হাতে পতাকা, চোখে দৃপ্ত প্রেরণা আর সুন্দর বাংলাদেশের স্বপ্ন তাদের সবার চোখে। কোমলমতি শিশু থেকে শুরু করে ষাটোর্ধ্ব প্রবীণ, কে নেই সেই দলে। মার্চের তপ্ত রোদ উপেক্ষা করে হাতে হাত রেখে, মুক্তির গান গেয়ে তারা হেঁটেছেন শোক থেকে শক্তির পথে।
নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করতে পর্বতারোহী সংগঠন “অভিযাত্রী” ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের যৌথ আয়োজনে এমন দৃশ্যের দেখা মেলে।
রোববার (২৬ মার্চ) মহান স্বাধীনতা দিবসে “শোক থেকে শক্তি: অদম্য পদযাত্রা” স্লোগানে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার থেকে জাতীয় স্মৃতিসৌধ পর্যন্ত দশমবারের মতো এ পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়।
এদিন ভোর ছয়টায় জাতীয় সংগীত গেয়ে এবং ভাষা শহিদদের প্রতি সম্মান জানিয়ে শুরু হয় পদযাত্রা।
পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী ভোর ছয়টার আগেই ঢাকা ও ঢাকার বাইরের বিভিন্ন স্থান থেকে পদযাত্রীরা কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে উপস্থিত হন।
শহিদ মিনার থেকে যাত্রা শুরু করে পদযাত্রীরা জগন্নাথ হল, রমনা কালী মন্দির, শিখা চিরন্তনী ও মধুর ক্যান্টিনে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যলয়ের ভিসির বাংলো নিকটস্থ স্মৃতি চিরন্তনীতে পৌঁছান। স্মৃতি চিরন্তনীতে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর পর নিউমার্কেট, সিটি কলেজের পথ হয়ে মোহাম্মদপুরের শারীরিক শিক্ষা কলেজে পৌঁছায় দলটি।
শারীরিক শিক্ষা কলেজ থেকে পদযাত্রীরা রায়ের বাজার বধ্যভূমিতে পৌঁছান। সেখান থেকে তারা বংশাল যান। সেখান থেকে নৌকাযোগে দীর্ঘ প্রায় ৩২ কিলোমিটার নৌপথে বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, ধলেশ্বরী ও বংসাই পাড়ি দিয়ে বংসাই শ্মশান ঘাটে পৌছান অভিযাত্রীরা। এরপর গোপীনাথপুর, চারিগ্রামের পথ ধরে বিকেল ৫টার দিকে তারা পৌঁছান সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে।
স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানানোর পর কিছুক্ষণ নীরবে অবস্থান করে শহিদদের স্মৃতিকে স্মরণ করে পদযাত্রীরা নেন তারুণ্যের দৃপ্ত শপথ। শপথ বাক্য পাঠ করান এভারেস্টজয়ী প্রথম বাংলাদেশি নারী নিশাত মজুমদার।
একইভাবে মিরপুরের রূপনগর থেকে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ পর্যন্ত শোক থেকে শক্তি অদম্য পদযাত্রা করেছে সোহাগ স্বপ্নধারা পাঠশালা। এছাড়া, মৌলভীবাজারে গার্লস গাইড এবং জামালপুরের মুক্তি সংগ্রাম জাদুঘর এ পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করেছে।