বুধবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৩, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

প্রথমবারের মতো ইউরোপ সেরার মুকুট জিতলো ম্যানসিটি

আপডেট : ১১ জুন ২০২৩, ১৫:৩০

চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালটা ঠিক যেন ফাইনালের মতো হলো না। ম্যাড়ম্যাড়ে এক প্রথমার্ধে গোলশূন্য থাকা খেলা দ্বিতীয়ার্ধেও দর্শকদের চোখে ঘুমই এনে দিচ্ছিলো বলা যায়। অবশেষে ম্যাচের ৬৮ মিনিটে স্প্যানিশ মিডফিল্ডার রদ্রির দুর্দান্ত শটে ইন্টার মিলানের জালে বল জড়িয়ে উল্লাসে মাতে ম্যানচেস্টার সিটি। আর ঐ এক গোলেই নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবার চ্যাম্পিয়নস লিগের শিরোপা জিতলো ম্যানসিটি। 

ইস্তাম্বুলের আতাতুর্ক অলিম্পিক স্টেডিয়ামে শনিবার ( ১০ জুন) দিবাগত রাতে চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে দুই দলের কেউই নিজেদের স্বভাবসুলভ খেলাটা খেলতে পারেনি। দলীয় শক্তিমত্তায় সিটিজেনরা এগিয়ে থাকলেও প্রথমার্ধে মাঠের খেলায় ইন্টারই এগিয়ে ছিলো কিছুটা। এরই সঙ্গে কেভিন ডি ব্রুইনার চোট পেয়ে মাঠ ছাড়াতে সিটির খেলা যেন আরও দুর্বল হয়ে যায়।

প্রথমার্ধের ধীরগতির খেলা ফেলে দ্বিতীয়ার্ধে  নিজেদের অনেকটা গুছিয়ে নেয় দুই দল। ৬৮ মিনিটে সিটিজেনদের হয়ে গোল করে ম্যাচ অনেকটাই নিজেদের হাতে নিয়ে নেয় রদ্রি। আর এই গোলেই রচিত হয় ইতিহাস। নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ইউরোপ সেরার মুকুট জয়ের পাশাপাশি গড়ে ট্রেবল জয়।

নিজেদের প্রথম চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপা জয়ের সঙ্গেই সিটি ঘরে তোলে নিজেদের প্রথম ইউরোপীয়ান ট্রেবল। ইউরোপের ইতিহাসে ১০ম এবং ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় ক্লাব হিসেবে ট্রেবল জয়ের এই কীর্তি গড়ে তারা। ট্রেবল জেতা ওপর ইংলশ ক্লাবটি হচ্ছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। 

আতাতুর্ক স্টেডিয়ামে শিরোপার লড়াইয়ের ম্যাচটি দুই দলের খেলার শুরুটা ছিলো বেশ ধীরস্থিরভাবে। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে আক্রমণের ধার বাড়াতে চেয়েছে পেপ গার্দিওলার শিষ্যরা। তবে সেগুলো খুব বেশি ফলপ্রসূ ছিলো না। 

ম্যাচের পাঁচ মিনিটের মাথাতেই এগিয়ে যেতে পারতো সিটিজেনরা। তবে ডি বক্সে ঢুঁকে বার্নার্দো সিলভার নেওয়া শটটি টার্গেটে ছিলো। 

ম্যাচের ২৫ মিনিটে নিকোলা বারেল্লার দূরপাল্লার শটে অল্পের জন্য এগিয়ে যাওয়া হয়নি ইন্টার মিলানের। সিটি গোলরক্ষক এডারসন প্রস্তুত না থাকলেও বল চলে যায় পোস্টের সামান্য বাইরে দিয়ে। 

৩০ মিনিটে চোট পেয়ে মাঠেই পড়ে যান সিটির মাঝমাঠের প্রাণভোমরা কেভিন ডি ব্রুইনা। চিকিৎসা নিয়ে মাঠে ফিরলেও মাত্র মিনিট পাঁচেকের বেশি খেলতে পারেননি। ৩৫ মিনিটে ডি ব্রুইনাকে তুলে নিয়ে ফিল ফোডেনকে মাঠে নামান সিটি বস গার্দিওলা। 

গোলশূন্য ভাবেই প্রথমার্ধ শেষ করে বিরতিতে যায় দুই দল। দ্বিতীয়ার্ধে দুই দলই মাঠে নামে নিজেদের খেলায় বদল এনে। আক্রণের ধার বাড়ায় শিরোপা জিততে মুখিয়ে থাকে দুই দলই।

ম্যাচের ৫৮ মিনিটে এয়াডারসনকে একা পেয়েও সিটির জালে বল জড়াতে পারেননি ইন্টারের স্ট্রাইকার লাউতারো মার্টিনেজ। আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণের খেলায় ম্যাচের ৬৮ মিনিটে দল্গত এক আক্রমণ থেকে নিজেদের একমাত্র গোলটি পেয়ে যায় ম্যানসিটি।  রদ্রির জোরালো শট আটকানোর মতো সামর্থ্যই যেন ছিলো না ইন্টার গোলরক্ষক আন্দ্রে ওনানার। 

ইন্টারের জালে বল জড়িয়ে যেন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে গার্দিওলা বাহিনী। তবে পরের মিনিটেই শঢ হয়ে যেতে পারতো তাদের  গোল। পাল্টা আক্রম্ন থেকে স্টির বক্সে ঢুঁকে পড়ে ইন্টার। ডামফ্রির ক্রসে দুর্দান্ত এক হেড করেছিলেন ডিমারকো। তবে এডারসনকে পরাস্ত করেও সেই হেড আটকে যায় গোলপোস্টে লেগে। ফিরতি বলেই আবারও হেড নিয়ে রোমেলু লুকাকুকে বো, দিয়েছিলেন ডিমারকো, তবে সেই বলও জালে জড়াতে ব্যর্থ হন বেলজিয়ান এই স্ট্রাইকার। 

পরের সময়টুকু দুই দলই গোলের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করলেও জালের দেখা পায়নি কোনো দলই। ১-০ গোলের জয় নিয়েই নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়নস লিগের মুকুট মাথায় তোলে ম্যানসিটি। 

ইত্তেফাক/এসএস

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন