'টাকার অভাবে' মিয়ানমারে হতে যাওয়া অলিম্পিক বাছাইয়ে দল পাঠায়নি বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। বাংলাদেশ নারী দল যেতে না পারায় বেশ সমালোচিত হন বাফুফে প্রেসিডেন্ট কাজী সালাউদ্দিন। তারই প্রেক্ষিতে সংবাদমাধ্যমে কথা বলেছেন ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল।
রোববার (৯ এপ্রিল) গণমাধ্যমকে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমি চিকিৎসার জন্য কিছুদিন দেশের বাইরে ছিলাম। তাই এটা নিয়ে কথা বলতে পারিনি। আমি অবশ্য তাদের কাছে জানতে চাইব, কেন তারা এরকম কথা বললেন? দেশবাসী সবারই একটাই প্রশ্ন- অল্প কিছু টাকার জন্য কেন মেয়েদের দেশের বাইরে খেলতে যেতে পারবেন না!’
ক্ষুব্ধ হয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সরকারের পক্ষ থেকে অবশ্যই তাদের পাশে থাকতাম, অনেক স্পন্সর প্রতিষ্ঠানও সহায়তা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত ছিল। অথচ কারও সঙ্গে কথা না বলে, কাউকে কিছু না জানিয়ে তারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিষয়টি বিস্তারিতভাবে অবহিত করব। আমার মনে হয় তারা ইচ্ছাকৃতভাবে দলটাকে পাঠায়নি। কেন তারা ইচ্ছাকৃতভাবে কাজটি করে আমাদের ভাবমূর্তি সংকটে ফেললেন সেটা খতিয়ে দেখা দরকার। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নারীদের খেলায় অনেক পৃষ্ঠপোষকতা করেন, সেটা ফুটবল হোক কিংবা ক্রিকেট। সেই নারীরা যখন অল্প কিছু টাকার জন্য খেলতে যেতে পারেনি, এটার পেছনে নিশ্চয় অন্য কিছু আছে। আমি অবশ্যই বিষয়টা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে অবহিত করব।’
মিয়ানমারে নারী দলের খেলতে না যাওয়ার ঘটনায় তোপের মুখে পড়েন কাজী সালাউদ্দিন। সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে উল্টো বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসন পাপনকে খোঁচা মেরে বসেন তিনি।
গত ৩ এপ্রিলের ওই সংবাদ সম্মেলনে বাফুফে সভাপতির কাছে প্রশ্ন ছিল, বিসিবি সভাপতি খেলা চলাকালেই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করেন। সেখানে বাফুফে সভাপতি কেন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করেননি, কেন এই দূরত্ব? উত্তরে সালাউদ্দিন বলেছিলেন, ‘সবার ব্যক্তিত্ব তো এক না। আমি তো লোক দেখিয়ে বলবো না- এই প্রধানমন্ত্রী ফোন দিয়েছে। আমি ওই রকম না। আমি ফুটবল ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে এসেছি। আমি ওই নাটক করতে পারবো না। আমি প্রধানমন্ত্রীকে শ্রদ্ধা করি। আমি লোক দেখাতে পারবো না।’
পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা হয়েছিল সালাউদ্দিনের। তাকে ফোন দিয়ে ‘ধমক’ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সেই কথা সাংবাদমাধ্যমে বাফুফে প্রধান জানিয়েওছিলেন, “আমাকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ফোন করা হয়েছিল। ওনারা দুটো বিষয় জানতে চান। প্রথমত বলেছেন, কত টাকা লাগবে এখনই তা জানাতে। আমাকে ধমক দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সালাউদ্দিন, আমাকে কেন বলোনি?’ প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘কত টাকা লাগবে নিয়ে যাও।”