মঙ্গলবার, ৩০ মে ২০২৩, ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

জরায়ুমুখ ক্যানসারে বছরে প্রাণ যায় ৪ হাজার নারীর

আপডেট : ০৩ মে ২০২৩, ০৭:৩১

জরায়ুমুখ ক্যানসারের কারণে বিশ্বে বছরে ২ লাখ ৮০ হাজার ৫০০ নারীর মৃত্যু হয়। বাংলাদেশে এ রোগে  মৃত্যু হচ্ছে বছরে প্রায় ৪ হাজার নারীর। এছাড়া মাতৃত্বকালীন স্বাস্থ্যগত নানা সমস্যার কারণে বিশ্বে প্রায় ২ লাখ নারী মারা যাচ্ছে। এতে বাংলাদেশে মারা যায় প্রায় সাড়ে ৬ হাজার নারী। গতকাল মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা প্রতিষ্ঠান, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) সেমিনার কক্ষে ‘বাংলাদেশে সেক্সুয়াল এবং জন্মধারণ স্বাস্থ্য অধিকার’ শীর্ষক কনফারেন্স নিয়ে অ্যাডসার্চ ও আইসিডিডিআরবি আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে আইসিডিডিআরবির শিশু এবং মাতৃত্ব স্বাস্থ্য বিভাগের সহযোগী বিজ্ঞানী ডা. মোহাম্মদ এহসানুর রহমান এ তথ্য জানান।

তিনি জানান, প্রজনন স্বাস্থ্যের জন্য অন্যতম বড় একটি বিষয় হচ্ছে সার্ভাইক্যাল ক্যানসার বা জরায়ুমুখ ক্যানসার। যার কারণে প্রতি বছর বিশ্বে ২ লাখ ৮০ হাজার ৫০০ জন নারী মারা যায়। যাতে বাংলাদেশে মারা যাচ্ছেন প্রায় ৪ হাজার নারী। এছাড়া সেক্সুয়াল সংক্রমণের বা প্রজনন অঙ্গে সংক্রমণের কারণে সারাবিশ্বে মারা যায় ৪৩ হাজার নারী। আর বাংলাদেশে এ সমস্যায় মারা যান ১ হাজারের মতো। অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের এ সময়ে এসে ১ হাজার নারীর মৃত্যুও অতিরিক্ত।

নারীদের আরো একটি বড় সমস্যা হলো প্রজনন অঙ্গ নিচের দিকে নেমে আসে। যার কারণে বিশ্বব্যাপী বছরে ২ হাজারের অধিক নারীর মৃত্যু হয়। যাতে বাংলাদেশে মৃত্যু হয় ১৫০ জনের বেশি নারীর। স্বাস্থ্যজনিত কারণে অনেক সময় গর্ভপাত বা মিসক্যারেজ হয়ে থাকে। এ গর্ভপাত অনিরাপদ অবস্থায় হলে নারীর স্বাস্থ্যগত নানা জটিলতা বা মৃত্যু ঘটে। বিশ্বব্যাপী অনিরাপদ গর্ভপাতের ফলে প্রায় ২০ হাজার নারীর মৃত্যু হয়। যাতে বাংলাদেশে ১৫০ থেকে ২০০ জনের মৃত্যু হয়। এছাড়াও অন্যান্য মাতৃত্বকালীন সমস্যায় বছরে ৩৫০ থেকে ৪০০ নারীর প্রাণ যায়।

এদিন আইসিডিডিআরবি সাসাকাওয়া অডিটোরিয়ামের ১ ও ২ নম্বর সেমিনার কক্ষ দিনব্যাপী গবেষণা ও উদ্ভাবন উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। উত্সবে তরুণ গবেষকরা যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য এবং অধিকার নিয়ে তাদের ‘গবেষণা ধারণাপত্র’ ও ‘উদ্ভাবনী প্রস্তাবনা’ তুলে ধরেন। এর আগে অ্যাডসার্চ গবেষণা প্রস্তাবনা ও উদ্ভাবনী ধারণা আহ্বান করা হয়। সেখান থেকে বাছাইয়ের মাধ্যমে ১০০টি গবেষণা প্রস্তাবনা ও ৫৭টি উদ্ভাবনী ধারণাকে সংক্ষিপ্ত তালিকাভুক্ত করা হয়। সংক্ষিপ্ত তালিকা থেকে বিশেষজ্ঞদের নম্বরের ভিত্তিতে সেরা ২২টি গবেষণা প্রস্তাবনা ও ২১টি উদ্ভাবনী ধারণা উপস্থাপনের জন্য বাছাই করা হয়। সেখান থেকে দুটি বিভাগে সেরা তিনটিকে সম্মেলনের দিন বিজয়ী ঘোষণা করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আজ বুধবার  ঢাকার হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের রূপসী বাংলা গ্র্যান্ড বল রুমে যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য এবং অধিকার ও উদ্ভাবন নিয়ে দুটি বৈজ্ঞানিক সেশনের আয়োজন করা হয়েছে। যেখানে বিশেষজ্ঞরা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তাদের উপস্থাপনা তুলে ধরবেন। সম্মেলনের উদ্বোধনী পর্বে বাংলাদেশের যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য বিস্তারে অসামান্য অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ তিন বিশিষ্টজনকে ‘এসআরএইচআর এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড-২০২৩’ প্রদান করা হবে। এ বছর অধ্যাপক ডা. এ এইচ এম তৌহিদুল আনোয়ার চৌধুরী, জাতীয় অধ্যাপক ডা. শাহলা খাতুন এবং বাংলাদেশের প্রজনন স্বাস্থ্য গবেষণা ও কর্মসূচির অগ্রদূত হালিদা আকতার হানুমকে এ সম্মাননায় ভূষিত করা হবে। সম্মেলনে উদ্ভাবন নিয়ে বেশকিছু স্টল বসানো হয়েছে। সেই সঙ্গে যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য নিয়ে পোস্টার প্রদর্শনীর আয়োজনও করা হয়েছে।

 

ইত্তেফাক/ইআ