সমুদ্রের তাৎপর্য এবং সমুদ্র সম্পদ সংরক্ষণ ও সংরক্ষণের গুরুত্ব সম্পর্কে মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য প্রতি বছর ৮ জুন বিশ্ব সমুদ্র দিবস পালিত হয়। বৃহস্পতিবার (৮ জুন) দিবসটি উপলক্ষে সামুদ্রিক খাতের জন্য একটি পৃথক মন্ত্রণালয় স্থাপনের দাবি জানায় সেভ আওয়ার সি (এসওএস)-এর মহাসচিব মুহাম্মদ আনোয়ারুল হক।
এ বছর দিবসটি উপলক্ষে কিছু সংস্থা বাংলাদেশের সমুদ্র সেক্টরের উন্নয়ন এবং নীল অর্থনীতির বিকাশের জন্য সমুদ্র বিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠনের প্রস্তাব করা হয়। একই সঙ্গে বঙ্গোপসাগর জুড়ে সামুদ্রিক সম্পদ শোষণ ও অনুসন্ধানের জন্য বাংলাদেশের একচেটিয়া অধিকার প্রয়োগ করা উচিত বলে উল্লেখ করা হয়।
সরকার এখন সামুদ্রিক স্থানের পাশাপাশি উপসাগর থেকে অর্থনৈতিক সুবিধা পেতে নীল অর্থনীতির বিকাশের ওপর জোর দিচ্ছে। বাংলাদেশ এখনো সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদের টেকসই উন্নয়ন থেকে শুরু করে সমুদ্র ও উপকূলীয় পর্যটনের মতো নীল অর্থনীতির পূর্ণ সম্ভাবনা অর্জন করতে পারেনি।
অন্যদিকে, নীল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়ানো এবং সামুদ্রিক ও উপকূলীয় পরিবেশ রক্ষা করাও সামুদ্রিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য অপরিহার্য। এই কারণে, সমুদ্র শাসন এখন বিশ্ব কূটনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে।
এই পটভূমিতে সমুদ্রবিদ্যা এবং পরিবেশের বিশেষজ্ঞরা সামুদ্রিক সংরক্ষণবিদ এবং নীল অর্থনীতির গবেষকরা একটি সমন্বিত উপকূলীয় ও সামুদ্রিক কৌশল প্রণয়নের জন্য নীতি নির্দেশিকাগুলোকে মোকাবিলা করতে ও উপকূলের জন্য কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় কার্যাবলীসহ সমুদ্র বিষয়ক একটি আলাদা মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠার পরামর্শ দিয়েছেন।
সেভ আওয়ার সি (এসওএস) মহাসচিব মুহাম্মদ আনোয়ারুল হক বলেন, ‘বাংলাদেশের সামুদ্রিক সম্পদের টেকসই ব্যবহার প্রয়োজন। যাইহোক, আমরা এখনও জানি না আমাদের কী ধরনের সামুদ্রিক সম্পদ রয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে আমরা সামুদ্রিক খাতের জন্য একটি পৃথক নিবেদিত মন্ত্রণালয় স্থাপনের দাবি জানাই।’
এসওএস-এর মুহাম্মদ আনোয়ারুল হক বলেন, বাংলাদেশ নীল অর্থনীতির ক্ষেত্রে দারুণ সম্ভাবনাময় একটি দেশ। নৌ-বাণিজ্য, মাছ ধরা, মাছ ধরার শিল্প, খনিজ উত্তোলন, হাইড্রোকার্বন শোষণ, লবণ উৎপাদন, পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি উৎপাদন এবং সামুদ্রিক ও উপকূলীয় পর্যটনসহ সামুদ্রিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডগুলো সামুদ্রিক স্বার্থের মূল উপাদান। সুতরাং উপাদানগুলো পরিচালনা করার জন্য একটি বিস্তর সমুদ্র শাসন পদ্ধতির প্রয়োজন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ডক্টর মোহাম্মদ মুসলেম উদ্দিন মুন্না সামুদ্রিক বিষয়ে সচেতনতার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং বিশ্ব মহাসাগর দিবস এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
‘জোয়ার পরিবর্তনে স্পন্দন হারাচ্ছে সমুদ্র’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে সারা বিশ্বের মতো দেশেও বৃহস্পতিবার বিশ্ব মহাসাগর দিবস-২০২৩ পালিত হয়েছে।