সোমবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ৯ আশ্বিন ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

প্রধান শিক্ষকের ভুলে এসএসসি পরীক্ষা দিতে পারেনি শিক্ষার্থী

আপডেট : ০২ মে ২০২৩, ১৯:৫১

রংপুরের মিঠাপুকুরে প্রধান শিক্ষকের ভুলে এবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি মেহেদি হাসান নামে এক শিক্ষার্থী। উপজেলার খোড়াগাছ ইউনিয়নের রূপসী উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রেজাউল হককে প্রায় ৪ ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখে এলাকাবাসী। 

মঙ্গলবার (২ মে) দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর এ বিষয়ে অভিযোগ দিয়েছে ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী। মেহেদি হাসান উপজেলার রূপসী ফতেপুর গ্রামের দিনমজুর মোক্তারুর রহমানের ছেলে। 

জানা যায়, এসএসসি পরীক্ষার ফরম ফিলাপ বাবদ মেহেদি প্রধান শিক্ষকের কাছে ২৮০০ টাকা প্রদান করে। এছাড়াও যাতায়াত ভাড়া বাবদ অতিরিক্ত ২ হাজার টাকা দেওয়া হয়। ফরম ফিলাপ করার পরও রেজিস্ট্রেশন কার্ড ও প্রবেশপত্র পায়নি মেহেদি হাসান। স্কুলের অন্যান্য পরীক্ষার্থীর প্রবেশপত্র চলে আসলেও তার প্রবেশপত্রের কোনো খবর নেই। প্রধান শিক্ষকের কাছে প্রবেশপত্র চাইলে তিনি টালবাহানা করতে থাকেন। পরীক্ষার আগেই প্রবেশপত্র পেয়ে যাবে বলে আশ্বাস দেন অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক। পরে পরীক্ষার আগের দিন (২৯ এপ্রিল) সন্ধ্যায় জানতে পারে তার ফরম ফিলাপ করা হয়নি। এ ঘটনায় এলাকাবাসী উত্তেজিত হয়ে সন্ধ্যা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত প্রধান শিক্ষক রেজাউল হককে বিদ্যালয়ে অবরুদ্ধ করে রাখে। বিষয়টি ইউএনওকে অবগত করলে তার হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মেহেদি হাসান বলেন, রেজিস্ট্রেশন ও ফরম ফিলাপ করেছি। প্রধান শিক্ষকের কাছে প্রবেশপত্র চাইলে তিনি আজ না কাল চলে আসবে বলে টালবাহানা করতে থাকেন। পরীক্ষার আগের দিন সন্ধ্যায় তিনি ফোন করে বলেন আমার ফরম ফিলাপ হয়নি। সেজন্য এডমিট কার্ডও আসেনি। ফলে পরীক্ষা দিতে পারেনি।

মেহেদি হাসানের বাবা মোক্তারুর রহমান বলেন, দিনমজুরের কাজ করে ছেলের পড়ালেখা চালাচ্ছি। ফরম ফিলাপের টাকা ছাড়াও বোর্ডে যাতায়াতের জন্য অতিরিক্ত দুই হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। প্রধান শিক্ষকের ভুলে যদি আমার ছেলে পরীক্ষা দিতে না পারে তাহলে এর দায় তাকেই নিতে হবে।

অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক রেজাউল হক বলেন, মেহেদি হাসানসহ ৫ জনের ফরম ফিলাপ করতে গিয়ে ভুল হয়েছে। এরমধ্যে ৪ জনের সমাধান হয়েছে। কিন্তু মেহেদি হাসানের ফরম ফিলাপ হয়নি। তার সঙ্গে কথা বলে আগামীতে পরীক্ষা দেওয়ার জন্য বলা হয়। একপর্যায়ে সে এলাকাবাসীকে নিয়ে এসে স্কুলে হট্টগোল শুরু করে। সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত তারা স্কুলে অবস্থান করে। রোববার পরীক্ষার প্রথম দিন রাণীপুকুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ পরীক্ষা কেন্দ্রে এসে আবারও আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছে। 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. রুহুল আমিন বলেন, শিক্ষকের ভুলে শিক্ষার্থীর পরীক্ষা দিতে না পারা খুবই দুঃখজনক। এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ইত্তেফাক/এবি/পিও