বাংলাদেশের জন্য সিরিজটি বিশ্বকাপের প্রস্তুতি। ভারতে হতে যাওয়া ৫০ ওভারের বিশ্ব আসরে খেলার টিকিট আগেই পেয়েছে লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজটি তাই নিজেদের ঝালিয়ে নেওয়ার। সেই লক্ষ্যে প্রথম ওয়ানডেতে নামলেও ব্যাটিং ভালো হয়নি। আইরিশ বোলারদের সামনে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২৪৬ রান করেছে বাংলাদেশ।
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে খেলা হলেও তিন ম্যাচের সিরিজটি তামিম ইকবালরা খেলছেন ইংল্যান্ডে। আজ (মঙ্গলবার) চেমসফোর্ডের প্রথম ওয়ানডেতে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। শুরুটা একেবারেই ভালো হয়নি। মুখোমুখি প্রথম বলেই আউট লিটন দাস। আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্সে প্রায় তিন সপ্তাহ কাটানোর পর এই ম্যাচ দিয়েই প্রথমবার মাঠে নেমেছিলেন তিনি। ফেরাটা মোটেও ভালো হলো না। ‘গোল্ডেন ডাক’-এ হতাশা বাড়িয়ে গেছেন।
সঙ্গী হারিয়ে আরেক ওপেনার তামিম ইকবাল টিকে থাকার চেষ্টা করেছেন। ওয়ান ডাউনে নামা নাজমুল হোসেন শান্তকে সঙ্গে নিয়ে দাঁড়িয়েও গিয়েছিলেন। তবে বেশিদূর যেতে পারেননি। ১৯ বলে ২ বাউন্ডারিতে ১৪ রান করে প্যাভিলিয়নে ফেরেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
চার নম্বরে নামেন সাকিব আল হাসান। আইপিএল ‘বিসর্জন’ দিয়ে জাতীয় দলের জার্সিতে এই প্রথমবার তার মাঠে নামা। সেকারণেই ভালো করার তাড়না আগে থেকে বেশি থাকার কথা তার। সেই চিন্তা থেকেই সম্ভবত মারমুখী ভঙ্গিতে ব্যাটিংয়ে নেমেছিলেন সাকিব। দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। যদিও অল্পতেই থামতে হয়েছে। ভালো শুরু পেয়েও ২০ বলে ২১ রান করতে পেরেছেন। মেরেছেন ৪ বাউন্ডারি।
সাকিব না পারলেও দলের হাল ধরেছেন মুশফিকুর রহিম। চমৎকার ব্যাটিংয়ে আরেকবার দলে তার কার্যকারিতার ছাপ রাখলেন। ৫২ রানে ৩ উইকেট হারানো দলকে পথে ফিরিয়েছেন মুশফিক। ঠাণ্ডা মাথায় সময়োপযোগী ইনিংস খেলেছেন।
তার আগে শান্ত ও তাওহিদ হৃদয়ের জুটিও রেখেছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। চতুর্থ উইকেটে তারা গড়েন ৫০ রানের জুটি। শান্তর বিদায়ে ভাঙে তাদের জুটি। কার্টিস ক্যাম্ফারের বলে ক্যাচ আউট হওয়ার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ৪৪ রান। ৬৬ বলের ইনিংসটি বাঁহাতি ব্যাটার সাজান ৭ বাউন্ডারিতে। আর হৃদয় ৩১ বলে খেলেন ২৭ রানের ইনিংস।
মিডল অর্ডারের প্রায় সবাই ভালো শুরু পেলেও ইনিংস লম্বা করতে পারেননি। এই জায়গায় ব্যতিক্রম মুশফিক। পরিস্থিতির দাবি মিটিয়ে ব্যাট করে পেয়ে গেছেন ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৪৪তম হাফসেঞ্চুরি। একপ্রান্ত আগলে রেখে খেলেছেন ৬১ রানের ঝলমলে ইনিংস। জশ লিটলের বলে আউট হওয়ার আগে ৭০ বলের ইনিংসটি সাজান ৬ বাউন্ডারিতে।
মুশফিকের সঙ্গে মেহেদী হাসান মিরাজ চেষ্টা করেছেন। তিনি থামেন ২৭ রানে। ৩৪ বলের ইনিংসে মেরেছেন চার বাউন্ডারি। এছাড়া অবদান রেখেছে তাইজুল ইসলাম (১৪) ও শরিফুল ইসলামের (১৬) দুটো ইনিংস।
আয়ারল্যান্ডের সবচেয়ে সফল বোলার লিটল। এই পেসার ১০ ওভারে ৬১ রান দিয়ে নিয়েছেন ৩ উইকেট। ২টি করে উইকেট পেয়েছেন মার্ক অ্যাডিয়ের ও গ্রাহাম হিউম। আর একটি করে শিকার ক্যাম্ফাস ও জর্জ ডকরেলের।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ৫০ ওভারে ২৪৬/৯ (মুশফিক ৬১, শান্ত ৪৪, হৃদয় ২৭, মিরাজ ২৭, সাকিব ২০, শরিফুল ১৬, তামিম ১৪, তাইজুল ১৪; লিটল ৩/৬১, হিউম ২/৩২, অ্যাডিয়ের ২/৪৪)।