প্রথমবারের মত শিরোপা জয়ের লক্ষ্য নিয়ে আজ আইসিসি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ দ্বিতীয় আসরের ফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছে ভারত ও অস্ট্রেলিয়া। ইংল্যান্ডের ওভালের ফাইনাল ম্যাচের চ্যাম্পিয়ন দল পাবে ১.৬ মিলিয়ন ডলার। রানার্স-আপ দল পাবে ৮ লাখ ডলার।
সাদা পোশাকের শ্রেষ্ঠত্বের এই ফাইনাল শুধুই দুই দলের লড়াই নয়, এখানে রয়েছে ব্যক্তিগত দ্বৈরথও। এ যেন ফাইনালের মধ্যেও আরেক ফাইনাল। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে সেরা তিন ব্যক্তিগত লড়াইয়ের দিকে চোখ রেখেছে এএফপি স্পোর্টস।
স্টিভ স্মিথ-চেতেশ্বর পূজারা
ফাইনালের আগে কাউন্টিতে খেলে ইংলিশ কন্ডিশনের সাথে খাপ খাইয়ে নিয়েছেন অস্ট্রেলিয়া দলে বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার। এরমধ্যে সাসেক্সে ভারতের চেতেশ্বর পূজারার অধীনে খেলেছেন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক ও দলের সেরা ব্যাটার স্টিভেন স্মিথ।
সাসেক্সের হয়ে ব্যাট হাতে ছন্দে ছিলেন ৩৫ বছল বয়সী পূজারা। এপ্রিল এবং মে মাসে ৬ ইনিংসে তিনটি সেঞ্চুরি করেন তিনি। কিন্তু ব্যাট হাতে সুবিধা করতে পারেননি স্মিথ। ইনিংসে তার সর্বোচ্চ রান ছিল ৮৯। তবে ওভালের ভেন্যুতে দারুন রেকর্ড আছে স্মিথের। তিন ম্যাচে দুই সেঞ্চুরিতে প্রায় ৯৮ গড়ে ৩৯১ রান করেছেন স্মিথ।
ওভালে ভেন্যু নিয়ে ৩৪ বছর বয়সী স্মিথ জানান, ‘ক্রিকেট খেলার জন্য ওভাল একটি আদর্শ জায়গা। দ্রুত গতির আউটফিল্ড, মাঠের আকারও দারুণ। একটি সুন্দর মাঠে আপনি ব্যাট করতে নামবেন এবং ইংলিশ কন্ডিশনে উপযুক্ত গতি ও বাউন্স আছে।’
স্মিথের লড়াইটা হবে পূজারার সঙ্গে। এক-ফরম্যাটের খেলোয়াড় হিসেবে পরিচিত সে। টেস্ট দলে তার ধৈর্য্যশীল ব্যাটিংয়ে রান সংগ্রহ অস্ট্রেলিয়ার শক্তিশালী পেস আক্রমণের বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে।
ভারতের কোচ রাহুল দ্রাবিড় বলেছেন, ‘অবশ্যই ব্যাটিং নিয়ে আমরা পূজারার সঙ্গে কথা বলেছি। কিন্তু অধিনায়ক হিসেবে কৌশল ও পরিকল্পনায় সাসেক্সেকে দারুণভাবে নেতৃত্বে দিয়েছেন তিনি।’
প্যাট কামিন্স-মোহাম্মদ সামি
ইনজুরির কারণে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে খেলতে পারছেন না দুই পেসার অস্ট্রেলিয়ার জশ হ্যাজেলউড ও ভারতের জসপ্রিত বুমরাহ। তাদের জায়গায় অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক প্যাট কামিন্স এবং ভারতের মোহম্মদ সামিকে বাড়তি দায়িত্ব পালন করতে হবে।
২০১৯ সালে ইংল্যান্ডের মাটিতে ড্র হওয়া অ্যাশেজ সিরিজে পাঁচ ম্যাচে ১৯.৬২ গড়ে ২৯ উইকেট শিকার করেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার পেস আক্রমণকে নেতৃত্বে দেওয়া ৩০ বছর বয়সী কামিন্স।
কামিন্সের মত দুর্দান্ত বোলিং পরিসংখ্যান নেই সামির। তবে সামির অভিজ্ঞতা মাঠে ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মাকে বাড়তি সহায়তা করে সবসময়ই।
নাথান লায়ন-রবিচন্দ্রন অশ্বিন
ইংল্যান্ডের মাটিতে স্পিন দিয়ে জয় কি সম্ভব? এই প্রশ্নের উত্তর খুজতে হলে দুই দলেরই তাকিয়ে থাকতে হবে নিজেদের সবচেয়ে বড় স্পিন যন্ত্র লায়ন আর অশ্বিনের দিকেই।
এক দশকেরও বেশি সময় ধরে অস্ট্রেলিয়ার স্পেশালিস্ট স্পিনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন নাথান লায়ন। ৩১ গড়ে ৪৮২টি টেস্ট উইকেট শিকার করেছেন তিনি।
ভারতের স্পিন বিভাগে অন্যতম ভরসার নাম রবিচন্দ্রন অশ্বিন। ৫শ টেস্ট উইকেট শিকারের কাছাকাছি আছেন তিনি। ৯২ ম্যাচে ২৩.৯৩ গড়ে ৪৭৪ উইকেট রয়েছে তার ঝুলিতে। কখনও কখনও ইংলিশ কন্ডিশনে অশ্বিনকে খেলানোর পরিকল্পনায় রাখে না ভারত।
কিন্তু শুষ্ক উইকেট থেকে বাড়তি টার্ন পাওয়া যায়। এজন্য বাঁহাতি স্পিনার রবীন্দ্র জাদেজার সঙ্গে দলে রাখা হয়েছে আইসিসি টেস্ট বোলিং র্যাংকিংয়ের এক নম্বর বোলার অশ্বিনকে।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অশ্বিনের টেস্ট রেকর্ডও বেশ ঈর্ষনীয়। অসিদের বিপক্ষে হাত ঘুরিয়ে ২৯ গড়ে ১১৪ উইকেট নিয়েছেন তিনি। এ বছরের শুরুতে ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জয় পাওয়া সিরিজে জাদেজার সঙ্গে যৌথভাবে সেরা খেলোয়াড় হয়েছিলেন অশ্বিন।