শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

মস্কোয় ড্রোন হামলার জন্য ওয়াশিংটনকে দুষলো ক্রেমলিন

আপডেট : ৩১ মে ২০২৩, ১৫:৫৭

রুশ নেতৃত্বের অভিযোগ, ওয়াশিংটনের উৎসাহেই রাশিয়ায় হানলা চালাচ্ছে ইউক্রেন৷ মার্কিন প্রশাসন ও ইউক্রেন এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছে৷ মস্কোয় হামলা নিয়ে এখনো বিভ্রান্তি কাটছে না৷ এক প্রতিবেদনে এমনটি জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে।

দিনের পর দিন ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের উপর ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র বর্ষণ করে চলেছে রাশিয়া৷ বিশেষ করে চলতি মে মাসে হামলার মাত্রা অনেক বেড়ে গেছে৷ রাশিয়ার ভূখণ্ডে বিচ্ছিন্ন ড্রোন হামলার পর এবার খোদ রাজধানী মস্কোর উপর একই সঙ্গে একাধিক ড্রোন হামলা মস্কোর অস্বস্তি বাড়িয়ে দিচ্ছে৷ এখনো পর্যন্ত কেউ সেই হামলার দায় স্বীকার না করলেও রাশিয়া ইউক্রেনকেই এর জন্য দায়ী করছে৷ রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন এটিকে ‘সন্ত্রাসী হামলা' হিসেবে বর্ণনা করেছেন৷ সেইসঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধেও গর্জে উঠছে সে দেশ৷ মস্কোর ধারণা, মার্কিন প্রশাসনই ইউক্রেনকে রাশিয়ার ভূখণ্ডে হামলা চালাতে উৎসাহ দিচ্ছে৷

মার্কিন প্রশাসন অবশ্য এমন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, সে দেশ রাশিয়ার মধ্যে হামলাকে সমর্থন করে না৷ স্পষ্ট ধারণা পেতে ওয়াশিংটন মস্কোয় ড্রোন হামলার ঘটনা সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করছে বলে জানিয়েছে৷ ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কির উপদেষ্টা মিখাইলো পোদোলইয়াক মস্কোর উপর হামলার জন্য সরাসরি দায় স্বীকার না করলেও এমন ঘটনা ‘উপভোগ' করছেন বলে জানিয়েছেন৷ ভবিষ্যতে আরও এমন হামলার সম্ভাবনা রয়েছে বলে তিনি মনে করছেন৷ ব্রিটেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লেভারলি বলেন, আত্মরক্ষার তাগিদে রাশিয়ার ভূখণ্ডের উপর হামলার অধিকার ইউক্রেনের অবশ্যই রয়েছে৷ তবে তিনি সরাসরি মস্কোর উপর হামলা সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করেননি৷

মস্কোয় ড্রোন হামলার ঘটনা সম্পর্কে বিভ্রান্তি এখনো কাটছে না৷ রুশ কর্তৃপক্ষ আটটি ড্রোনের উল্লেখ করলেও বাস্তবে আরও অনেক বেশি ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছে বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ছবি ও ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে৷ রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সূত্র অনুযায়ী তিনটি ড্রোন বিকল হয়ে পড়ে এবং পাঁচটি ধ্বংস করা হয়েছে৷ কিন্তু প্রকৃত সংখ্যা যতই হোক না কেন, সেই ড্রোনের উৎস সম্পর্কে এখনো প্রকাশ্যে কিছু জানানো হয় নি৷ খোদ রুশ ভূখণ্ড থেকে মস্কোয় ড্রোন হামলা চালানো হয়ে থাকলে রাশিয়ার নিরাপত্তার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলির দক্ষতা ও ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে বাধ্য৷ ইউক্রেন থেকে এত দূরে ড্রোন পাঠানো হয়ে থাকলেও সামরিক বাহিনীর সতর্কতা সংশয়ের মুখে পড়বে৷ ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, এমন ঘটনা ইউক্রেনে রাশিয়ার ‘বিশেষ সামরিক অভিযান'-এর প্রয়োজনীয়তা আরও স্পষ্ট করে দিচ্ছে৷

এদিকে কিয়েভের উপর এই নিয়ে তিন রাত ধরে জোরালো হামলা চালিয়েছে রাশিয়া৷ মঙ্গলবার রাতে ২০টি ড্রোন ধ্বংস করা হয়েছে বলে শহরের সামরিক প্রশাসন জানিয়েছে৷ ড্রোনের টুকরো ভেঙে পড়ায় একটি ভবনের ক্ষতি হয়েছে৷ সেই ঘটনায় এক ব্যক্তি নিহত ও একজন আহত হয়েছে৷ ড্রোনের জ্বলন্ত টুকরোর আঘাতে সেই আবাসনের ব্লকে আগুন ধরে গেছে৷ অন্যান্য কিছু এলাকায়ও ড্রোনের ভাঙা টুকরোর কারণে ঘরবাড়ি ও গাড়ির ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে৷

ইত্তেফাক/এএইচপি