সাগর পরিমাণ রক্ত, মহাসাগর পরিমাণ অশ্রু আর অগণিত জীবন ত্যাগের মিশ্রণ যে মুক্তিযুদ্ধ, তার অংশীদার তো আপামর জনসাধারণ। আর সেটা মনে করিয়ে দেওয়ার আয়োজন হল ‘মুক্তিযুদ্ধ ব্যক্তিস্বার্থের হাতিয়ার ছিল না’ বইটি। অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা একেএম শামসুদ্দিনের সুশৃংখল সৈনিক জীবন তার ভেতরে দেশ প্রেমের যে বীজ বপন করেছিল এই বইটি তারই ফল। যেখানে নাম ভূমিকার পিছনে জড়ো হয়েছে ২৪টির মতো প্রবন্ধ।
সোমবার (২৯ মে) সন্ধ্যায় ম্যানগ্রোভ সভাঘর সাতক্ষীরায় ছড়ার ডাকের আয়োজনে ‘মুক্তিযুদ্ধ ব্যক্তিস্বার্থের হাতিয়ার ছিল না’ বইটি নিয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বইয়ের প্রতিটি প্রবন্ধ মুক্তিযুদ্ধের অনেক প্রশ্নের উত্তর জানিয়ে যাবে, কারা কোনো উপায়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিল, আর কারা মুক্তিযুদ্ধকে করেছে নিজেদের উপরে ওঠার হাতিয়ার তার ধারণা পাঠকের জন্মাবে। এই বই পাঠাককে নিয়ে যাবে রণাঙ্গন থেকে রণাঙ্গনে, তাদের ভেতরে জাগিয়ে তুলবে মুক্তিযুদ্ধের সত্যিকারের চেতনা। প্রত্যেককে করে তুলবে গৌরবের যে মুক্তিযুদ্ধ তার পাহারাদার।
অনুষ্ঠানে কবি ও প্রাবন্ধিক শুভ্র আহমেদ বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যেন গর্বিত হতে পারে সে জন্য এই বইটি অনেক অবদান রাখবে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন উদীচী সভাপতি শেখ সিদ্দিকুর রহমান, ম্যানগ্রোভ প্রকাশক কবি স. ম. তুহিন, গল্পকার বাবলু ভঞ্জ চৌধুরী, ছড়াকার আহমেদ সাব্বির, সিকান্দার একাডেমির সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মুন্না ও ছড়ার ডাক পত্রিকার সম্পাদক নাজমুল হাসান।
বইটি পড়লেই বোঝা যাবে মস্তিষ্কের ডাক লেখকের কাছে উপেক্ষিত, সে যেন এখনও হৃদয়ের নিয়ন্ত্রণে। এমন মানুষের কাছে দেশের স্বার্থের বিপরীতে যে কোনো বিনিময় মূল্যকে ছোট মনে হয়। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে আমরা কেমন মুক্তিযুদ্ধ রেখে যাব! হয়তো এই ভাবনার কারণেই তার লেখায় এক ধরনের বেদনাবোধ জেগে থাকে।
পরিশেষে বলা যায়, ৫০ বছরের অধিক সময় ধরে দেশের ক্যানভাসে মুক্তিযুদ্ধের যে ভুল ছবি ফুটে উঠেছে তা লেখককে পীড়িত করে বলেই সচল হয়েছে তার কলম। আর পাঠক হিসেবে সেটাই আমাদের পাওয়া।