হত্যার অভিযোগে মাদারীপুরে দাফনের দুই মাস পর রোববার (২৮ মে) সকালে ময়নাতদন্তের জন্য কবর থেকে গৃহবধূর লাশ উত্তোলন করা হয়েছে।
মাদারীপুরে যৌতুকের টাকার জন্য গৃহবধু কেয়া মনি ওরফে লিয়া ওই গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ দেয় নিহতের বাবা ছোবাহান কবিরাজ বাদী হয়ে মাদারীপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, মাদারীপুর পৌর এলাকার ছোবাহান কবিরাজের মেয়ে লিয়া মনি ওরফে লিয়ার উপজেলার দুধ খালি ইউনিয়নের এওজ গ্রামের কালাম সরদারের ছেলে মাসুদ সরদারের সঙ্গে প্রায় দু’বছর আগে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন যেতে না যেতেই মাসুদ ও তার পরিবারের লোকজন যৌতুকের টাকার জন্য লিয়ামনিকে নির্যাতন করে আসছে। এ নিয়ে কয়েক দফা পারিবারিকভাবে মিটমাটও হয়। ২০২১ সালে ৩০ মার্চ (বৃহস্পতিবার) বিকেলে পুনরায় যৌতুকের টাকার জন্য চাপ নিহতের স্বামী মাসুদ ও পরিবার। তবে বাপের বাড়ি থেকে টাকা এনে দিতে অস্বীকার করলে মাসুদ ও তার পরিবার মারধর শারীরিক নির্যাতন শুরু করে। একপর্যায়ে লিয়া মৃত্যু হয়। পরে মাসুদ ও তার পরিবার লোকজন মিলে পরিকল্পনা করে গৃহবধূ লিয়ার গলায় ওড়না জড়িয়ে ফাঁস দিয়ে ঘরের সঙ্গে ঝুলিয়ে পালিয়ে যায়। ঘটনাটি আশেপাশের লোকজন বুঝতে পেরে থানায় খবর দিলে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় নিহতের বাবা থানায় হত্যা মামলা করতে চাইলে প্রতিবেদন পাওয়ার আগে মামলা নিতে অসম্মতি জানায় থানা পুলিশ।
পরে নিহতের বাবা বাদী হয়ে মাদারীপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার পরে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেয়ে তাতে সন্তুষ্ট না হয়ে পুনরায় ময়নাতদন্তের জন্য আবেদন করেন মামলার বাদী। সে আবেদনের ভিত্তিতে কোর্টের আদেশে লাশ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়।
নিহতর বাবা ছোবাহান কবিরাজ অভিযোগ, হত্যাকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় ময়নাতদন্তের সঠিক রিপোর্ট পাইনি। তাই ময়নাতদন্তের জন্য পুনরায় কোর্টে আবেদন করেছিলাম। আশা করি এবার সঠিক রিপোর্ট পাব।
মাদারীপুর সদর মডেল থানার ওসি মনোয়ার হোসনে চৌধুরী জানান, গৃহবধূর লিয়ার লাশ উদ্ধার করে হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছিল। তদন্ত রিপোর্ট নিহতের পরিবারের মনমতো না হওয়ায় লাশ উত্তোলনের জন্য আবেদন করে। পুলিশ ও ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে লাশ কবর থেকে উত্তোলন করে ফের তদন্ত করার জন্য পাঠানো হয়েছে।