নওগাঁয় র্যাব হেফাজতে ভূমি অফিসের কর্মচারী সুলতানা জেসমিনের (৪০) মৃত্যুর ঘটনায় নিহতের ছেলে, ভাই, মামা, বাড়িওয়ালা এবং দু’জন প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের গঠিত উচ্চপর্যায়ের তদন্ত দল। সোমবার (২৯ মে) বিকাল ৩টা থেকে নওগাঁ সার্কিট হাউসে তদন্ত দলের সদস্যরা তাদের সঙ্গে কথা বলেন।
তদন্ত দলের সদস্যদের মধ্যে ছিলেন নওগাঁর সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আবু শামীম আজাদ, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইমতিয়াজুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল করিম, সিভিল সার্জন আবু হেনা মো. রায়হানুজ্জামান ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গাজিউর রহমান।
নিহত সুলতানা জেসমিনের মামা নাজমুল হক বলেন, তদন্ত দলের সদস্যরা গত ২২ মার্চ জেলার মুক্তির মোড় থেকে জেসমিনকে র্যাব সদস্যরা আটকের পর নওগাঁ হাসপাতাল থেকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং দাফন হওয়া পর্যন্ত কখন কী কী ঘটেছে তার বর্ণনা আমাদের কাছ থেকে শুনেছেন।
এছাড়াও বাসা থেকে জেসমিন ও তার বিরুদ্ধে মামলার বাদী রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার অফিসের যুগ্ম সচিব এনামুল হকের মধ্যে বিভিন্ন অর্থ লেনদেনের কাগজপত্র পেয়েছি। সেগুলো তদন্তকারী কর্মকর্তাদের কাছে উপস্থাপন করা হয়েছে। আমার ধারণা এসব কাগজপত্রের জন্যই আমার ভাগ্নিকে উঠিয়ে নেওয়া হয়।
তিনি আরও বলেন, উচ্চ আদালতের নির্দেশে যে তদন্ত দল গঠন করা হয়েছে তাতে আশা করা যায় তারা নিরপেক্ষ তদন্ত করবেন এবং বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেবেন। নিরপেক্ষ তদন্ত হলে ন্যায়বিচার পাব বলে আমরা আশাবাদী।
জেসমিনের বাড়িওয়ালা দেলোয়ার হোসেন দুলাল বলেন, তদন্ত দলের সদস্যরা যা যা জিজ্ঞেসা করেছেন তার জবাব দিয়েছি। জেসমিন আমার বাড়িতে ছয়-সাত বছর ধরে ছিলেন। এই সময়ের মধ্যে কখনো তার মধ্যে অস্বাভাবিক কিছু দেখিনি। অন্য প্রতিবেশীরাও তাকে ভালো মানুষ হিসেবে জানত। নিরপেক্ষ তদন্ত হলে তার প্রতি অন্যায় হয়েছে তা বের হয়ে আসবে বলে আমার বিশ্বাস।
নওগাঁর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল করিম বলেন, আপাতত তদন্তের স্বার্থে কিছু বলা হচ্ছে না। মঙ্গলবার রাজশাহী এবং বুধবার নওগাঁয় আরও তদন্ত করা হবে।
গত ২২ মে হাইকোর্টের এক আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে উচ্চপর্যায়ের একটি কমিটি গঠন করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) মাহমুদুল হোসাইন খানকে প্রধান করে গঠিত কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব, নওগাঁর সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, সিভিল সার্জন, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এবং নওগাঁর পুলিশ সুপারের মনোনীত একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।