কক্সবাজারের টেকনাফে পাহাড় থেকে অস্ত্র-গোলাবারুদসহ ৬ ডাকাতকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। শুক্রবার (৫ মে) রাত থেকে শনিবার (৬ মে) সকাল পর্যন্ত উপজেলার বাহারছড়ার এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। র্যাবের মিডিয়া উইং পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেপ্তাররা হলেন হাফিজুর রহমান প্রকাশ ছালেহ ডাকাত (৩০), তার সহযোগী নুরুল আলম নুরু (৪০) আক্তার কামাল সোহেল (৩৭), নুরুল আলম লালু (২৪), হারুনুর রশিদ (২৩) এবং রিয়াজ উদ্দিন ও বাপ্পি (১৭)।
র্যাব জানায়, টেকনাফের দুর্গম পাহাড়ে অবস্থান করে হাফিজুর রহমান ওরফে ছালেহ ডাকাতের নেতৃত্বে চক্রটি অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়, মাদক ব্যবসাসহ অন্যান্য অপরাধ কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। তার দলে সদস্য সংখ্যা ১২-১৫ জন। তারা অটোরিকশা ও সিএনজি চালক ছদ্মবেশে বিভিন্ন কৌশলে কক্সবাজারের হ্নীলা, হোয়াইক্যং, উনচিপ্রাং, শ্যামলাপুর, জাদিমোড়া ও টেকনাফ ইত্যাদি এলাকার বাসিন্দাদের টার্গেট করে অপহরণ ও ডাকাতি করে এসেছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তার জানিয়েছে, ছালেহ ডাকাতের নেতৃত্বে গত ১৮ ডিসেম্বর টেকনাফের বাহারছড়া থেকে ১০ কৃষক, ২ জানুয়ারি রোহিঙ্গা শরণার্থী রেজুয়ানা, ২৬ মার্চ ন্যাচারাল পার্কের দর্শনার্থী হ্নীলার বাসিন্দা রিদুয়ান সবুজ (১৭) ও একই এলাকার বাসিন্দা নুরুল মোস্তফা (১৬), ১৫ এপ্রিল ফুলের ডেইল এলাকা থেকে ফয়সাল (১৭), ৩০ এপ্রিল হামিদুল্লাহ (২৪) এবং ৩ মে রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে আবুল কালামসহ অনেক ব্যক্তিকে অপহরণ করেছে। পরে মুক্তিপণ আদায় করে অপহৃতদের ছেড়ে দেয়।
র্যাব আরও জানায়, মুক্তিপণ আদায় করতে অপহৃত ব্যক্তির ওপর চালানো হতো পৈশাচিক নির্যাতন। প্রাণনাশের হুমকির কারণে ফেরত আসা অধিকাংশই ভুক্তভোগী অভিযোগ দিতে বা মুখ খুলতে ভয় পেত। এ পর্যন্ত এই ডাকাতদল প্রায় অর্ধ-শতাধিক অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। তাছাড়া তারা মানবপাচার ও মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত রয়েছে বলে তারা স্বীকার করেছে।
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, শুক্রবার রাতে টেকনাফের পাহাড়ে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ডাকাতি ও অপহরণের কাজে ব্যবহৃত ১১টি দেশীয় অস্ত্র, ১৭ রাউন্ড গুলি, দু’টি ছুরি, ও ৬টি দা উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় হত্যা, ধর্ষণ, মাদক, অপহরণ ও ডাকাতিসহ ডজনখানেক মামলা রয়েছে। তাদেরকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হবে।