মঙ্গলবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

এক মিনিটের টর্নেডোয় প্রাণ হারায় নারী শিশুসহ শতাধিক মানুষ

নেত্রকোনার ‘কাঞ্চনপুর ট্র্যাজেডির’ ১৯ বছর পূর্ণ হলো আজ

আপডেট : ১৪ এপ্রিল ২০২৩, ০৭:০০

আজ সেই ভয়ংকর ১৪ এপ্রিল, নেত্রকোনার সদর উপজেলার মৌগাতি ইউনিয়নের  ‘কাঞ্চনপুর ট্র্যাজেডি’ দিবস। আজ থেকে ১৯ বছর আগে ২০০৪ সালের এই দিনে (সেই দিনও ছিল তৎকালীন পয়লা বৈশাখ নববর্ষের দিন) গোধূলি সন্ধ্যায় মাত্র এক মিনিটের টর্নেডোতে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় নেত্রকোনা ও আশপাশের এলাকার ২৫টি গ্রাম। মৃত্যু হয় শতাধিক লোকের। বাদ যায়নি কোলের শিশু, নবদম্পতি। কনে দেখতে এসে প্রাণ হারায় পাত্রপক্ষের লোকজন।

ঝড়ের প্রাবল্য এত বেশি ছিল যে, কাঞ্চনপুরের ভাওয়াল বিলের সমস্ত পানি তুলে নিয়ে আশপাশের জমিতে ফেলে দেয়। বিলের মাছগুলো অর্ধকিলোমিটার দূরে পাওয়া যায়। এক গ্রামের বাসিন্দার লাশ পাওয়া যায় পাশের গ্রামে। উদ্ধার করা হয় মস্তকবিহীন অপরিচিত লাশ। চারদিকে তখন মানুষের কান্নার আওয়াজ ছাড়া আর কিছুই ছিল না। ঝড়ে বাড়িঘর মাটির সঙ্গে মিশে যায়। সেই সময় আর্তমানবতার সেবায় সরকারের পাশাপাশি সারা দেশ থেকে লোকজন সাহায্য করতে ছুটে এসেছিল ক্ষতিগ্রস্ত নেত্রকোনার গ্রামগুলোতে।

১৯ বছর পর কাঞ্চনপুর ও আশপাশের গ্রামগুলোতে গিয়ে দেখা যায়, লোকজন সেই ভয়াবহ দিনের কথা ভোলেনি। সেই সময় ঘূর্ণিঝড়ে গুরুতর জখম হন কাঞ্চনপুর গ্রামের জয়নাল মিয়া। তিনি বলেন, ঝড়ে আহত হয়ে তিনি অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলেন। জ্ঞান ফেরার পর দেখতে পান, তিনি ময়মনসিংহ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ঐ সময়ের ইউপি মেম্বার নজরুল ইসলাম বলেন, তিনি আহত লোকদের ট্রাকে তুলেছেন। কে জীবিত আর কে মৃত তা বুঝতে পারছিলেন না।

কাঞ্চনপুরের বাসিন্দা চান মিয়া ও আবুল হাসেম বলেন, সেই ঝড়ের ধ্বংসযজ্ঞের চিহ্ন অনেক আগেই মুছে গেছে। গ্রামে পাকা সড়ক হয়েছে। যোগাযোগব্যবস্থার উন্নতি হয়েছে। গ্রামে গ্রামে বিদ্যুৎ এসেছে। ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার হয়েছে।

কাঞ্চনপুর গ্রামের লাল মিয়া বলেন, তারা এখন যে কোনো ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় সক্ষম। দুর্যোগের সঙ্গে লড়াই করেই বেঁচে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি। সেই ঝড়ের কবলে পড়ে নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করেন ভয়াবহ সেই দিনে বেঁচে যাওয়া মানুষগুলো।

ইত্তেফাক/এমএএম