সাটুরিয়ার কালীগঙ্গা সেতুর খুঁটির পাশ থেকে রাতের আঁধারে মাটি চুরি করে বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে তিল্লী ইউপি চেয়ারম্যান মো. শরীফুল ইসলাম ধলার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় কয়েক দিন আগে মাটি কাটার যন্ত্র ও মাটিবোঝাই দুটি গাড়ি জব্দ করেছে থানা পুলিশ।
জানা গেছে, প্রায় ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে এ সেতু নির্মাণ করা হয় কয়েক বছর আগে। সেতুর নিচ থেকে দীর্ঘদিন ধরে মাটি ও বালু কেটে বিক্রি করছেন মো. শরীফুল ইসলাম ধলাসহ তার দলবল। ফলে হুমকির মুখে স্থাপনাটি। কেউ মাটি কাটার প্রতিবাদ করলে তার ওপর নেমে আসে নির্যাতন এবং দেখানো হয় মামলা ও পুলিশের ভয়। ফলে কেউ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কথা বলতে সাহস পায় না।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী মো. নাজমুল করিম বলেন, বর্ষা মৌসুমে নদীর স্রোত বেশি হওয়ায় এমনিতেই খুঁটির পাশ থেকে মাটি সরে যায়। তারপর এক্সকাভেটর বা খননযন্ত্র দিয়ে যদি মাটি তোলা হয় তাহলে চরম হুমকির মুখে পড়বে সেতুটি। সরেজমিনে পরিদর্শন করে বালু খেকোদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।
খননযন্ত্রের মালিক মো. আলামিন বলেন, ‘তিন মাস আগে চেয়ারম্যান আমার কাছ থেকে যন্ত্রটি ভাড়া নিয়ে কাজ করছেন। রাস্তা মেরামতের কথা বলে ভাড়া নেন তিনি। কিন্তু সেতুর নিচ থেকে বালু তোলার কাজে যন্ত্রটি ব্যবহার করার বিষয়ে তিনি আমাকে জানাননি।’
মো. শরীফুল ইসলাম ধলা বলেন, ‘উত্তর আয়নাপুর এলাকার দুটি সড়কের বেহাল দশা। মানুষের কষ্ট লাঘবে সড়ক উপযোগী করার জন্য নদী থেকে বালু তুলে ক্ষতিগ্রস্ত সড়কে ফেলা হয়েছে। নতুন সড়ক করার জন্য প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ২ লাখ টাকা। জনস্বার্থে সড়কে বালু ফেলা হয়েছে। চুরি করে বালু বিক্রি করা হয়নি। একটি কুচক্রী মহল আমার নির্বাচনি এলাকার ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য এসব কুৎসা রটাচ্ছে।’
সাটুরিয়া থানার ওসি সুকুমার বিশ্বাস বলেন, ‘রাত ১২টার সময় খবর আসে কালীগঙ্গা সেতুর নিচ থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এ সময় বালু তোলার যন্ত্র ও দুটি মাহেন্দ্র গাড়ি জব্দ করেছি। নদী থেকে বালু তুলছেন ইউপি চেয়ারম্যান শরীফুল ইসলাম ধলা। বালু তোলার অনুমতি আছে বলে দাবি করেছেন চেয়ারম্যান। অনুমতিপত্র নিয়ে তাকে থানায় আসতে বলা হয়েছে।’
এ বিষয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) কর্মকর্তা খায়রুন্নাহার বলেন, ‘রাতের আঁধারে সেতুর নিচ থেকে চুরি করে বালু বিক্রি করছেন ঐ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, স্থানীয়দের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি জেলা প্রশাসককে জানিয়েছি। অভিযোগ প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’