শুঁয়োপোকা ভাজি
সাইফুল্লাহ মাহমুদ দুলাল
ভাষা বৈচিত্র্যের দেশে
আমাদের মুখের ভাষার মতো আমাদের সন্তানেরাও পুষ্টিহীন,
আমরা কোনোদিন শহরে যাইনি; ইয়াউন্দেও না।
আমরা শুঁয়োপোকার ভাজি খাই, সুস্বাদু খাদ্য
কাঁচা মসলা মিশিয়ে মাংসের মতো খাই,
সোনগুই মিশায়েল এ পোকা কাঁচা খেতেই পছন্দ করে।
মাংসের চেয়ে দামি, মাছের পরিপূরক
এই কালো মানুষের দেশ সেন্ট্রাল আফ্রিকায় প্রোটিনের অভাব,
এমিনারেলের অভাব। খাদ্য সংকট।
বাসন্তীর মতো আমাদের বোনের ছবি তুলে বিবিসি
তবু বোন বাসন্তীদের শান্তি আসেন না
তবু শুঁয়োপোকা দুঃখ কোনোদিন সুখী প্রজাপতি হয় না।
মিশায়েল সোনগুই-এর সাথে
পামগাছের ডালে প্লাস্টিক বক্সে শুঁয়োপোকা চাষ করি,
বাস করি ক্যামেরুনে।
ফেরা
চন্দন চৌধুরী
নিজের কাছ থেকে ছুটি নেয়া মানুষ কখনো ফেরে না আর
ওগো জুঁইফুল, তবুও ফিরেছি দ্যাখো, আমাকে উড়াল শেখাও,
শেখাও উথালপাথাল
আজ আমি বেঁচে থেকে আমাকে অবাক করে দেব
নিজেকে জানিয়ে দেব—
ঝরাপাতারাও ঈশ্বরের কান্না নিয়ে জন্মে
শোনো ভাগ্যদেবতা, হে অদেখা পরম—
আমি ওই চন্দ্রবিন্দু থেকে আগত ঐশ্বর্য, মৃত্যুর প্রথম ভুল
জন্ম জন্মান্তর
মামুন মুস্তাফা
হাওড়া ব্রিজে নেমে গেল সে,
মধুবালার মতো হূদযন্ত্রের ত্রুটি নিয়ে
গঙ্গার জলে ভাসমান গোলচাঁদের তিথি
ব্রিজে ছুটন্ত মানুষের দিশাহীন গন্তব্য
সে-সব নেশাতুর চাহনি গেঁথে নেয় মানুষের ছদ্মবেশ
জীবনের কৃষ্ণগহ্বরে দাঁড়িয়ে অপুষ্ট পঙিক্তর শোকগাথা
গড়ে তুলি। থেকে থেকে গাঢ় হয় নিঃসঙ্গতা!
ভাগ হয়ে যায় ভাগীরথী গঙ্গা পদ্মা
মধুবালার মতো ওই নিঃসঙ্গতা ডুব দেয়
তার নেমে যাবার পর...
স্বেচ্ছামৃত্যুই তো বলা যায় তাকে!
তবু পাঁজরের নিচে ক্ষত নিয়ে বাড়ি ফিরি
একটা অদম্য পাথর নিষ্ঠুরতা হানে জন্ম জন্মান্তরে।
দ্রুতগামী হও, নয়তো দাঁড়াও সরে
জব্বার আল নাঈম
সুরের গোপন শব্দে যদি ঘুম ভেঙে যায়
আস্তাবলে দাঁড়িয়ে থাকে নিঃসঙ্গ ঘোড়া।
আমার পছন্দ সেই ঘোড়া—দ্রুতগামী যে
সকল বাধা পেছনে ফেলে
হাজার বছর আগে...
একা দাঁড়িয়ে থাকে রক্তস্নাত মঞ্চে।
হে আমার গোপন প্রণয়
দ্রুতগামী হও, নয়তো দাঁড়াও সরে
দেখো দেখো—
কোটি কোটি বছরের পুরাতন সূর্য
কতটা তেজস্বী প্রাণ নিয়ে দিব্যি বেঁচে আছে!