পূর্ব সুন্দরবনের নদী-খালে তিন মাস মাছ ধরা ও পর্যটন বন্ধ থাকবে। ১ জুন থেকে ৩১ আগষ্ট পর্যন্ত মাছ ধরা ও পর্যটন নিষিদ্ধ করে নির্দেশনা জারি করেছে বন বিভাগ। মাছ ও বন্যপ্রাণীর প্রজনন বৃদ্ধির জন্য বনবিভাগের এমন সিদ্ধান্ত। বনবিভাগের এ সিদ্ধান্তে বেকার হওয়া জেলেদের প্রণোদনা দেওয়ার জন্য মন্ত্রণালয়ে সাড়ে ৫ হাজার জেলের তালিকা পাঠানো হয়েছে।
সরেজমিনে বনসংলগ্ন সোনাতলা, চালিতাবুনিয়া, বগী, খুড়িয়াখালী ও শরণখোলা গ্রাম ঘুরে সুন্দরবনের ওপর নির্ভরশীল জেলে পরিবারে হতাশা ও উদ্বেগ দেখা গেছে। খুড়িয়াখালী গ্রামের জেলে শহিদুল, খালেক হাওলাদার, শরণখোলা গ্রামের জেলে আ. মজিদ ও খলিল হাওলাদারসহ অনেকে বলেন, ‘মহাজনের কাছ থেকে দাদন নিয়ে সারা বছর সুন্দরবনের নদী খালে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করি। এখন বনবিভাগ মাছ ধরা বন্ধ করায় আমাদের তিন মাস বেকার হয়ে থাকতে হবে। পরিবার পরিজন নিয়ে কিভাবে দিন কাটাব, সেই দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে।’
শরণখোলা বাজারের মৎস্য আড়ৎদার জালাল মোল্লা, পান্না আকন ও তুহিন বয়াতী বলেন, ‘সুন্দরবনে তিন মাস মাছ ধরা বন্ধ ঘোষণায় আমরা লাখ লাখ টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছি। সুন্দরবনে প্রায় ২০ হাজার জেলে মাছ ধরে জীবন ধারণ করেন। জেলেদের কাছে একেক জন আড়ৎদারের ১৫/২০ লাখ টাকা করে দাদন দেওয়া রয়েছে।’ মাছ ধরতে না পারলে জেলেরা টাকা কীভাবে পরিশোধ করবে প্রশ্ন করেন আড়ৎদাররা।
অন্যদিকে সুন্দরবন ট্যুর অপারেটর সমিতি খুলনার সাধারণ সম্পাদক নাজমুল আযম ডেভিট বলেন, তিন মাস সুন্দরবনে পর্যটক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার ফলে বেকার হয়ে পড়বে এর সঙ্গে জড়িত সহসশ্রাধিক পরিবার। তিনি বলেন, রিজার্ভ ফরেস্টের বাইরে অনেকগুলো ইকোট্যুরিজম সেন্টার করা হয়েছে। সেগুলোতে পর্যটনের অনুমতি দিলে এসব মানুষ বেকার হতো না।
পূর্ব সুন্দরবন বিভাগ বাগেরহাটের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, মৎস্য সম্পদ ও বণ্যপ্রাণীর প্রজনন বৃদ্ধির লক্ষ্যে তিনমাস সুন্দরবনে মাছধরা ও পর্যটন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের চাহিদা মোতাবেক পূর্ব সুন্দরবন বিভাগ থেকে ৫৬৩০ জেলের তালিকা মৎস্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।