্তরাজ্যের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব স্বাধীনতার প্রশ্নে গণভোটের ক্ষেত্রে অবস্থান বদল করছে না। প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের মুখপাত্র বলেছেন, সরকার অর্থনৈতিক উন্নতিকে সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দিচ্ছে। বিচ্ছিনতাবাদী প্রয়াস নিয়ে আলোচনার কোনো অবকাশ নেই বলে তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন।