শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

স্বপ্ন ছুঁতে ঈদেও বাড়ি ফিরছে না ঢাবি শিক্ষার্থীরা, থাকবেন হলে

আপডেট : ২০ এপ্রিল ২০২৩, ২০:৫০

মুসলমানদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর। ঈদকে কেন্দ্র করে শহর ছেড়ে গ্রামে ফিরছেন মানুষজন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ঈদ পালনে দেওয়া হয়েছে ছুটি। ছুটি পেয়েই ঈদ উদযাপন করতে বাড়ি ছুটছে শিক্ষার্থীরা। ঈদের ছুটিতেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে দেখা যায় ভিন্ন চিত্র। 

বন্ধ পেয়েও ঈদ উদযাপনে বাড়ি ফিরেছেন অনেক শিক্ষার্থী। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, হলে থাকা সকলেই চাকরি প্রত্যাশী। কেউ বিসিএস কেউবা নিচ্ছেন ব্যাংক জবের প্রস্তুতি। সকলেই একটি ভালো চাকরির স্বপ্ন দেখেন আর সেই স্বপ্নকে ছুঁতে ঈদ আনন্দ বিসর্জন দিচ্ছেন তারা। প্রতি বছর সেই স্বপ্নবাজ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে ঈদ উদযাপন করে বিশ্ববিদ্যালয়। এইবারেও তার ব্যাতিক্রম হবে না। 

বিশ্ববিদ্যালয় জানায়, প্রতি বছরের ন্যায় এবারের ঈদেও হলে থাকা শিক্ষার্থীদের জন্য খাবারের আয়োজন করা হবে। শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল আচার অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ না থাকলে তা অসম্পূর্ণ থেকে যায় বলে মনে করেন শিক্ষকেরা।

ঈদের ছুটি হলে কাটাবেন সূর্যসেন হলের শিক্ষার্থী তানভীর হাসান। স্বপ্নকে ছুতে ঈদ আনন্দ বিসর্জন দিচ্ছেন বলেই তিনি জানান। তানভীরের বাড়ি ময়মনসিংহ। মা বাবার একমাত্র ছেলে তানভীর। পড়াশোনা শেষ করে এখন চাকরি প্রত্যাশী। 

তানভীর জানান, গত বছর কোরবানির ঈদ ও হলে করেছেন। এবারে রোজার ঈদেও হলে থাকবেন। কিছু পেতে হলে কিছু জিনিস ছেড়ে দিতে হয়। ভবিষ্যতে ভালো পর্যায়ে পৌঁছাতে পারলে এসব ঈদ আনন্দের ত্যাগ সফল হবে। ভালো চাকরি পেলে বাকি জীবন ঈদ উদযাপন করে বেড়ানো যাবে।

আরও জানা যায়, প্রতি ঈদে হলগুলোতে প্রায় ১০০০ শিক্ষার্থী অবস্থান করে। হলে হলে শিক্ষার্থীরা একসঙ্গে ঈদ উদযাপন করে। বাড়িতে ঈদ উদযাপন করতে না পারলেও এই বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীদের ভুলে যায় না বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়েই প্রতিবছর ঈদ উদযাপনের ব্যবস্থা করে বিশ্ববিদ্যালয়। টিএসসিতে সবার জন্য রান্না করা হয়। রোজার ঈদে সেমাই ও কোরবানির ঈদে গরুই জবা করা হয় শিক্ষার্থীদের জন্য। রান্না শেষে হলে হলে পৌঁছে দেওয়া হয় সে খাবার। আর শিক্ষার্থীরা তৃপ্তি সহকারে তা গ্রহণ করে।

মুহসিন হলের নিরাপত্তা প্রহরী নাজমুল ইসলাম বলেন, ১৮ বছর থেকে এখানে চাকরি করছি। ঈদের ছুটিতেও বাড়ি যাওয়া হয় না। পরিবার নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়েই ঈদ উদযাপন করি। হলের কিছু ছাত্ররাও ঈদে বাড়ি যায় না। হলের অনেক শিক্ষার্থীর সঙ্গে ভালো সম্পর্ক হয়ে গেছে। বন্ধের সময় তাদের সঙ্গে ভালোই দিন কেটে যায়।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেরকে আমরা পরিবারের সদস্য হিসেবেই বিবেচনা করি। প্রতিবছর হলে থাকা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়েই আমরা ঈদ পালন করি। তা না হলে কারোই ঈদ পূর্ণাঙ্গ হবে না। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের প্রতিষ্ঠান। শিক্ষার্থীদের প্রতিষ্ঠানের যে কোনো অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ না থাকলে তা অসম্পূর্ণ থাকবে বলে আমরা মনে করি। আমরা সব জায়গায় শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ চাই। শিক্ষক শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়েই বিশ্ববিদ্যালয়ে সুন্দর একটি পরিবেশ তৈরি হবে। ঈদুল ফিতরে হলগুলোতে আলাদাভাবে শিক্ষার্থীদের জন্য খাবারের আয়োজন করা হয়। সেই ধারাবাহিকতায় এবারেও আলাদাভাবে হলগুলোয় শিক্ষার্থীদের জন্য খাবার আয়োজনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ইত্তেফাক/পিও