শুক্রবার, ০২ জুন ২০২৩, ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

বাখমুত দখলে পুতিনের অভিনন্দন, জেলেনস্কির কৌশলী জবাব

আপডেট : ২২ মে ২০২৩, ১৭:২৩

রাশিয়ার পক্ষে যুদ্ধরত ভাড়াটে আধাসামরিক বাহিনী ওয়াগনার গ্রুপ বাখমুত দখল করে নিয়েছে এমন দাবি করার পর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তাদের অভিনন্দন জানিয়েছেন। তবে ইউক্রেনের উপ-প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ঐ দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন। যদিও ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি কৌশলী জবাব দিয়েছেন।

স্থানীয় সময় শনিবার (২০ মে) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক ভিডিও পোস্টে বাখমুত দখলের দাবি করেন ওয়াগনার প্রতিষ্ঠাতা ইয়েভগেনি প্রিগোঝিন। সেখানে তাকে তার যোদ্ধাদের সঙ্গে দাঁড়িয়ে ছবি তুলতে দেখা যায়।

পুতিনের অভিনন্দন

রুশ রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে পুতিনকে উদ্ধৃত করে প্রকাশিত খবরে বলা হচ্ছে, গত কয়েক মাস ধরে তীব্র লড়াই চলার পর রাশিয়ার এয়ার ফোর্স জেটের সহায়তায় ওয়াগনার গ্রুপ শনিবার বাখমুত ‘স্বাধীন করার অপারেশন’ সম্পন্ন করেছে। রুশ প্রেসিডেন্টের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত প্রিগোঝিন বেসরকারি সামরিক প্রতিষ্ঠানটির কয়েক হাজার শক্তিশালী যোদ্ধার নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি এর আগেও দাবি করেছিলেন যে, তার দল বাখমুত বা এর বেশির ভাগ অংশ দখল করে নিয়েছে, কিন্তু ইউক্রেনের পক্ষ থেকে তখনো সেটি অস্বীকার করা হয়।

শনিবার মস্কোর রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম যে খবর প্রকাশ করে তাতে ওয়াগনারের দাবির সঙ্গে সুর মেলাতে দেখা যায় রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কেও। প্রেসিডেন্ট পুতিনও তার সৈন্যদের অভিনন্দন জানিয়েছেন। তবে এর কিছু পরেই বার্তা আদান প্রদানের মাধ্যম টেলিগ্রামে ইউক্রেনের উপ-প্রতিরক্ষামন্ত্রী হানা মালিয়ার বলেন, বাখমুতে তীব্র লড়াই চলছে। পরিস্থিতি গুরুতর। এখন পর্যন্ত আমাদের বাহিনী এই এলাকা এবং প্রাইভেট সেক্টরের কিছু শিল্প ও বাণিজ্য ভবন, কারখানা নিয়ন্ত্রণে রেখেছে।

কৌশলী জবাব জেলেনস্কির

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলছেন যে, বাখমুত শহর সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। তবে সেখানকার রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে রাশিয়া জয়ী হয়েছে, এমনটিও স্বীকার করছেন না তিনি। জাপানের হিরোশিমায় জি সেভেন বৈঠকে জেলেনস্কিকে বাখমুতের যুদ্ধ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘আপনাকে বুঝতে হবে যে, সেখানে কিছুই আর নেই। তারা সব কিছু ধ্বংস করে দিয়েছে। আমাদের প্রতিরক্ষার দায়িত্বে থাকা কর্মীরা কঠোর যুদ্ধ করেছে। সাহসিকতার জন্য তাদের প্রশংসা প্রাপ্য। একই সঙ্গে জেলেনস্কি বলেন, শহরটি তাদের হূদয়ে থাকবে। এটা ট্র্যাজেডি।’ জেলেনস্কির এমন জবাবের পর রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, বাখমুত পতনের বিষয়টি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট নিশ্চিত করেছেন বলে প্রতীয়মান হয়।

ওয়াগনার এমন এক সময় বাখমুত দখলের দাবি করল যখন ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভলোদোমির জেলেনস্কি জাপানে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ শিল্পনির্ভর দেশগুলোর সংগঠন জি সেভেনের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছেন। ইউক্রেন পরিকল্পনা করছে এসব অঞ্চলে পালটা আক্রমণ চালিয়ে দখল হওয়া অঞ্চল পুনরুদ্ধারের। কিন্তু সম্প্রতি জেলেনস্কি বলেন, এজন্য তাদের প্রস্তুত হতে আরো সময় লাগবে। তার ভাষায় বাখমুত হলো ইউক্রেনের দৃঢ়চেতা মানসিকতার ‘একটা দুর্গ’।

জাপানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে বৈঠকেও জেলেনস্কি বাখমুতের পতনের বিষয়টি অস্বীকার করেন। পরে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের বক্তব্যের একটা ব্যাখ্যা দেন তার মুখপাত্র সের্গেই নিকিফোরভ। তিনি বলেন, রুশ বাহিনীর কাছে বাখমুত শহরের পতন হওয়ার বিষয়টি জেলেনস্কি নিশ্চিত করেননি। —বিবিসি

ইত্তেফাক/এএইচপি