নানা অজুহাতে আটকে আছে দিরাই উপজেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পটি। নির্মাণ কাজ শুরুর প্রায় ৪ বছর হয়ে গেলেও প্রকল্পটি এখনো দেখেনি আলোর মুখ।
দিরাই উপজেলায় মডেল মসজিদ নির্মাণের শুরুতে ভূমি জটিলতার কারণে আটকে যায় প্রকল্পের নির্মাণকাজ। এ কারণে স্থানীয়রা পুরনো মসজিদ ভেঙে প্রয়োজনীয় আরও ভূমি অধিগ্রহণ করে দেন।
নির্মাণ কাজের ৪ বছর হয়ে গেলেও কাজ হয়েছে মাত্র ২০ শতাংশ। নির্মাণাধীন মডেল মসজিদের কাজ দীর্ঘদিন বন্ধ হয়ে থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন এলাকাবাসী।
২০১৯ সালের জুলাই মাসে শুরু হওয়া প্রকল্পের কাজ ১৮ মাসের মধ্যে শেষ হওযার কথা থাকলেও ৪ বছরে কাজের অগ্রগতি বলতে শুরুতে যা ছিল তাই।
জানা গেছে, সুনামগঞ্জ গণপূর্ত বিভাগ থেকে ২০১৯ সালের ১ জুলাই দিরাই পৌর সদরের বাগবাড়ী আবাসিক এলাকায় মডেল মসজিদ নির্মাণের কার্যাদেশ দেওয়া হয়। ১১ কোটি ৯১ লাখ ৪৬ হাজার টাকা বরাদ্দের কাজটি পায় কবির সিন্ডিকেট নামক একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কার্যাদেশ পাওয়ার পরপরই কাজ শুরু করে ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ১৮ মাস মেয়াদী প্রকল্পের ৪ বছর হলেও কাজের কাজ তেমন কিছুই হয়নি।
বাগবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা এসএম মহিবুর রহমান বলেন, মসজিদ নির্মাণ প্রকল্পটিতে শুরুতে কিছু দিন ফাউন্ডেশনের কাজ চললেও নানা জটিলতায় অনেকদিন যাবত কাজ বন্ধ রয়েছে। প্রথমে ভূমি জটিলতায় কারণে আমাদের পুরনো মসজিদ ভেঙে এবং প্রয়োজনীয় আরও ভূমি অধিগ্রহণ করে দিলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফলতির কারণে কাজ শুরুর ৪ বছরের মাথায় মাত্র ১৫ থেকে ২০ শতাংশ কাজ হয়েছে। বর্তমানে অস্থায়ী একটি ঘরে আমাদের নামাজ আদায় করতে হয়। যে কারণে আমাদের নামাজ আদায় করতে বেশ অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
বাগবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা ও দিরাই পৌর যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সরোয়ার আহমদ বলেন, দীর্ঘদিন যাবত বন্ধ হয়ে আছে মডেল মসজিদ নির্মাণ কাজ। এ কারণে শুরুতে সামান্য যেটুকু কাজ হয়েছে সেগুলিতে মরিচা ধরে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। প্রকল্পের কাজ চালু করতে আমরা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করেও এর কোনো সুরাহা করতে পারি নাই।
সুনামগঞ্জ গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মুমিনুল হক বলেন, পূর্বের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বাতিল করা হয়েছে। নতুন করে আবার দরপত্র আহবান করা হবে। চিফ স্যারের অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলেই প্রকল্পের কাজ আবার শুরু হবে।
প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় ধর্ম মন্ত্রণালয় ২০১৫ সালের ৮ ফেব্রয়ারি দেশে ৫৬০টি মডেল মসজিদ নির্মাণের ঘোষণা দেয় সরকার। মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নামে উপজেলা পর্যায়ে ৩তলা মসজিদ নির্মাণ হবে। যার মধ্যে ৮শ’ মানুষ একসঙ্গে নামাজ আদায় করার সুযোগ পাবেন।
এ ছাড়াও নারী-পুরুষের পৃথক অজু ও নামাজের স্থান, পাঠাগার, গবেষণা কেন্দ্র, হজ যাত্রীদের নিবন্ধন, পর্যটকদের আবাসন ব্যবস্থা, দাওয়াতি কার্যক্রম, হিফজ মাদ্রাসা, মক্তব, মৃত ব্যক্তির গোসলের ব্যবস্থা, মসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিনের আবাসন প্রকল্পসহ বহুমুখী ইসলামিক কার্যক্রম পরিচালনার কথা বলা হয়। কাজ বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয় গণপূর্ত বিভাগকে।