শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

গোপন চুক্তির মাধ্যমে দাখিল পরীক্ষা কেন্দ্র বাতিল করার অভিযোগ

আপডেট : ২৯ মার্চ ২০২৩, ২১:৩২

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার নারায়ণপুর ডিএস কামিল মাদ্রাসার দাখিল পরীক্ষা কেন্দ্র পরিবর্তন করে ইব্রাহিমপুর মাদ্রাসায় নেওয়ার প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী। কেন্দ্রটি বহালের জন্য বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডে লিখিত আবেদন করেছেন স্থানীয় এমপি। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ গোপন চুক্তির মাধ্যমে কেন্দ্রটি বাতিল করা হয়েছে।

জানা যায়, ১৯৯৫ সাল থেকে নবীনগর ০১ কেন্দ্র নারায়ণপুর ডিএস কামিল মাদ্রাসায় দাখিল পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। আগামী ৩০এপ্রিল অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া দাখিল পরীক্ষায় এই মাদ্রাসা থেকে ৯২ জনসহ নবীনগর উপজেলার দৌলতপুর কাসেমূল উলুম আলিম মাদ্রাসা, বার আউলিয়া ইসলামী মাদ্রাসা, গোপালপুর দাখিল মাদ্রাসা, সলিমগঞ্জ আব্দুল ওয়াহাব দাখিল মাদ্রাসা, রছুল্লাবাদ দাখিল মাদ্রাসা, শিবপুর ইউনিয়ন ইসলামীয়া দাখিল মাদ্রাসা, বাইশমৌজা দাখিল মাদ্রাসা, চরগোসাইপুর ইসলামীয়া দাখিল মাদ্রাসার মোট ৩৯৪জন পরীক্ষার্থী এই কেন্দ্রে পরীক্ষা দেওয়ার কথা রয়েছে। ইতিমধ্যে দূর দূরান্ত থেকে আসা পরিক্ষার্থীরা থাকার জন্য বাসা ভাড়াও করেছেন।
 
সম্প্রতি নারায়ণপুর ডিএস কামিল মাদ্রাসার দাখিল পরীক্ষা কেন্দ্র পরিবর্তন করে উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ইব্রাহিমপুর মাদ্রাসায় স্থানান্তর করা হয়। ১৯৫৬ সালে নারায়ণপুর মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং নবীনগর উপজেলার একমাত্র কামিল মাদ্রাসা এটি। বর্তমানে এই মাদ্রাসার শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ২ হাজার ৪০০ জন।

বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবরে ১৫ মার্চ লিখিত আবেদনে স্থানীয় এমপি মোহাম্মদ এবাদুল করিম বুলবুল বলেন, নবীনগর ০১ দাখিল পরীক্ষা কেন্দ্রটি (নারায়ণপুর ডিএস কামিল মাদ্রাসা) বাতিল করে নবীনগর ০২ (ইব্রাহিমপুর) কেন্দ্রে সংযুক্ত করা হয়েছে। যা অনাকাঙ্খিত ও জনস্বার্থ পরিপন্থি। যদি আদেশ কার্যকর হয় তবে ১৫ থেকে ১৬ কিলোমিটার দূর হতে এসে পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করতে হবে। এতে গরীব পরীক্ষার্থীরা আর্থিক ও মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে। আদেশটি বাতিল করে নবীনগর ০১ নারায়ণপুর ডিএস কামিল মাদ্রাসার দাখিল পরীক্ষা কেন্দ্রটি বহাল রাখার জন্য জোর সুপারিশ ও অনুরোধ করেন।
 
এলাকাবাসী ও অভিভাবকরা জানান, সলিমগঞ্জ, বাইশমৌজা, বার আউলিয়া, দৌলতপুর, চরগোসাইপুর ও শিবপুর মাদ্রাসা থেকে ইব্রাহিমপুরের দূরত্ব হবে কমপক্ষে ৩০ কিলোমিটার। এত দূরে গিয়ে আমাদের ছেলে মেয়েদের পরীক্ষা দেওয়া কষ্টকর হবে। আমরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হব।
 
শিক্ষার্থীরা জানান, আমরা অনেক দূর থেকে এবং অনেকের নৌ-পথেও আসতে হয়। বাড়ি থেকে এসে পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব হবে না। সে কারণে নারায়ণপুর মাদ্রাসার আশপাশে বাসা ভাড়া করে রেখেছি আগ থেকেই। ইব্রাহিমপুর একটি মফস্বল গ্রাম, আশপাশে ভাড়া নেওয়ার মতো কোনো বাসাবাড়ি নেই।
 
নবীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একরামুল ছিদ্দিক বলেন, নবীনগর ০১ নারায়ণপুর ডিএস কামিল মাদ্রাসার দাখিল পরীক্ষার কেন্দ্রটি বহাল রাখার জন্য জন্য এমপি ডিও লেটার দিয়েছেন। সদরে কেন্দ্রটি থাকলে সবার জন্য সুবিধা হবে।

নারায়ণপুর ডিএস কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মুফতি রফিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের কেন্দ্রে দাখিল পরীক্ষার সকল প্রস্তুতি নেওয়া আছে। কেন্দ্র বাতিলের বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রহস্যজনক কারণে আমাদেরকে আগ থেকে অবগত করেন নাই। কেন্দ্র পরিবর্তন হলে দুরদুরান্ত থেকে আসা শিক্ষার্থীরা আর্থিক ও মানসিকভাবে হতিগ্রস্ত হবে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোকাররম হোসেন গোপন চুক্তির কথা অস্বীকার করে বলেন, কেন্দ্র বাতিলের বিষয়ে প্রতিষ্ঠানের প্রধানের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে এমন কথা চিঠিতে উল্লেখ ছিল না।

ইত্তেফাক/পিও