সাতক্ষীরা রেঞ্জে সুন্দরবনে কাঁকড়া ধরতে গিয়ে ওয়াজেদ গাজী নামে এক জেলে বাঘের আক্রমণের থেকে বেঁচে ফিরে এসেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। বুধবার (২৯ মার্চ) সকাল ৬টায় শ্যামনগরের ছোটভেটখালী গ্রামে আহত অবস্থায় তাকে নিয়ে ফিরে এসেছেন তার ছোট ভাই লিয়াকত।
মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) সকাল ৯টার দিকে সাতক্ষীরা রেঞ্জের কাঁচিকাটা সংলগ্ন দারগাং খালে কাঁকড়া ধরার সময় এ ঘটনা ঘটে। ওয়াজেদ গাজী উপজেলার ছোটভেটখালী গ্রামে মৃত জব্বার গাজীর ছেলে।
পরিবারের সদস্যরা জানান, ওয়াজেদ গাজীর ঘাড়, পিঠ ও মাথায় আঘাত লেগেছে। তাকে বাড়িতে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
আহত ওয়াজেদ গাজী বলেন, বাঘটি আক্রমণের সময় আমার ছোট ভাই লিয়াককের থেকে আমি মাত্র ২০ ফুট দূরে ছিলাম। আমি কাঁকড়া ধরায় ব্যস্ত ছিলাম। হঠাৎ কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমার মাথায় আক্রমণ টের পাই। কিন্তু সেটা যে বাঘ বুঝতে বেশি সময় লাগে না। সঙ্গে সঙ্গে আমার ছোট ভাই গরানের লাঠি নিয়ে উচ্চস্বরে চিৎকার করতে করতে বাঘের চোখে চোখ রাখে। আপনারা হয়তো জানেন, বাঘের চোখে চোখ রাখলে সে ভয় পায়। ফলে বাঘটি আমাকে ছেড়ে দেয়। ততক্ষণে আমার প্রাণ যেন যাই যাই অবস্থা। আর বেঁচে থাকতে পারব বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। পিছন ফিরে দেখি বাঘ পালিয়ে যাচ্ছে। সঙ্গে সঙ্গে আমাকে আহত অবস্থায় নৌকায় নিয়ে আমার ছোট ভাই ফিরে আসে। কিন্তু নেটওয়ার্ক না থাকায় কারো সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারিনি। ফলে বাসায় ফিরতে অনেক দেরি হয়ে যায়। বুধবার ভোর ৬টায় আমরা বাসায় ফিরেছি। এখন বাড়ি আছি। বাড়ি থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছি। আল্লার কাছে হাজার শোকরিয়া প্রাণে বেঁচে আছি।
আহতের ছোট ভাই লিয়াকত গাজী জানান, দারগাং খালে কাঁকড়া ধরার সময় হঠাৎ একটি রয়েল বেঙ্গল টাইগার নৌকার ওপরে তার ভাইয়ের (ওয়াজেদ গাজী) ওপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে। এ সময় পাশে থাকা গরানের লাঠি দিয়ে বাঘটিকে সর্বশক্তি দিয়ে আঘাত করার একপর্যায়ে বাঘটি তার ভাইকে ছেড়ে দেয়। আমাদের মারমুখি প্রতিরোধে
বাঘটি পিছু হটে। এবং একপর্যায়ে সুন্দরবনের দিকে গর্জন করতে করতে পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থলটি সুন্দরবনের গভীরে এবং সেখানে কোনো মোবাইল নেটওয়ার্ক কাজ না করায় ফিরে আসতে বেশি সময় লেগেছে।
মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান অসীম মৃধা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আমি শুনেছি। তারা বাড়িও ফিরেছে।
সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষন (এসিএফ) একেএম ইকবাল হোসেন চৌধুরী ওই জেলে বাঘের আক্রমণে আহত হয়েছেন এমন খবর শুনেছি। তবে ওই জেলের সুন্দরবনে প্রবেশের বৈধ অনুমতি ছিল না।